176168

আফগানিস্তানে খিলাফত প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ আইএস

নূসরাত জাহান: মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা মহাদেশের বেশ কয়েকটি দেশে শক্ত ঘাঁটি গেড়েছে ইসলামিক স্টেট জঙ্গিরা। তারা দক্ষিণ এশিয়ায়ও ঘাঁটি গাড়তে প্রাণপণে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই লক্ষ্যে তারা আফগানিস্তানকে তাদের টার্গেট করেছে। তবে সে অর্থে আফগানিস্তানের খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারছে না। আফগান নাগরিকদের মধ্যে ভীতি সঞ্চার করতে তারা প্রায় জঙ্গি হামলাও চালাচ্ছে। কিন্তু তাতেও খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি আইএস।

গত ৫ মার্চ জঙ্গি দলটি দুই আফগান নাগরিকের শিরোশ্ছেদের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। নানাগরহার প্রদেশের আচিন প্রদেশে তাদের শক্ত ঘাঁটি থেকে ভিডিওটি প্রকাশ করেছে। সরকারের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করায় ওই দুই ব্যক্তিকে হত্যা করে আইএস। ওই ভিডিও প্রকাশের তিন দিনের মাথায় আফগান রাজধানী কাবুলের সামরিক হাসপাতালে বোমা হামলা চালায় তারা। চিকিৎসকের বেশে এক অস্ত্রধারী হাসপাতালের ভেতর প্রবেশ করে এবং এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে প্রায় ৩৮ জন প্রাণ হারায়। ওই হামালার পর আইএস-এর সংবাদ সংস্থা আমাকে হামলার দায় স্বীকার করে জঙ্গি দলটি।

এই দুটি ঘটনা এটাই প্রমাণ করে যে আইএস লিবিয়া, ইরাক ও সিরিয়ায় যেমন শক্ত ঘাঁটি গেড়েছে তেমটাই আফগানিস্তানেও গাড়তে চায়। একবার যদি তারা শক্ত হয়ে আফগানিস্তানে বসতে পারে তাহলে এ অঞ্চলে তারা তাদের তৈরি আইন অনুযায়ী পরিচালনা করবে। কিন্তা তারা এখানে এখনো সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ধারণা করা হয়, আফগানিস্তানে থাকা আইএস খুবই শক্তিশালী। আদতে তেমনটি নয়। মার্কিন, ন্যাটো ও আফগান বাহিনীর প্রতিরোধের মুখে তারা দিন দিন আরো দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে আফগানিস্তানের থাকা আইএস-এর ঘাঁটির সংখ্যা অনেক কমে গেছে। এ সংখ্যা ১০টি থেকে কমে ৫টিতে এসে দাড়িয়েছে। এটা আইএস-এর জন্য বড় ধরনের ধাক্কা। আফগানিস্তানের সব মিলিয়ে ৩৯৮টি জেলা রয়েছে। আড়াই বছর চেষ্টা চালিয়ে তারা খুব ছোট্ট এলাকায় তাদের কালো পতাকা উড়াতে সক্ষম হয়েছে।

২০১৪ সালে আইএস নেতারা বিশ্বব্যাপী খিলাফত প্রতিষ্ঠার শপথ নিয়ে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় তারা সফলতার সঙ্গে কথিত খিলাফত প্রতিষ্ঠা করেছে। আর আফগানিস্তানে এমনিতে তালেবান জঙ্গিরা বেশ সক্রিয়। ১৯৯৯ সালে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে নেয় তালেবান। ২০০১ সালে থেকেই আফগানিস্তানে তালেবান বিরোধী লড়াই শুরু করে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনী। দেশটির ৪৩ জেলা পুরোপুরি তাদের নিয়ন্ত্রণে। আর ৫৬টিতে তার ভারো প্রভাব রয়েছে। কাজেই খুব সহজে সেখানে আরেকটি জঙ্গি দল সেখানে ঘাঁটি করতে পারবে না। এজন্যই আইএস আফগানিস্তান সফলতার মুখ দেখতে পারেনি। সূত্র: নিউজউইক।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.