182681

আইএমএ-র সমীক্ষায় বিস্ফোরক তথ্য : বর্তমানে বেশিরভাগ চিকিৎসকেরই হাইপ্রেসার

প্রশান্ত মান্না: ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সমীক্ষায় দেখা গেছে বর্তমানে চিকিৎসকদেরই হাইপ্রেসার বেড়ে চলেছে অতীরিক্ত মাত্রায়।

অতিরিক্ত কাজে চাপ, অনিয়ম, উদ্বেগ ডাক্তারি পেশার সঙ্গে এসবই জুড়ে আছে, তা কারুর অজানা নয়। যে চিকিৎসকরা নিয়ম মেনে প্রেসারের ওষুধ খেতে বলছেন, শারীরিক পরিশ্রম বাড়াতে বলছেন, শাক সব্জি, দুধ, ফল খেতে বলছেন, আজ সেই চিকিৎসকরাই কেমন আছেন আমরা কি কখনও জিজ্ঞাসা করেছি?

এই কিছুদিন আগে বিশ্ব হাইপারটেনশন দিবস গেল। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএম এ) ও কয়েকটি সংস্থা একটি জাতীয় সমীক্ষার আয়োজন করেছিল। তাতে উঠে এল নানা বিস্ফোরক তথ্য। জানা গেল, প্রেসারের ওষুধ খাওয়া স্বত্বেও অর্ধেকের বেশি চিকিৎসকই ভুগছেন হাই ব্লাড প্রেসারে। দেশের ৫৫ শতাংশ চিকিৎসকের রাতের দিকে প্রেসারের মাত্রা অস্বাভাবিক। ২১ শতাংশ চিকিৎসক ভুগছেন মাস্কড হাইপারটেনশনে। ফলে সামাজিকভাবে মানুষকে সুস্থ, স্বাভাবিক এবং নিরোগ রাখার ভার যাদের উপর তারাই এখন বিপদসীমার মধ্যে। চিকিৎসকদের মধ্যে হার্টের অসুখ ও হার্ট অ্যাটাকের আমঙ্কাও বাড়ছে।

সাধারনভাবে দিনে রক্তচাপ বাড়ে এবং রাতে কমে। আইএমএ-র সভাপতি এবং এবং বিশিষ্ট্য চিকিৎসক কেকে আগারওয়াল বলেন, উচ্চরক্তচাপ প্রশ্নে চিকিৎসকদের অবস্থা খুবই উদ্বেগ জনক। আমরা বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত। কার্ডিওলজিস্টরা জানাচ্ছেন যে প্রেসারের উপরের মাত্রা ১৪০ এবং নিচেরটা ৯০ এর বেশি থাকলে চিকিৎসকরা মনে করেন সেই ব্যক্তির হাইপারটেনশন বা উচ্চরক্তচাপ আছে। বিভিন্ন ধরনের হাইপারটেনশন বা উচ্চরক্তচাপ হয়, যেমন- নকটারনাল হাইপারটেনশন, হোয়াইটকোর্ট হাইপারটেনশন, মাস্কড হাইপারটেনশন।

দিনে প্রেসার বাড়ে এবং রাতে কমে। কিন্তু রাতে যদি কোনো মানুষের প্রেসার বাড়ে তখন নকটারনাল হাইপারটেনশন হয়। অনেকেরই সাধারনভাবে রক্তচাপ স্বাভাবিক ঘরে থাকে। কিন্তু চিকিৎসকের চেম্বারে এলে বেড়ে যায়, একে বলে হোয়াইটকোর্ট হাইপার টেনশন। এছাড়া গভীর রাতে হঠাৎ প্রেসার কমে যাওয়াকে নকটারনাল ডিপ এবং ঘুম থেকে উঠে প্রেসার বাড়াকে আর্লি মর্নিং সার্জ বলা হয়। সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে অন্তত ৩৭ শতাংশ চিকিৎসকই নকটারনাল হাইপারটেনশনে ভুগছেন। বিশিষ্ট্য কার্ডিও লজিস্ট ডঃ অরূপ দাশবিশ্বাস বলেন, “আমাদের পেশায় যুক্তদের একটা বড় অংশেরই জীবনযাপন, কাজের ধরন উদ্বেগ উৎকন্ঠা সবই হাইপারটেনশন বাড়াচ্ছে। তাই অনুরোধ অন্যকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি নিজের শরীরটা্ও দেখুন।

বিশিষ্ট্য হার্টসার্জেন ডঃ সত্যজিত বসু বলেন, আমরা রোগীদের যেগুলি অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলতে বলি, নিজেদের জীবনে অনেকেই সেগুলি মানি না। ধূমপান মদ্যপানের মত অভ্যাস তো আসেই কসরতের অভাব পেশাগত উতকণ্ঠা, অনিয়ম, ঘুমের অভাব- সবই চিকিৎসক সমাজের একাংশকে বড়সড় বিপদের মুখে ঠেল দিচ্ছে।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.