182985

Ransomware-এর জাঁতাকল থেকে মুক্তি পেতে আজ হন্যে বিশ্ব

প্রশান্ত মান্না: বর্তমানে প্রযুক্তির এত উন্নতি ঘটছে যে এই আগ্রাসন গোটা মানবজাতিকে নিঃশেষ করে দিতে পরে। বংশ পরম্পরাকে রক্ষা করতে গেলে যুক্তি ও কারন দিয়ে একে লাগাম দিতে হবে। প্রযুক্তির দ্রুত উন্নতি নিয়ে সম্প্রতি এক সেমিনারে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন পৃথিবী বিখ্যাত বিজ্ঞানি স্টিফেন হকিং। এরজন‌্য তিনি বিভিন্ন দেশের সরকারকে এগিয়ে আসার আরজিও জানিয়েছিলেন কেমব্রিজ বিশ্ব বিদ্যালয়ের এই পদার্থবিদ।

আর তাঁর কথা মত ঘটলও তাই। এশিয়া, ইউরোপ, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মত প্রায় ১৫০ টি দেশ পড়ল সাইবার হানার কবলে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সব কম্পিউটারের সার্ভার সিস্টেম। যার যেরে কম্পিউটারের সমস্ত ফাইল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে সমস্ত ইউজারদের। আর এই ভাইরাস ভেদ করার জন্য যে কোড দরকার তা দেওয়ার জন্য চাওয়া হচ্ছে কয়েকশো বিটকয়েন। মুক্তি পনের বিনিময়ে ছাড় দেওয়ার জন্য সাইবার জগৎ এই ঘাতকের নাম দিয়েছে Ransomware । পনবন্দি করার নজির এখন সারা বিশ্বে ছেয়ে গেছে। এখন সারা বিশ্বে ডিজিটাল পন বন্দির ফরম্যাটও বদলে গেছে। তার প্রমান পাওয়া গেল গত কিছুদিনের এই ব্যাপক সাইবার হামলার মাধ্যমে। মুক্তিপনের অঙ্কটা ছিল মাথা পিছু ৩০০ বিটকয়েন, ভারতীয় মুদ্রায় এর পরিমাপ ৩ কোটি ৪৯ লক্ষ ৭৪ হাজার ৭৯৯.৯২০ টাকা।

Ransomware কী?
সংক্রামক সফটওয়ার বা অ্যাপ্লিকেশন যা কম্পিউটারের ফাইলের এনক্রিপ্ট করে দেয়। এবং তা খুলে দেওয়ার জন্য টাকা দাবি করে। এর জন্যই এর নাম রাখা হয়েছে Ransomware ।

বিটকয়েন কী?
অনলাইনে টাকা পাঠালে যেমন দেখা যায় না অথচ অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়ে যায়, তেমনই বিট কয়েন হল এক ধরনের ভার্চুয়াল কারেন্সি, যা অনলাইন কেনাকাটির জন্য ব্যবহার করা হয়। এক কথায় ডিজিটাল মুদ্রা। যেহেতু এই মুদ্রা সাংকেতিক রূপে থাকে তাই এটি দেখা যায় না এবং অত্যন্ত নিরাপদ। তাই এর নাম ক্রিফ্টো কারেন্সি। ডলার, ইউরো বা পাউন্ডের মাধ্যমে এটি কেনা বেচা করা হয়। এবং জমিয়ে রাখা যায় নিজের ওয়ালেটে। কে দিচ্ছে বা কার অ্যাকাউন্টে যাচ্ছে বলা যায় না তাও।

ওয়ানাক্রাই কী?
এটিও এক ধরনের Ransomware, যা কম্পিউটার বা মোবাইলের ফাইল এনক্রিপ্ট করে। উইন্ডোজ ১০ এর আগের ভার্সান অর্থাৎ যে সমস্ত কম্পিউটার এমএস০৭ থেকে ১০ প্যাচ বা অপারেটিং সিস্টেমের আপডেট ইনস্টল করা নেই, সেগুলিই ওয়ানাক্রাইয়ের শিকার হচ্ছে। এই ভাইরাস বিভিন্ন সময়ে তার স্বত্বার পরিবর্তন করে, যা থাবা বসাতে পারে “প্যাচ” পর্যন্ত। ওয়ানাক্রিফ্ট জিরো আর ২.০ বা ওয়ানাক্রাই নামেও পরিচিত এটি।

কিভাবে ছড়ায়?
সাধারনত সংক্রামক ইমের বার্তার মাধ‌্যমে কম্পিউটারের নেটওয়ার্কে ছড়ায় এটি। এরপর গোটা সার্ভারেই ছড়িয়ে পড়ে্ সংক্রামক লিঙ্ক বা ওয়েবসাইট থেকে ফাইল ডাউনলোডের ফলেও ছড়ায় এই ওয়ানাক্রাই।

বিটকয়েন বনাম ট্র্যাডিশানাল মানি
মোবাইল বা ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে বর্তমানে আমরা অনেকেই আর্থিক লেনদেন করে থাকি। এই আর্থিক লেনদের তথ্য কিন্তু কোনো রকম গোপন থাকে না, অর্থাৎ চাইলেই খুঁজে বের করা যায়। কিন্তু বিটকয়েন লেনদেন সম্পূর্ণ গোপন ও নিরাপদ। এখানে যে বিটপয়েন্ট দিচ্ছে বা নিচ্ছে তার কোনো রকম তথ্যই জানা যায় না।

বিটকয়েনের লেনদেনে কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন হয় না। তাই লেনদেনের গতীবিধিও অনুসরণ করা যায় না।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.