185355

চীনা কন্যার স্বপ্ন ভঙ্গের কাহিনি ‘দ্য রিসেপশনিস্ট’

নূসরাত জাহান: ২০০৯ সালে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে কাছে চীনা নারী আন্না আত্মহত্যা করেন। যে উন্নত জীবনের আশায় লন্ডনে পাড়ি জমিয়েছিলেন। পরে তার বন্ধুরা জানতে পারেন লন্ডনে যাওয়ার পর আন্নার স্বপ্ন ভঙ্গ হয়। সেখানে একটি অবৈধ ম্যাসাজ পার্লারে তিনি যৌন কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। আন্নার মৃত্যুর পর তার এক বন্ধু জেনি লু তার জীবন নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেন। তাইওয়ানি আর্ট স্কুল থেকে ডিগ্রি নেওয়া লু আন্নার জীবনের অনেক গোপন তথ্য জানতে পারেন। বন্ধুর জীবনের অজানা ও কষ্টের কাহিনির ওপর নির্ভর করে লু নির্মাণ করেন ‘দ্য রিসেপশনিস্ট’। শুক্রবার সিনেমাটি তাইওয়ানে মুক্তি পেয়েছে। আগামী সপ্তাহে এডিনবার্গ ফিল্ম ফেস্টিবলে সিনেমাটি দেখানো হবে।

পরিচালক লু বলেন, ‘চায়না টাউনে আন্নার সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল। তখন তাকে স্বাভাবিকই দেখাচ্ছিল। চীনের একটি ছোট্ট গ্রামের আন্না উন্নত জীবনের আশায় লন্ডনে যায়। সেখানে যাওয়ার পর তার মোহ ভঙ্গ হতে বেশি সময় লাগেনি। আন্না দ্বৈত জীবন যাপন করতো, কিন্তু কেউ জানতো না। বিষয়টি জানার পর আমি খুবই দুঃখ পেয়েছিলাম। বিষয়টি আন্না কাউকে কখনও বলেনি। ’

আন্না লন্ডনে যে পার্লারে কাজ করতো এক বন্ধু মাধ্যমে লু সেখানেকার একটি মেয়ের সঙ্গে যোগোযোগ করেন। তিনি জানতে পারেন ওই পার্লারে চীন, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন ও থাইল্যান্ড থেকে আসা অভিবাসীরা কাজ করতো।

লু বলেন, ‘আন্নাও ভুয়া বিয়ের কাগজ-পত্র দেখিয়ে ব্রিটেনে যায়। ভুয়া বিয়ের সনদ তৈরি করতে আন্নার পরিবার অনেক টাকা খরছ করেছিল। লন্ডনে যাওয়ার পর আন্না কঠোর পরিশ্রম করতো। যাতে খুব দ্রুত সে পরিবারের ধার শোধ করতে পারে এবং তার ভাইকে আর্থিক সহায়তা করতে পারে। ’

দ্য রিসেপশনিস্ট সিনেমাটি নির্মাণ করা হয়েছে, লন্ডনের ম্যাসাজ পার্লারের কর্মী ও ক্লায়েন্টদের নিয়ে। এখানে দেখানে হয়েছে তাইওয়ানের এক নারী এমন একটি পার্লারে রিসেপশনিস্ট হিসেবে কাজ করে। এসব নারীদের জীবন, তাদের কিভাবে পণ্য কার হয়েছে, তাদের নির্যাতনের ঘটনা দেখানো হয়েছে। এছাড়া কিভাবে গ্যাংস্টার এসব নারীদের রক্ষার নামে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নেয়। এবং টাকা দিতে না পারলে তারা মেয়েদের মারধর ও ধর্ষণ করে। তারা জানে এসব মেয়েরা কখনই পুলিশের কাছে যাবে না।

লু বলেন, আন্নার চরিত্রে অভিনয় করা শিল্পী প্রথমে চিত্রনাট্য পড়ে ঘটনাটি বিশ্বাস করেননি। তাই তার সঙ্গে আমি আন্নার এক সহকর্মীর কথা বলার ব্যবস্থা করি। এমন একটি কাহিনির ওপর সিনেমা তৈরি করতে পেরে খুশি লু। তিনি বলেন, এ ঘটনাগুলো মানুষের জানার প্রয়োজন আছে।

সূত্র: বিবিসি।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.