176816

দৃষ্টিহীন নিধি হাসি ফোটাচ্ছেন হাজারো মানুষের মুখে

নূসরাত জাহান: নিধি গোয়েল ১৫ বছর বয়সে দৃষ্টিশক্তি হারায়। এখন তার বয়স ৩১ বছর। দৃষ্টিশক্তি ছাড়াই জীবনের ১৬ বছর কাটিয়ে দিয়েছেন তিনি। এজন্য তিনি মোটেও দুঃখী নন। বরঞ্চ তিনি খুবই খুশি এবং ইতিবাচক মনোবলের অধিকারী এক মানুষ। তার ইতিবাচক মনোভাবই তাকে জীবনের পথে আরো এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে। তাইতো দৃষ্টি না থাকার পরও তিনি হাজারো মানুষের মনে দৃষ্টি জ্বালাচ্ছেন। হাজারো মানুষকে আনন্দ দিচ্ছেন। তার কথা মানুষ কতটা আনন্দ পাচ্ছেন তা তিনি দেখতেও পাচ্ছেন না। নিধি হলেন প্রথম দৃষ্টিহীন কমেডিয়ান বা কৌতুক অভিনেতা।

মানুষকে হাসানোর বিষয়টি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন নিধি। কমেডিয়ান ছাড়াও তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিবন্ধীদের অধিকার ও জেন্ডার সমতা নিয়ে কাজ করেন। তবে নিধি কখনও কমেডিয়ান হতে চাননি। কিন্তু জীবনের হাস্যরস ও কৌতুকই তাকে এ কাজ করার প্রতি উৎসাহ জুগিয়েছে। তিনি মানুষকে আনন্দ দেওয়ার কাজটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন।

নিধি বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বলার ঢং বন্ধু-বান্ধদের খুব পছন্দ করে। আমার সহজাত এ গুণ দেখে আমার বন্ধু প্রমোদা মেনন মঞ্চে দাড়িয়ে সবাইকে জোকস বলে হাসাতে বলে। এজন্য সে আমাকে ছয় মাস সময় বেধে দেয়। এরপর আমি কাজ শুরু করি। আমার মনে যা আসতো তা আমি দিয়ে আমি একটি চিত্রনাট্য সাজাতাম। এরপর সেটি মঞ্চে দাড়িয়ে বলতে শুরু করলাম। দেখতে না পেলেও আমি তো শুনতে পেতাম। শুনতাম আমার কথাগুলো শুনে মানুষ কিভাবে হাসছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি প্রতিবন্ধী এবং অধিকার কর্মী। তাই একাধিক প্রতিবন্ধীর সঙ্গে আমার পরিচয় আছে এবং কথা হয়। আমি সবাইকে যেসব ঘটনা বরে হাসানো চেষ্টা করি তা আমার ও আমার ওইসব বন্ধুদের জীবনের নানা ঘটনার সমন্বিত রূপ আর কি।’

জনপ্রিয় কমেডিয়ান অদিমি মিত্তাল বিশ্ববাসীর সামনে নিধির পরিচয় করিয়ে দেন। গত ফেব্রুয়ারিতে তার ‘ব্যাড গার্লস’ সিলিয়ালের মাধ্যমে নিধিকে পরিচয় করিয়ে দেন। এ প্রসঙ্গে নিধি বলেন, ‘আমি যখন মঞ্চে হেঁটে আসি তখন লোকজন কিছুটা অস্বস্তি বোধ করে। এটা কি হলো, মেয়েটি অন্ধ? সে কী করবে? তার সাহায্যের প্রয়োজন হলে কী করবে? প্রতিবন্ধীদের সম্পর্কে সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া এমনই থাকে। এটা আমাদের জন্য স্বস্তিদায়ক নয়। আমরা জানি না তারা আমাদের নিয়ে কি ভাবে জানতেই চাই না। তবে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে এমন ধারণা মোটেই শোভন নয়। এসব বিষয় সরিয়ে রেখেই আমাদের এগিয়ে যেতে হয়। যেতে হচ্ছে।’

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.