179962

আপনার কি ক্যান্সার হয়েছে? জেনে নিন এই লক্ষণ গুলির মাধ্যমে

ক্যান্সার একটি মরণব্যাধি। প্রতিবছর বিশ্বে অসংখ্য মানুষ ক্যান্সারে মারা যায়। ক্যান্সারের কোনো নির্দিষ্ট কারণ নেই। তবে বয়স, খাবার, জীবনযাপনের ধারা, পারিবারিক ইতিহাস, পরিবেশ এবং পেশাগত কারণে ক্যান্সার হতে পারে।

সাধারণত বয়স যত বাড়তে থাকে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও তত বাড়তে থাকে, কারণ এ সময়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। গবেষণায় দেখা যায় যারা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় তাদের প্রায় শতকরা ৭০ ভাগেরই বয়স ৬০ বছরের ওপর। তবে কম বয়সেও বহু মানুষ এই মরন ব্যাধিতে মৃত্যুবরণ করে।

ক্যান্সারের কিছু লক্ষণ আছে যেগুলো দেখা দিলে আগে থেকেই ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতন হওয়া যায়। লক্ষণ গুলো থাকলে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে, আবার একেবারে নাও থাকতে পারে। কিন্তু সতর্ক থাকতে তো আর সমস্যা নেই। তাই না? তাছাড়া প্রাথমিক ধাপেই ক্যান্সার সনাক্ত করা গেলে অধিকাংশ সময়েই ক্যান্সার আংশিক বা পুরোপুরি নিরাময় করা সম্ভব। তাই প্রাথমিক ধাপেই ক্যান্সার সনাক্ত করার জন্য প্রয়োজন সতর্কতার। তাহলে দেখে নিন ৬টি লক্ষণ যেগুলো থাকলে ক্যান্সার আছে কিনা তা পরীক্ষা করিয়ে নেয়া উচিত।

হঠাৎ অস্বাভাবিক ওজন হ্রাসঃ-
কোনো কারণ ছাড়া হঠাৎ যদি আপনার ওজন অস্বাভাবিক কমে যায় তাহলে অবশ্যই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নেয়া উচিত। কারণ ক্যান্সার হলে একটি ধাপে এসে হঠাৎ করেই ওজন কমে যাওয়া শুরু করে। আপনার ওজন যদি কোনো কারণ ছাড়াই খুব দ্রুত ১০ পাউন্ড বা তারও বেশি কমে যায় তাহলে সেটা ফুসফুস বা পাকস্থলীর ক্যান্সারের একটি লক্ষণ হতে পারে। তাই এধরণের সমস্যায় পড়লে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

জ্বরঃ-
ক্যান্সারের সাধারণ একটি লক্ষণ হলো জ্বর। তবে সাধারণত ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ার পর এই লক্ষণ দেখা দেয়। প্রায় সব ধরণের ক্যান্সারের রোগীরাই কোনো না কোনো ধাপে দীর্ঘমেয়াদি জ্বরে ভুগে থাকেন। প্রতিদিন রাতে কাপুনি দিয়ে জ্বর আসা এবং ঘন ঘন জ্বর হলে অবশ্যই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নেয়া উচিত।

অতিরিক্ত ক্লান্তি লাগাঃ-
সারাদিনই অতিরিক্ত ক্লান্তি লাগার সমস্যা হলো ক্যান্সারের আরেকটি উপসর্গ। এধরণের ক্লান্তিতে আপনি যতই বিশ্রাম নিন কোনো ভাবেই ক্লান্তি কমবে না। কিছু ক্যান্সারে রক্ত শূন্যতা দেখা দেয় যেমন কোলন ক্যান্সার, লিউকোমিয়া ও পাকস্থলীর ক্যান্সারে। ফলে শরীর অতিরিক্ত দূর্বল লাগে সব সময়। তাই সারাক্ষণ কান্তি লাগার সমস্যা দেখা দিলে অবহেলা করা উচিত নয় কারণ এটা ক্যান্সারের একটি অন্যতম লক্ষণ।

ব্যাথাঃ-
কিছু কিছু ব্যাথা আছে যেগুলো সহজে যায় না এবং ঘন ঘনই দেখা দেয়। এধরণের ব্যাথা ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। যেমন দীর্ঘ মেয়াদী হাটুর ব্যাথা হাড়ের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। আবার অসহ্য মাথা ব্যাথা যদি যেতে না চায় তাহলে সেটা ব্রেইন টিউমারের লক্ষণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কোলন, রেকটাম ও ওভারির ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে বহুদিন ধরে পিঠে ব্যাথা করা। সাধারণত ক্যান্সার ছড়িয়ে গেলে ব্যাথার উপসর্গ দেখা দেয়।

ত্বকের পরিবর্তনঃ-
কিছু কিছু ক্যান্সারে ত্বকের কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। সাধাণরত ত্বকে যে ধরণের সমস্যা হলে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন সেগুলো হলো-

– ত্বকের নির্দিষ্ট যায়গা কালচে হয়ে যাওয়া
– ত্বক ও চোখ হলদে হয়ে যাওয়া
– ত্বকের নির্দিষ্ট কোনো যায়গায় চুলকানী অনুভূত হওয়া
– হঠাৎ করে লোম বেড়ে যাওয়া
– শরীরের কোনো যায়গা হঠাৎ করে ফুলে যাওয়া

কিছু কিছু ক্যান্সার টিউমার থেকে হয়। দীর্ঘমেয়াদী টিউমার এক সময়ে ছড়িয়ে গিয়ে ক্যান্সারের সৃষ্টি করে। তাই শরীরের যে কোনো যায়গায় উঁচু টিউমারের মত অনুভূত হলে সাথে সাথেই ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন। বিশেষ করে স্তনে অথবা এর আশে পাশে টিউমার অনুভব করলে সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.