177290

সিঙ্গাপুর কি আসলেই সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহর?

সুলতানা সাকি: টানা চতুর্থ বছরের মতো সিঙ্গাপুরকে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহর হিসেবে চিহ্নিত করেছে অর্থনৈতিক বিষয়ক সাময়িকী ইকোনমিস্টের গোয়েন্দা বাহিনী। তবে অনেকের জন্যই এটা বিশ্বাস করা কঠিন হতে পারে। বিষয়টি নিয়ে বিতর্কও জমে উঠতে পারে বেশ।

২০১৪ সালে প্রথম বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল নগরের সিল লাগে সিঙ্গাপুরের গায়ে। তখন এই নগর রাষ্ট্রের উপপ্রধানমন্ত্রী থারমান সানমুগারাতœাম বলেন, ‘সবচেয়ে ব্যয়বহুল রাষ্ট্রের তালিকায় যে সব মানদ- ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলোর মানে এই নয় যে এই শহরে জীবন চালাতে সর্বোচ্চ টাকা লাগে। বরং আমদানি করা ও অভিজাত রেস্তোরার দাবি খাবার, ব্র্যান্ডের কাপড়চোপর, হাইফাই থিয়েটারের বিলাসবহুল টিকিটের মূল্যও এসব মানদণ্ডের ভেতর পড়েছে। ’

অনেকটা জবাব দিতেই কিনা, অথবা নিজস্ব তাগিদেও হতে পারে, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের (এনইউএস) লি কুয়ান ইয়ু স্কুল ফর পাবলিক পলিসির প-িতরা নিজের নির্ধারণ মানদ-ে আলাদা একটি তালিকা তৈরি করে ফেলেন। বহিরাগত ও স্থানীয়দের জীবনযাত্রা তারা আলাদা করে ফেলেন। তারা দেখেন, বহিরাগতদেও জন্য সিঙ্গাপুর বিশ্বের চতুর্থ এবং স্থানীয় সাধারণ বাসিন্দাদের জন্য অনেক দেশকে সামনে রেখে এটি বিশ্বের ৪৮ তম ব্যয়বহুল শহর।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক হিসাবে, সিঙ্গাপুর বিশ্বেও উন্নত অনেক শহরের সঙ্গেই কাধে কাধ মিলিয়ে অবস্থান করছে। ব্যক্তিগত যানবাহনের ব্যবহার অতিরিক্ত ব্যয়ের একটি কারণ। রাস্তায় যাতে আটসাট অবস্থা লেগে না যায় সেজন্য ব্যক্তিগত যান, বিশেষ কওে গাড়ির ওপর উচ্চ কর বসিয়েছে সেখানকার সরকার। তবে সেখানে সস্তায় ও সাধ্যেও মধ্যেই পাবলিক ট্রান্সপোর্ট পেয়ে যাবে। অনেক উন্নত দেশেই যে খরচ তুলনামূলক বেশি। ব্যক্তিগত গাড়ির মতো ট্যাক্সির খরচও সিঙ্গাপুরে বেশি। গাড়ির খরচ বাদ দিলে সিঙ্গাপুর ব্যয়বহুল শহরের তালিকায় র্আও নিচে নেমে আসবে বলে মনে করেন এই শহরে বসবাসকারী বিদেশিরাও।

সিঙ্গাপুরে নির্দিষ্ট কিছু নিত্যপণ্য, বিশেষ ব্র্যান্ডের পোষাক এবং ক্ষেত্র বিশেষে খাবার ও পানীয়র দামও বেশি পড়ে। যেমন মোটামুটি ধরনের দোকানে বা রেস্তোরায় তিন থেকে সাড়ে তিন ডলারের মধ্যে অনায়াসে এক বেলার ভালো মানের খাবার পাওয়া যায়। তবে ওয়াইন কিনতে গেলেই গুনতে হবে বাড়তি পয়সা যা হয়তো অনেক জায়গার চেয়েই বেশি মনে হতে পারে।

ডেভিড ওয়াকার নামের এক গ্রাফিক ডিজাইনার বলেন, সম্প্রতি জুরিখ (সুইজারল্যান্ড) গিয়ে তিনি দেখেছেন, সেখানেও পানীয়ের জন্য খরচ এমনই বেশি পড়ে। তবে সিঙ্গাপুরে খাবারের দাম তুলনামূলক সস্তা এবং সহজলভ্য। জুরিখে যেটা নেই।

আবাসনও সিঙ্গাপুরে খরচ বেশি হওয়ার একটা কারণ। দেখা যায়, বহিরাগতরা সিঙ্গাপুরে এসে পুরো বাড়ি বা আস্ত ফ্ল্যাট নিয়ে থাকাতেই সাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। জনপ্রিয় রিভার ভ্যালি এলাকায় এভাবে থাকার খরচ চার থেকে সাত হাজার সিঙ্গাপুর ডলার পর্যন্ত পড়তে পারে। তবে অভিজাত এলাকা এড়ালে অর্ধেক টাকায়ও বসবাস করা সম্ভব। সূত্র: বিবিসি।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.