175135

শিশুদের ডায়াবেটিসে খাওয়াদাওয়া

গাজী খায়রুল আলম: শুধু বড়রা নন, শিশুরাও আক্রান্ত হতে পারে ডায়াবেটিসে। শিশুদের এরকম ডায়াবেটিস (জুভেনাইল ডায়াবেটিস) ইনস্যুলিনের অভাবে শরীরে প্রোটিন-ফ্যাট-কার্বোহাইড্রেটের স্বাভাবিক বিপাকে ব্যাপক বিঘ্ন ঘটে। ইনস্যুলিনের অভাবে শরীরের কোষগুলোতে গ্লুকোজ ঢুকতে না পারায় কোষগুলো প্রোটিন ও ফ্যাটকে (বাস্তবে অ্যামাইনো অ্যাসিড ও ফ্যাটি অ্যাসিডকে) শক্তির উৎস হিসেবে কাজে লাগায়। শরীরে সঞ্চিত ফ্যাট ও শক্তি(প্রোটিন) খরচ হয়ে যায় দ্রুত লয়ে, রক্তে গ্লুকোজের প্রাচুর্য সত্ত্বেও শরীরের কোষগুলো ভুগতে শুরু করে গ্লুকোজ-দুর্ভিক্ষে।
মোট ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের অন্তত পাঁচ শতাংশই শিশুরা। জুভেনাইল ডায়াবেটিসের শিকার শিশুর শরীরে অগ্ন্যাশয় থেকে ইনস্যুলিনের ক্ষরণ প্রায় হয় না বললেই চলে। ইনস্যুলিনের এরকম অভাব বেশির ভাগ শিশুর ক্ষেত্রে আপাত-কারণহীন জন্মগত নির্দিষ্ট ত্রুটি এরকম অভাবের জন্য দায়ী।শিশুদের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবার পেছনে নির্দিষ্ট ভূমিকা রয়েছে জিনের। জন্মের পর মাম্পস, র‌্যুবেলা বা কক্সস্যাকি বি-ভাইরাসের মতো নির্দিষ্ট কিছু ভাইরাস সংক্রমণে প্যাংক্রিয়াসের ইনস্যুলিন-নিঃসরক কোষগুলো নষ্ট হয়ে শিশুর ডায়াবেটিসের শিকার হতে পারে। একই ঘটনা ঘটতে পারে মায়ের দুধের বদলে একটানা গরুর দুধ খাওয়া শিশুর শরীরে ওই দুধে থাকা ‘বোভাইন সেবাম অ্যালবুমিন’ প্রোটিনের প্রভাবে।
প্রথম দু-তিন মাস নির্দিষ্ট মাত্রায় ইনস্যুলিন পেলে ডায়াবেটিসের আক্রান্ত শিশুর শারীরিক অবস্থা স্থিতাবস্থায় ফিরে আসে বেশিরভাগ সময়। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত শিশুর খাবার দাবারেও আগের মতো কঠোর নিয়ন্ত্রণ আজকাল আর চালু নেই। ডায়াবেটিসের শিশুকে যা যা খাওয়ানো যাবে।
১। বাচ্চাকে কেক, পেস্ট্রি, চিনি, মিষ্ট, গুড়, মিছরি, লজেন্স বা মিষ্টি খাবার(যা খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায় হঠাৎ করে) দেওয়া চলবে না একবারেই।
২। শিশুর খবারদাবর বমেন হতে হবে যাতে শিশুর প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট শুধু নয়, ভিটামিন ও নানা ধরনের খনিজ লবণের কোনও অভাব না ঘটে।
৩। শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের পক্ষে জুরি খাদ্যোপাদান যেন খাবারদাবারে পরিমিত মাত্রায় থাকে। শিশু যেন সুস্থ জীবন যাপন করতে পারে।
৪। শিশুর খাওয়াদাওয়া সংক্রান্ত ব্যাপারে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে চলা জরুরি।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.