183368

মানুষের কাজ কি কেড়ে নেবে যন্ত্র?

প্রশান্ত মান্না: আসছে নতুন নতুন প্রযুক্তি, রোবট। বাহু চেনা কাজ লোপ পাওয়ার আশঙ্কা। আগামী ৪-৫ বছরে সব ক্ষেত্রেই অটোমেশন বা মেশিন চালিত স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার শিকার হবেন অজস্র মানুষ, এমনই একটা আশঙ্কা করা হচ্ছে্ এই আশঙ্কা নতুন নয়। এটা আগেও যুগে যুগে দেখা দিয়েছে। মানুষ ভয় পেয়েছে, তবে শেষ পর্যন্ত সামলেও নিয়েছে। বিশেষ এক সমীক্ষায় বলা হচ্ছে আগামী ৪-৫ বছরের মধ্যে চালু ১০ ধরনের কাজের মধ্যে চার রকমের কাজ পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ফলে বিশাল সংখ্যার মানুষ কাজ হারাবেন। এরমধ্যে যেমন আছে তথ্য প্রযুক্তি। তেমনই আছে কৃষিক্ষেত্রও।

বিভিন্ন দেশে বিদেশী তথ্য সংস্থাগুলি অনেক কম টাকায় সেই দেশের কর্মীদের দিয়ে সফটওয়‌্যার তৈরি করে তার রক্ষনাবেক্ষন করে। এটি বিদেশী কর্মীদের দিয়ে করাতে গেলে তা ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ বেশি খরচ পড়ে। এরপর সেই কাজ গুলি ধিরে ধিরে কম্পিউটার করতে শিখে গেলে তারপর আর মানুষের দরকার পড়বে বলে মনে হয় না। তাই ভয়টা অমূলক নয়। তথ্য প্রযুক্তিতে কম্পিউটার নিজের যায়গা নিতে শুরু করে দিয়েছে। এরফলে সংস্থাগুলি কম্পিউটার রাখা ও রক্ষনাবেক্ষন করার প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যাচ্ছে।

ক্লাউড সার্ভিস মানে আপনাকে বাড়িতে বা অফিসে সার্ভার, কম্পিউটারের ঝামেলা রাখতে হচ্ছে না। রক্ষনাবেক্ষণের ঝামেলাও রইল না। আপনার চাই একটি টার্মিনাল ও নিরবিচ্ছিন্ন উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ইন্টারনেট কানেকশন। নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট কানেকশনের কথা আমেরিকা, ব্রিটেন, জার্মানির মত ধনী দেশ গুলি ভাবতে পারে। কিন্তু আমাদের পক্ষে তা বিলাসিতা। কারন এখনও বড় কোনো ডেটা সেন্টার গড়ে ওঠেনি। তাই থেকে যায় তথ্য চুরি যাওয়ার সম্ভাবনা। ক্লাউড সার্ভিস নেওয়ার অর্থ হল তথ্য একটি জায়গায় কেন্দ্রীভূত করা। সেখানে যে হ্যাকাররা হানা দেবে না এই গ্যারেন্টি কে দিতে পারে? তথ্য ও প্রযুক্তিতে ছোট ও মাঝারি সংস্থাগুলির কাজ কোনো অবস্থাতে কমার কোনো ভয় নেই। বরং সাইবার সিকিউরিটি সংক্রান্ত কাজের চাহিদা বিপুল পরিমানে বাড়বে।

যেসব যন্ত্রাংশের ফলে মানুষ কাজ হারানোর ভয় পাচ্ছে, তবে এখনই ভয় পাওয়ার মত কিছুই ঘটেনি। কারন ক্লাইড সার্ভিস, মেশিন লার্নিং, বিগ ডেটা বা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স এই সব প্রযুক্তি এখনও রয়েছে প্রাথমিক স্তরে। আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে গত পঁচিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে পরীক্ষা নিরিক্ষা চলছে। জাপানে একটি দুটি রোবট চালিত রেস্তরাঁর কথা শোনা গেছে। চালক বিহীন গাড়ি রয়েছে পরীক্ষামূলক স্তরে। কিন্তু কোটি কোটি মানুষের কয়েকশো কোটি ধরনের চাহিদা সামলানোর ভারটা শুধুই যন্ত্র সামলে দেবে এতটা ভয় পাওয়ার সময় আসেনি।

এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলিতে বাইরে থেকে এসে বিরাট ব্যবসা করে যাচ্ছে বিদেশী সংস্থা গুলি। ফলে ৪-৫ বছর পর উন্নত বিশ্বে কি হতে পারে আশায় হতাশ না হয়ে এখনই অন্যভাবে ভাবতে হবে আমাদের মত মানুষ গুলিকে। মানুষকে বাদ দিয়ে কোনো ভাবনাই হতে পারে না।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.