175508

ধর্ষণের শিকার হওয়া নারীকে আর প্রশ্ন নয়

নূসরাত জাহান: ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর নারীকে নানা ধরনের বিতর্কিত পরিস্থিতি মধ্যে পড়তে হয়। বিচারের চাইতে গিয়েও তাকে বিপত্তিতে পড়তে হয় আইনজীবীদের প্রশ্ন শুনে। আইনজীবী এমন প্রশ্ন করে যা একজন ধর্ষণের শিকার নারীর পক্ষে দেওয়াটা অনেক কঠিন হয়ে যায়। ভরা আদালতে ধর্ষণের পুরো বিবরণ দিতে হয় তাকে। তাও হয়তো একবার নয়, বহুবার। এবার হয়তো সেই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছেন ব্রিটেনের নারীরা। ব্রিটিশ বিচারমন্ত্রী লিজ ট্রুস কারা ও আদালত সংক্রান্ত একটি বিল হাউস অব কমনসে উত্থাপন করেন। এতে বলা হয়, আদালতে শুনানির আগেই ধর্ষণের শিকার নারীরা আলাদা কক্ষে তাদের বয়ান রেকর্ডের সুযোগ পাবেন।

ফলে আদালতে ভরা মজলিসে দাঁড়িয়ে আর নির্যাতনের কথা বলতে হবে না ভুক্তভোগীকে। লিজ বলেছেন, নতুন আইনের ফলে নির্যানের শিকার নারীর ভয় অনেকটাই কমবে। এরই মধ্যে লিভারপুল, লিডস ও কিংকসটনের পরীক্ষামূলকভাবে এ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার হার অনেকটাই বেড়েছে। এতদিন এই বিশেষ সুযোগ দেওয়া হতো যৌন নির্যাতনের শিকার শিশুদের।

লিজ চাইছেন, এ বার থেকে তা যেন নির্যাতনের শিকার সব নারীকেই এ সুযোগ দেওয়া হয়। তাতে আরও বেশি করে অপরাধের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পাবেন তাঁরা।

প্লেইড সিমরুর এমপি লিজ স্যাভাইল রবার্টস একটি প্রাইভেট মেম্বার বিল উত্থাপন কেরছিলেন। ধর্ষণের শিকার নারীকে প্রশ্ন করা বন্ধের প্রস্তাব করা হয়েছিল। এরপর একই ধরনের বিল আনতে চলেছে ব্রিটিশ সরকারও।

লিজ বলেছেন, নকুন বিলে ধর্ষণের শিকার নারীরা জবাবন্দি নেওয়ার ক্ষেত্রে তাকে কতটুকু প্রশ্ন করা যাবে তার একটি সীমারেখাও টানা হয়েছে। কোনও প্রশ্ন আপত্তিকর মনে হলে বিচারক তা রেকর্ড থেকে বাদ দিতেও পারেন।

নতুন এই আইন নিয়ে আশান্বিত হচ্ছেন নির্যাতনের শিকার অনেক নারী ও তাদের পরিবার। এদেরই একজন সেরি লিন্ডন। ২০১৪ সালে তাকে অপহরণ করে ধর্ষণ করেছিল এক ট্যাক্সি চালক। সেই স্মুতি ভুলতে ২০ বছর ধরে কড়া ডোজের ঘুমের ওষুধ খাচ্ছেন সেরি।

তার মা বলেন, ‘সেরিকে বলা হয়েছিল, তাকে প্রমাণ দেখাতে হবে। আমি নিশ্চিত নতুন এই সংস্কার তাকে সাহায্য করবে।’
আইনজীবী সংগঠনের প্রধান জো গ্যাসকোয়ন বলেন, ‘ এ পদক্ষেপ একটু বেশিই বাড়াবাড়ি। শুনানি থেকে অব্যাহতির সুযোগ নিয়ে কাউকে ধর্ষণের দায়ে ফাঁসিয়ে দেওয়া যেতে পারে।’ বিল পাশ হলে সেপ্টেম্বর নাগাদ নতুন এই আইন কার্যকর হতে পারে।

সূত্র: ইন্ডিপেনডেন্ট।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.