183449

ভোক্তার অধিকার নিতে গিয়ে তোপের মুখে বাদী

অনির্বাণ বড়ুয়া: ভোক্তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কোম্পানিকে জরিমানা করার কারণে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। তবে আজ সোস্যাল মিডিয়ায় দেখা গেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে একটি হোটেলের বিরুদ্ধে পানীয়র দাম বেশি রাখার অভিযোগ করায় অভিযোগকারীকে নানান ধরনের হুমকি ধমকি দিচ্ছে অভিযুক্ত পক্ষ। সোস্যাল মিডিয়া প্রশ্ন উঠেছে, অভিযোগকারীর নাম ও ঠিকানা কীভাবে অভিযুক্ত জানলেন?

অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট সুশান্ত দাশ গুপ্ত তার ফেসবুকে লেখেন, “আমাদের এক ভাই কিছুদিন আগে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন কেন্দ্রে অভিযোগ করেছিল একটি আগারগাঁও তালতলা বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত একটি হোটেলের বিরুদ্ধে পানীয়ের দাম বেশি রাখার কারণে। আমরা যা জানি অভিযোগ করার পর বাদী বিবাদীকে চিঠি দিয়ে শুনানিতে ডাকা হয়। সেখানে বাদী কে সেটা আগে থেকে হোটেল মালিকের জানার কথা নয় বিশেষ করে তার বাসার ঠিকানা। যাই হউক হোটেল মালিক যে করেই হউক বাদীর ঠিকানা সংগ্রহ করেছেন এবং তিনি একের একের পর এক হুমকি দিয়ে বাদীকে নিষেধ করেছেন যেন বাদী শুনানীতে না যায়। এমনকি তিনি বাদীর বাসায় বহিরাগত মাস্তান পাঠিয়ে বাদীর চাচা চাচীকে পর্যন্ত শাসিয়েছেন। যদিও শুনানিতে অংশ গ্রহন করে তাহলে তাদের এলাকা ছাড়া এবং বাদীর হাত পা পর্যন্ত ভেংগে দেওয়ার ঘোষনা দেয়া হয়।”

বিষয়টি সোস্যাল মিডিয়ায় বেশ আলোচনার সৃষ্টি করে। সুশান্ত দাশ গুপ্ত প্রশ্ন রাখেন, যদি অভিযোগ করে এভাবে মাস্তানের ভয়ে পালিয়ে বেড়াতে হয় তাহলে মানুষ কেন অভিযোগ করতে যাবে?

সুশান্ত দাশের স্ট্যাটাস থেকে আরও জানা যায়, বাদী ব্যাক্তি নাকি অফিস থেকে বাসায় ফিরতে পারছেন না। তার অফিসের নিচে ও বাসার সামনে ওই হোটেলের মালিক ও সহযোগীরা পাহারা বসিয়েছেন। সেই সঙ্গে তার বাসস্থানের দায়ীত্বশীলদের দ্বারাও তার ওপর চাপ দেওয়ানো হচ্ছে।

সুশান্ত লিখেন, “…বাদী বিকেলে তার অফিস করে বাসায় যেতে পারছেন না। ইতিমধ্যে হোটেল মালিক ও তার সাংগপাংগরা বাদীর বাসার সামনে পাহারা বসিয়েছে। এমনকি উনি যে সরকারী কোয়ার্টারে থাকেন সেখানে কলোনীর সেক্রেটারীর কাছে বিচার দেয়া হয়েছে বাদী কেন একই এলাকায় বসবাস করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। তার হাত পা ভেংগে দেয়া হবে। ভয়ে বাদীর অবস্থা যায় যায়।”

প্রসঙ্গত, ভোক্তা অধিকার নিশ্চিতের লক্ষ্যে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর এক ধরনের প্রণোদনার দিয়ে থাকে। আইন অনুযায়ী, যদি কোনও ভোক্তা কোনও পন্য বা সেবা সম্পর্কে কোনও প্রকারের অনিয়মের অভিযোগ করে আর ভোক্তা অধিকার আইন অনুযায়ী যদি সেই অপরাধ প্রমাণিত হয় তাহলে সেই কোম্পানিকে একটি নির্দিষ্ট অংকের টাকা জরিমানা করা হয়। আর সেই জরিমানার টাকার একটি অংশ অভিযোগকারী ভোক্তা পায়ে থাকেন।

বিষয়টি নিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় অনেক প্রচার হয়েছে। কয়েকজন অভিযোগ করে পুরষ্কার পেয়ে খুশিও হয়েছেন। আর তাই প্রতি বছর অনিয়মের অভিযোগের সংখ্যাও বেড়ে চলছে। তথ্য অনুযায়ী ২০১৩ সালে যেখানে অভিযোগের সংখ্যা ছিলো মাত্র ৩২টি সেখানে ২০১৭ সালে মাত্র প্রথম দুই মাসেই এই অভিযোগের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় দেড় হাজারেরও বেশি। অনেকেই এই আইনের কারণে কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ দিয়েছেন নানান সময়ে।

মোহাম্মাদ রুবেল মিয়া নামে একজন জরিমানার টাকা পেয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাসে লিখেন, “জরিমানার ১২৫০ টাকা হাতে পেলাম, ধন্যবাদ জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর।”

জাহাঙ্গীর আলম লিখেন, “ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের অভিযান ও জরিমানা। ধ্বংস করা হলো বিশাল পরিমান (৫ ড্রাম) আলকাতরাসম পোড়া তেল, ড্রামের তলায় প্রায় ১ ফুট তলানি ছিল।”

পাঠকের মতামত

Comments are closed.