179541

এই ২৩ টি কাজ করবেন না নারিরা

বহু পরীক্ষা-নিরিক্ষা আর গবেষণার পর বিশেষজ্ঞরা মেয়েদেরকে ২৩টি কাজ করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ মাঝেমধ্যে মানুষ নিজেই নিজের সবচে’ বড় শত্রু হয়ে ওঠে। বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে এ কথাটাকে চিরসত্য বলে মনে করেন মনোবিজ্ঞানীরা। অভিজ্ঞতা, সম্পর্ক, ব্যক্তিত্ব, সততা জীবনের এসব ক্ষেত্রে মানুষ নিজেকে পরিপূর্ণরুপে দেখতে চায়। নিজেকে আরো ত্রুটিহীন করতে গিয়ে প্রায়ই কাণ্ডজ্ঞানহীন কাজ করে বসে তারা।

নারীদের জন্যে ২৩টি কাজ বা বদঅভ্যাস তুলে ধরা হলো। এগুলো আপনার ব্যক্তিত্বকে হালকা করে দেবে।

১. সবসময় ক্ষমা চাওয়া: রীতিমতো গবেষণা করে দেখা গেছে, মেয়েরা ছেলেদের চাইতে অনেক বেশিবার ‘দুঃখিত’ বা ‘সরি’ কথাটা উচ্চারণ করে। নিজের ভুল হলে বা কিছু না করতে পারলে দুঃখিত হবেন তা ঠিক আছে। কিন্তু বেশি বেশি ‘সরি’ বলার পরিণামটা ভালো নয়, বরং খারাপই হয়। সবসময় সবকিছু করার সামর্থ্য আপনার নাও থাকতে পারে। তাছাড়া কোনো কাজের অনিচ্ছাও থাকতে পারে আপনার।

২. সবাইকে সবকিছুতে ‘ঠিক আছে’ বলা: ঠিক আছে আমি কথা রাখব, আচ্ছা আমার কাজ থাকলেও আপনার কাজটা করবো, ঠিক আছে রাতের অনুষ্ঠানে আসব, হ্যা তোমার সাথে দেখা হবেই- সবকিছুতে হ্যাসূচক মাথা নাড়ানো থেকে বিরত থাকুন। সত্যিকার অর্থে যা করতে চান তাই করুন। যেটা করতে মন চায় না তা এড়িয়ে যান বা ভদ্রভাবে না বলে দিন। এতে করে আপনার প্রতি মানুষের সম্মানবোধ আরো বেড়ে যাবে।

৩. নিজেকে শুধু ‘না’ বলা: কি করা উচিৎ আর কি উচিৎ নয়- অধিকাংশ মেয়েদের বড় একটা সময় নষ্ট হয় এ বিষয়ে দুশ্চিন্তা করে। সিদ্ধান্ত নিতে নিরাপত্তাবোধ করুন। কিছু করতে মন চাইলে অস্বস্তিতে ভুগবেন না।

৪. খাবারকে শত্রু মনে করা: নিজেকে সুশ্রী আর আকর্ষণীয়া করে তুলতে চাইলে খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে- এমন চিন্তা পুরোই ভুল। দেহের যত্ন নিতেই বরং নানারকম খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হয়। তবে অবশ্যই তা পরিমিত হতে হবে। কিন্তু নিয়মিত খাবেন, নয়তো অসুস্থ হয়ে পড়বেন।

৫. মেয়েলি সমস্যায় দুশ্চিন্তাগ্রস্ত: পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে ধ্যান-জ্ঞান এ বিষয়কে ঘিরে থাকার প্রয়োজন নেই। এ ব্যাপারে সমস্যা থাকলে অবশ্যই ডাক্তার দেখান, দুশ্চিন্তা করবেন না।

৬. পেশাগত অর্জনকে প্রতারণা মনে করা: সাধারণত ছেলেরা মনে করে যে, পেশাগত জীবনে মেয়েরা বেশি সুবিধা ভোগ করে। তাই অফিসে ছেলে সহকর্মীকে ছাড়িয়ে কিছু অর্জন করাটা প্রতারণা বলে মনে করেন অনেকে। তা কিন্তু নয়। মনে রাখবেন, যা পেয়েছেন তার যোগ্য আপনি।

৭. অনলাইন থেকে ছবি সরিয়ে ফেলা: আপনার ফেসবুকে বা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি দিন। দেখা যায়, ছবি থাকলেও যে ছবিগুলো আপনার পছন্দ হচ্ছে না বা সুন্দর দেখাচ্ছে না, সেগুলো আপনি সরিয়ে ফেলছেন। কোনো একটা ছবিতে আপনাকে কেমন দেখাচ্ছে তা বড় কথা নয়। ওই ছবিটি কোনো একটা স্মৃতি বা সুন্দর একটা ঘটনার কথা বলছে এবং আপনি তারই অংশ। ব্যাপারটাকে এভাবে দেখুন।

৮. কল্পনার সঙ্গে বাস্তব জীবনকে মেলানো: বহু সময় ধরে অনলাইনে হয়তো আপনি আবিষ্ট হয়ে আছেন। সেখানে আপনার কোনো আদর্শ ব্যক্তিত্ব থাকতে পারে। তাছাড়া অন্যান্যরা কি করছে তারও খবর আপনি পাচ্ছেন। এসবের সাথে নিজের জীবনকে মেলাতে চেষ্টা করবেন না। গবেষণায় দেখা গেছে, ফেসবুকে আসক্তরা প্রায়সময় হীন মন-মানসিকতায় ভোগে। এর কারণ হলো, ফেসবুকের অন্যদের সাথে নিজের জীবনকে তুলনা করা।

৯. অপরাধবোধে সবসময় অনুতপ্ত হওয়া: অপরাধবোধ এবং অনুতাপ- এ দু’টি আবেগ একটা মানুষকে মারাত্মক অত্যাচার করে। যে অপরাধ করেছেন তা থেকে শিক্ষা নিন। এ শিক্ষা থেকে অভিজ্ঞতা লাভ করবেন।

১০. প্রতিদিন উচুঁ হিলের জুতো পড়া: মোহনীয় দেখানোর জন্যেই হোক বা লম্বা, প্রতিদিন উচুঁ হিলের জুতো পড়া উচিৎ নয়। আরামদায়ক জুতো পড়ুন। চলাফেরা করতে সুবিধে হবে। তাছাড়া পায়ে ব্যাথার অনুভূতি থেকে মুক্তি পাবেন।

১১. অন্য নারীর সেক্স নিয়ে আগ্রহ: অন্যের যৌনজীবন নিয়ে আগ্রহকে দমন করুন। কে কী করলো, কার কয়জন প্রেমিক এসব আপনার চিন্তার বিষয় নয়। আপনার পছন্দ বা অপছন্দের বিষয় নিয়ে ভাবুন।

১২. নিজের সেক্স জীবনের সততা: নিজের সেক্স জীবন নিয়েও আপনার অন্যের সাথে আলোচনার কোনো প্রয়োজন নেই। আপনি একজনের সাথে বা একাধিকজনের সাথে কিছু করে থাকলেও এটা আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার।

১৩. আপনি যেমন না তা হওয়ার চেষ্টা: ধরা যাক, আপনি ঠাণ্ডা স্বভাবের একটি মেয়ে। কিন্তু বন্ধু-বান্ধবের মাঝে আপনি খুব হৈচৈ করতে পছন্দ করেন এমন দেখানোর প্রয়োজন নেই। আপনি যেমন তেমনটিই দেখতে পছন্দ করবে মানুষ।

১৪. ‘পাগলাটে’ খেতাবকে ভয় পাওয়া: একটা মেয়েকে পাগলাটে মনে করাটা খুব অস্বস্তিকর। এ যেনো শুধু ছেলেদের জন্যেই প্রযোজ্য। এমন ব্যাপরকে ভয় করার কিছু নেই। মূলত পাগলামী মেয়েদের অতি আবেগীয় ব্যাপার। এক লেখিকা লিখেছেন, মেয়েদের পাগলাটে ভাবকে খারাপ করে দেখা আসলে তাদেরকে চুপ করিয়ে রাখার নামান্তর।

১৫. ইন্টারনেট আসক্তিকে ভয় করা: গিলতে কষ্ট হচ্ছে মানেই যে আপনার গলায় টনসিল হয়েছে তা নয়। ইন্টারনেট আসক্তিকে ভয় পেয়ে বাস্তব জীবনে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা দিয়ে আপনি প্রমাণ করছেন যে, আপনি আসলে ভীতু।

১৬. জীবন ‘পিন্টারেস্ট’ এর মতো না হওয়ার আক্ষেপ: পিন্টারেস্টের মুগ্ধ হতে পারেন আপনি। কিন্তু এখানকার জিনিসগুলো জীবনে আপনি নাও পেতে পারেন। এ জন্য আক্ষেপ থাকাটা স্রেফ বোকামি।

১৭. একা থাকার ভয়: কয়েকটি ঘটনার ওপর আপনার নিয়ন্ত্রণ নেই। এর মধ্যে একটি হলো- কে হবে আপনার জীবনসঙ্গী। মেয়েরা একা থাকতে পারে না এবং সেজন্যেই একজনকে বেছে নিতে হবে- এ চিন্তাটি শুধু দুশ্চিন্তাই বাড়িয়ে দিতে পারে। অথচ মানুষ তার সবচে’ সুন্দর সময় কাটায় নিজের সাথে।

১৮. সম্পর্কের কারণে বিয়ে করতে হবে: একা থাকার ভয়ে আপনি সম্পর্কে জড়াচ্ছেন। যদি ব্যাপারটি এমন হয় অর্থাৎ সম্পর্কটি ভাল লাগছে না, কিন্তু প্রয়োজনের খাতিরে জড়াতে হচ্ছে- এ ধরনের চিন্তা ধারণ করবেন না। এ কারণে বিয়ের সম্পর্কে জড়ালে তার ফলাফল আসে দ্রুত ডিভোর্সের মাধ্যমে। কাজেই পছন্দের মানুষটির জন্যে অপেক্ষা করুন।

১৯. যেকোনো ছুটি না কাটানো: চাকরিতে হোক বা নিজের বাসাতেই হোক ছুটি না কাটানোর মনোভাব খুব বাজে স্বভাবের পরিচায়ক। পাওনা ছুটি নিন, মনের মতো করে ছুটি কাটিয়ে আসুন।

২০. অসৎ সঙ্গ ধরে রাখা: কম বয়েসে অসৎ সঙ্গে পড়ে কিছু বাজে বন্ধু-বান্ধব জুটে যেতে পারে। তাদের ত্যাগ করুন। এমন সঙ্গে আপনার সর্বনাশ ঘটবেই।

২১. দেখা করার বাধ্যবাধকতা: অনেক পুরনো স্কুলের বন্ধুকে ফেসবুকে পেয়ে গেলেন। ধীরে ধীরে আরো ছোটবেলার বন্ধুরা তালিকায় চলে আসলো। এখন এটা আপনার গুরুদায়িত্ব নয় যে তাদের সবার সাথে আপনার দেখা করতেই হবে। সময়-সুযোগ মতো এবং আপনার কাছাকাছি যদি কাউকে পেয়ে যান, তবেই দেখা করুন। যাদের সাথে আপনার দীর্ঘদিন দেখা হয় না এবং দেখা হওয়ার প্রয়োজনও নেই, তাদের সাথে সম্পর্ক এমনিতেই মিলিয়ে যাবে।

২২. নিজের পছন্দ নিয়ে বিব্রতবোধ করা: আপনি নিজেকে অসুন্দর মনে করেন, কিন্তু অভিনয় করতে চান। চেহারা ভাল না দেখেই অভিনয়ের ইচ্ছাটা প্রকাশ করতে লজ্জাবোধ করেন। এ স্বভাব ত্যাগ করুন। আপনার যাতে আগ্রহ রয়েছে, তা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করুন। যাই আপনি করতে চান না কেনো, তার জন্যে প্রয়োজন ইচ্ছা, জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ইত্যাদি।

২৩. জীবনের গুরুত্বপূর্ণ কাজে ডেডলাইন ঠিক করা: প্রেম, বিবাহিত হলে বাচ্চা নেয়া, মনের মতো চাকরি পাওয়া যাই হোক না কেনো, জীবনের বড় লক্ষ্যগুলো অর্জনের শেষ সময় নির্ধারণ করে নিবেন না। অনিশ্চয়তাগুলোও বিবেচনায় রাখুন। তাহলে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ কিছু পেয়ে গেলে সে আনন্দ হবে অতুলনীয়।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.