178274

উৎক্ষেপনের সঙ্গে সঙ্গেই ভেঙে পড়ল কিমের ক্ষেপনাস্ত্র

ফের একবার শক্তি প্রদর্শন করার চেষ্টা করেছিল উত্তর কোরিয়া। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যুদ্ধবাজ কিম জং উনের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হল। জানা গিয়েছে, রবিবার উৎক্ষেপণের পরমুহূর্তেই বিস্ফোরণে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে উত্তর কোরিয়ার নতুন ক্ষেপণাস্ত্রটি। অন্তত দক্ষিণ কোরিয়া এবং আমেরিকার নিরাপত্তা সংস্থা তাঁদের রিপোর্টে এমনটাই জানিয়েছে। এমনকী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তাঁর নিরাপত্তা আধিকারিকদেরও উত্তর কোরিয়ার ‘ব্যর্থ’ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের কথা জানান হয়েছে। একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এদিন উত্তর কোরিয়ার দক্ষিণ হ্যামগিয়ং প্রদেশের সিনপো অঞ্চল থেকে ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়া হয়। কিন্তু পরমুহূর্তেই ভেঙে পড়ে সেটি। মার্কিন নিরাপত্তা সচিব জেমস ম্যাটিস বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং সেনাকে উত্তর কোরিয়ার অসফল উৎক্ষেপণের ব্যাপারে সমস্ত তথ্য জানান হয়েছে।’ তবে এই প্রসঙ্গে এখনও কোনও মন্তব্য করেননি ট্রাম্প।

ঠিক কী ধরণের ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার চেষ্টা করছিল উত্তর কোরিয়া, সেটা খতিয়ে দেখছে দক্ষিণ কোরিয়া এবং মার্কিন নিরাপত্তা আধিকারিক ও বিশেষজ্ঞরা। ইউএস প্যাসিফিক কম্যান্ড জানিয়েছে, কিম জং উন প্রশাসনের নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার ব্যাপারটি তাদের নজর এড়ায়নি। কিন্তু তারা এটাও জানতে পেরেছে উৎক্ষেপণের পরমুহূর্তেই সেটি ভেঙে পড়েছে।

এর আগে শনিবার উত্তর কোরিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট কিম ইল সাংয়ের ১০৫তম জন্মবার্ষিকীতে পিয়ংইয়ংয়ে বিশাল সেনাবাহিনী রাজপথে প্যারেড করে। ওই প্যারেডেই সেনাবাহিনীকে নতুন পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিলেন কিম। পাশাপাশি, ওই প্যারেডে নতুন ইন্টারকন্টিনেন্টাল ও ব্যালিস্টিক মিসাইলও প্রদর্শিত হয়। কিম প্রশাসনের এক শীর্ষ আধিকারিক বিবিসি-কে জানান, আমেরিকার সঙ্গে অল আউট যুদ্ধে যেতে পুরোপুরি প্রস্তুত উত্তর কোরিয়া। এমনকী ট্রাম্পের হুমকি অনুযায়ী পেন্টাগন যদি পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্রও প্রয়োগ করে বসে, তাহলে পাল্টা পরমাণু অস্ত্র হামলা চালাতেও তৈরি উত্তর কোরিয়া। এদিন প্রেসিডেন্ট কিম জং উনকে ‘গার্ড অফ অনার’ দেয় দেশের সেনাবাহিনী। উত্তর কোরীয় যুদ্ধবিমান আকাশে ১০৫ সংখ্যাটি ফুটিয়ে তোলে। এই প্রথম সাবমেরিন থেকে ছোড়া যাবে এমন ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রদর্শিত হয় প্যারেডে। এই মিসাইলের পাল্লা ১০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আরও দু’টি নতুন ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রথাগত লঞ্চার-সহও এদিনের প্যারেডে প্রদর্শিত হয়েছে।

গত এক বছর ধরেই রাষ্ট্রসংঘ-সহ বিশ্বের প্রায় সব দেশের চোখ রাঙানিকে উড়িয়ে দিয়ে একতরফাভাবে পর পর পরমাণু বোমা, হাইড্রোজেন বোমা, দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছেন স্বৈরাচারী কিম৷ মহাশক্তিধর প্রতিবেশী চিনও সংযত করতে পারেনি তাঁকে৷ ট্রাম্প উত্তর কোরিয়াকে দমন করার হুঙ্কার ছাড়তেই ফের ট্রাম্পকে চ্যালেঞ্জ করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়েন কিম৷ বুঝিয়ে দেন, আমেরিকাকে থোড়াই কেয়ার করেন তিনি৷ সম্প্রতি দেশের পূর্ব উপকূলে ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালান তিনি৷ ক্ষেপণাস্ত্রটি জাপান সাগরে আঘাত হানে৷ এটি কে-১৫ মডেলের মাঝারি পাল্লার মিসাইল৷ জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, রাশিয়া এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার নিন্দা করে৷ এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ১৮৯ কিলোমিটার পর্যন্ত যে কোনও লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম৷ তখনই মার্কিন বিদেশসচিব রেক্স টিলারসনের কড়া প্রতিক্রিয়া দেন, উত্তর কোরিয়াকে সবক শেখানোর সময় এসেছে৷ কিন্তু তাতেও যে দমে যায়নি উত্তর কোরিয়া এই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের প্রচেষ্টা ফের একবার তা প্রমাণ করে দিল।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.