174654

বাংলা সিনেমার গানে প্রথম কোটি ভিউয়ের রেকর্ডে ইমন

|| শওকত আলী ইমন, কবির বকুল, ইমরান ও কনা গান রেকর্ডিয়ের ফাঁকে ||

বাংলা সিনেমার গানে প্রথম নতুন ইতিহাস গড়লেন প্রখ্যাত সঙ্গীত পরিচালক শওকত আলী ইমন। যার সুর ও সঙ্গীতায়োজনে সৃষ্টি বসগিরি ছবির একটি গান ইউটিউবে কোটিবার ভিউ হয়েছে। গানটির শিরোনাম ‌-আমিতো হয়েছি সারা, ভালোবাসায় দিশেহারা, বুঝিনা কিছু তুই ছাড়া— হয়েছে দিল দিল দিল তোকে ছাড়া বাঁচা মুশকিল। রোববার বিকাল ৫টা ১১ মিনিটের দিকে এই রেকর্ডের ঘরে পা রাখে গানটি। গান একটি হলেও রেকর্ড কিন্তু দুটি হয়েছে। প্রথমত ৬ মাসের মধ্যে কোটি ভিউয়ের ঘরে পৌছানো প্রথম বাংলা গান এটি। দ্বিতীয়ত বাংলা সিনেমার গানে প্রথম গান হিসেবে ইউটিউবে কোটিবার দেখেছেন ও শুনেছেন গান পিপাসু দর্শক-শ্রোতারা।
রেকর্ড করা দিল দিল দিল গানের কথা লিখেছেন আরেক প্রখ্যাত গীতিকবি কবির বকুল। আগেই বলেছি সুর ও সঙ্গীতায়োজন করেছেন শওকত আলী ইমন। আর গানে কণ্ঠ দিয়েছেন ইমরান ও দিলশাদ নাহার কনা। গান কোটি রেকর্ডের মাইলফলকে পৌছানোর কারণে বসগিরি ছবির প্রযোজক টপি খান আর পরিচালক শামীম আহমেদ রনিও এর ঐতিহাসিক অংশীদার হলেন। গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ইউটিউবে গানটি মুক্তি পায়।
দিল দিল গানের দৃশ্যে সাকিব খানের সঙ্গে নেচে গেয়ে নবাগত বুবলিও রীতিমতো ইতিহাসের পাতায় নিজেদের যুক্ত করলেন। ওই গানে অসাধরণ নেচে বুবলি দেখিয়ে দেন তিনি ঢালিউডে চলে যাওয়ার জন্য আসেননি। শাসন করতেই তার আগমন।

বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে নতুন একটা ঘটনা ঘটল। তবে সেটা যে আমার দিল দিল দিল গানের মাধ্যমে ঘটবে তা আমি গত কিছুদিন ধরে অনুধাবন করছিলাম। রোববার বিকালেই সেটাই ঘটল। অর্থাৎ ইউটিউবে গানটির ভিউ কোটির ঘরে নক করল। এটা অবশ্যই একটি আনন্দের খবর। ইউটিউবের ডিজিটাল যুগে বাংলা সিনেমার আর কোনও গান এতবার ভিউ হয়নি।
শওকত আলী ইমন বাংলা সিনেমায় সঙ্গীত পরিচালনা শুরু করেন রুটি ছবির মাধ্যমে। যে সিনেমাটি ১৯৯৬ সালে মুক্তি পায়। তখন ওই সিনেমাটি সুপারহিট ব্যবসা করে। গানও হিট হয়।ওই রুটি দিয়ে যাত্রার পর এ পর্যন্ত ৪শ সিনেমায় প্রায় আড়াই হাজার গান করেছেন তিনি। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরুস্কারও পেয়েছেন। শওকত আলী ইমনের ভাষায়, এনালগযুগে ইউটিউব ছিল না। থাকলে এভাবেই হয়তো রেকর্ড ছুঁতো। যাহোক আমার গান দিয়ে ইতিহাসের পাতা খোলা হল এটাই বড় কথা। এটা সবার দোয়া আর শিল্পী,কলা কুশলী সবার বেটার পারফরমেন্সের কারণেই হয়েছে।

‘শওকত আলী ইমন বলেন, তিনি আসলে ‘ভিউ জেনারেশনের’ মানুষ নন। বরাবরই চেষ্টা করেন সিনেমার গল্প ধরে ভালো গান তৈরি করতে। সে লক্ষ্য নিয়েই এতটা বছর কাজ করে আসছেন।

গত কোরবানির ঈদে বসগিরি ছবি মুক্তির পর দিল দিল দিল গানটির নানা প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন শওকত আলী ইমন। তিনি সৃজন মিউজিকের এ প্রতিবেদককে তখন বলেন, ঈদের সময় মানুষ একটু হৈ হুল্লোর আনন্দ ফুর্তির মধ্যে কাটাতে চাই। ঈদের সময় মানুষের একটু এন্টারটেইনমেন্ট হয় এ বিষয়টি মাথায় রেখে আমি ২টা গান করি বসগিরি ছবির জন্য। একটি হলো দিল দিল দিল আরেকটা পুরান ঢাকার ভাষায় করা। ২টা গানের মধ্যে দিল দিল দিল গানটির বেশি সাড়া পাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, ছবি মুক্তির পর পরিচালক আমাকে ফান করেই একদিন বললেন ইমন ভাই আপনার দিল দিল দিল গান শুনে আনন্দে দর্শকরা হলের চেয়ার ভেঙে ফেলেছেন। এজন্য আপনি দায়ী। আমি তাকে বললাম ৫টি গান আমাকে দিয়ে করালে চেয়ার কেন হলই ভেঙে ফেলবে দর্শকরা।
দিল দিল দিল গানটির তৈরির প্রেক্ষাপট সম্পর্কে শওকত আলী ইমন বলেন, এই গানের সুরটা হঠাৎ করেই হয়ে গেছে। মাত্র ৫ থেকে ৬ মিনিটেই সুরটা সম্পন্ন হয়। যেদিন সুরটা করা হয়, ওইদিন আমার স্টুডিও ভেলোসিটিতে উপস্থিত ছিলেন বসগিরি ছবির প্রয়োজক টপি খান এবং পরিচালক শামীম আহমেদ রনি। সেদিন ছবির গল্প শুনে আমি কবির বকুলকে বললাম ছোট্ট একটি মুখ লিখতে। ছবির সিকোয়েন্স শুনে বকুল ঠিক চারটা লাইন লিখে ফেললো–আমিতো হয়েছি সারা ভালোবাসায় দিশেহারা বুঝিনা কিছু তুই ছাড়া। এরপর কথা বলতে বলতেই ৫/৬ মিনিটের মধ্যে সুরারোপ সম্পন্ন করলাম। এক সুরেই প্রযোজক টপি খান বললেন আমি এ রকম গানই চাচ্ছিলাম। এরপর ধাপে ধাপে -দিল দিল- গানটির কাজ শেষ করলাম।
শওকত আলী ইমন বলেন, আমি দেখেছি ভালো সৃষ্টি চট করেই হয়ে যায়। আমার কয়েকটি গানের ক্ষেত্রে এ রকম হয়েছে।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.