185451

তিনিই ‘বস’, বুঝিয়ে দিলেন জিৎ

‘বস ২’ তে আবারও প্রমাণ করতে পেরেছেন জিৎ যে, তিনি কোনও ভানভনিতার মধ্যে নেই। দর্শক নারায়ণকে স্রেফ হাসি মজায় মজিয়ে দিতে চান। না রইলো বাস্তব জীবন, না রইলো নীতিবাক্য শোনানোর দায়। ‘বস’-এর দায়িত্ব তো শুধু দর্শককে আনন্দ দেওয়া। জিৎ গত ১৫ বছর ধরে সেই কাজটাই নিজস্ব স্টাইলে করে আসছেন। খুব একটা ব্যতিক্রম ঘটেনি। এবারও ঘটল না। ‘বস ২’-এর নায়ক আগের ছবির খেই ধরেই সূর্য। সে মেঘের আড়ালেও থাকতে পারে, আবার আগুনের মতো জ্বলতেও পারে। যুক্তিবুদ্ধির কোনও ধার ধারে না সে। জানে শুধু গতি। গাড়ি চালিয়েই হোক, কিংবা বাইক সওয়ারি হয়ে। ‘বস’ জিৎ অ্যাকশনের ঝাঁজে এবার অ্যালান আমিনের হাত ধরে দর্শকের মুখ থেকে উরিব্বাস, আরে ব্বাবা এবং হাততালি দুটোই প্রতি মিনিটে কুড়িয়ে নিয়েছেন। পুরো ছবির প্রায় প্রতিটি ফ্রেমেই সূর্য উপস্থিত, ঠিক পৃথিবীর মতোই।

ছবির পটভূমি মুম্বই শহর। প্রধানমন্ত্রী গোপীনাথ শিবালকর মারাঠি, মন্ত্রীপুত্র বিদ্যূৎ শিবালকর, পুলিশ কমিশনার বিনায়ক, সূর্য নিজে বাঙালি না মারাঠি জানা গেল না। তবে সব্বাই ঝরঝরে বাংলায় সারাক্ষণ কথা বলে গেলেন। একটিও মারাঠি শব্দ কেউ উচ্চারণ করলেন না। এমনকী, হাতে ইংরাজি-বাংলায় লেখা ফেস্টুনই চোখে পড়ল, মারাঠি নয়। কাহিনি নিয়ে কিছু বলতে যাওয়া অপরাধই হবে। কারণ, জিৎ নিজের ভাবনায় ব্যাঙ্ক তছরুপ ঘটনায় মন্ত্রী, মন্ত্রীপুত্র, প্রতিবেশী দেশের এক ঠগ ব্যবসায়ীকে যেভাবে জড়িয়ে দিয়েছেন সেখানে অর্থনীতির কতটুকু সম্পর্ক আছে তার জট দর্শকও খুলতে পারবে না। শুধু এটুকুই বলা যায়, মাত্র দু’দিনে একটি কোম্পানি তৈরি করে আম পাবলিকের কাছ থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়া যেমন সহজে ‘বস’ করতে পারল, ঠিক একইভাবে তিন ঠগিকে মাত্র ৫ দিনে নিকেশ করে সেই টাকা ফেরত আনল ‘বস’। কীভাবে? গায়ের জোর, পায়ের জোর, হেলিকপ্টারের জোর আর দর্শকের ধৈর্যের জোর।

জিৎ যখন ছবির প্রযোজক এবং বস, পরিচালক বাবা যাদবের আর কী করার থাকতে পারে? শুধু ‘বস’-এর হুকুম তামিল করা ছাড়া। হ্যাঁ, তিনি সেই হুকুম বাধ্য ছাত্রর মতোই তামিল করেছেন। ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত, কৌশিক সেন কেন যে এই বসের পাল্লায় পড়লেন বোঝা গেল না! চিত্রনাট্যে তাঁদের তো অবস্থা ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি। অবশ্য কেঁদে বাঁচেননি, মার খেয়ে বাঁচতে হয়েছে। আর দুই নায়িকা, শুভশ্রী ও বাংলাদেশের নুসরত ফারিয়া ‘বস’-এর টেবিলে ফুলদানির মতো। জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সুরের ভাঁড়ারে এবার টান পড়েছে। একটা গানও হল থেকে বেরিয়ে মনে নেই। তবুও দর্শকদের সব মশলাই দিয়েছেন জিৎ। তাঁর ফ্যান ফলোয়িং তো আছেই। সেই সঙ্গে দেবের ‘চ্যাম্প’-এর সঙ্গে টক্কর। বক্স অফিসে ছবি উতরে যাবে সন্দেহ নেই। কিন্তু ছবির গল্প দর্শকদের মনে টিকবে কি না তা আর কয়েকদিন গেলেই বোঝা যাবে।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.