183248

এশিয়ায় কোন নীতি নিয়ে এগুচ্ছেন ট্রাম্প?

নূসরাত জাহান: নির্বাচনি প্রচারের সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি ক্ষমতায় গেলে ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেবে। তখন তার বৈদেশিক নীতি কেমন হতে পারে তার কিছুটা আভাস পাওয়া যায়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা তখন বলেছিলেন, এশিয়ার দিকে নজরই দেবে না যুক্তরাষ্ট্র। আর এ সুযোগ কাজে লাগাবে চীন। তবে শুধু এশিয়াই নয়, অনেক ক্ষেত্রেই যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প ভাবা হচ্ছে চীনকে। এটাই কী তবে ট্রাম্পের এশিয়া নীত!

টিপিপি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বের হয়ে যাওয়ার ঘোষণার পর অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল বেইজিংকে এ গোষ্ঠীভুক্ত হওয়ার প্রস্তাব দেন। চীন মত জানাযনি। তবে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া টিপিপি ‘অর্থহীন’।

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই চীনের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্রের। এ বিষয়ে বিশ্লেষকরা বলেন, চীনের সঙ্গে ট্রাম্পের গভীর সম্পর্ক। তারা বলেন, চীন বা উত্তর কোরিয়ার মতো একগুঁয়ে দেশের সঙ্গে সম্পর্কের ভিত্তিতে ট্রাম্পের এশিয়া নীতিকে ব্যাখ্যা করা যাবে না। কারণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে এমন সম্পর্ক তৈরি করে রেখেছেন যা দেখে বিভ্রান্ত হওয়ার সব ধরনের সুযোগ আছে। এতো সহজে ট্রাম্প এশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপও করবে না এবং এশিয়াকে ছেড়েও যাবে না। মূলত ট্রাম্প নিজেই এশিয়া সম্পর্কে তার নীতি নিয়ে একটা ধোয়াশার সৃষ্টি করে রেখেছেন।

শুধু সিনো-মার্কিন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কই আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এ দেশ দুটি যৌথভাবে বিশ্ব অর্থনীতির ৩৬ শতাংশ পূরণ করে। দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের আগ্রসী ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানের জন্য এশিয়ার অনেক দেশই তাদের ওপর ক্ষুব্ধ। তারপরও এ ইস্যু বা অন্য কোনো ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের যুদ্ধ বাধুক এটা কেউই চায় না। কারণ তার প্রভাব শুধু একটা এলাকার ওপর নয়, পুরো বিশ্বের ওপর পড়বে। এটা যুক্তরাষ্ট্রও খুব ভালোভাবেই জানে। তাই মুখে যতই হম্বিতম্বি করুক না কেন সহজে তারা এশিয়ার কোনো দেশের সঙ্গে সংঘাতে জড়াবে না।

মে মাসের প্রথম দিকে চীনের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসন অর্থনৈতিক চুক্তি করায় আপাতত বিশ্ব হাফ ছেড়ে বেঁচেছে। এছাড়া চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ প্রকল্পকেও স্বাগত জানিয়েছে তারা। তবে মানবাধিকারী কর্মীরা হয়তো দুই দেশের সম্পর্কে কিছুটা হতাশ হতে পারে। কারণ তারা ভেবেছিল বৈরী এ সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে চীনের মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নতি করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র দিয়ে চাপ দেবে। পরিস্থিতি যেটাই হোক দুই দেশই নিজেদের স্বার্থেই বৈরিতাকে দূরে রেখে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। সূত্র: আল-জাজিরা।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.