174044

মানব ঢাল বানিয়ে বাঁচার চেষ্টা আইএস ‘র

নূসরাত জাহান: ১৮ মাস আগে তারিক হাসান ও তার পরিবারের সদস্যদের মানব ঢাল করেছিল ইসলামিক স্টেট (আইএস)। আইএসয়ের যোদ্ধারা মসুলের কাছাকাছি হাম্মাম আল-আলিল শহরের নিকটবর্তী তাদের গ্রামে আসে এবং লোকজনকে মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করে। যাতে করে সরকারি বাহিনী চাইলেই তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে না পারে। গ্রামে প্রবেশের পরই তারিককে তার স্ত্রী ও পাঁচ সন্তান নিয়ে গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে বলে। এরপর বাধ্য হয়ে হাসান তার পরিবার নিয়ে গ্রাম ছাড়ে। শুধু হাসান নয়, তার গ্রামের অনেকেই এভাবে প্রথমে মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে পরে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে আইএস। এই সেই জঙ্গিদের বিরুদ্ধেই এখন অভিযান চালাচ্ছে ইরাকি বাহিনী।

হাসান বলেন, ‘আইএস-এর সদস্য সবাইকে মালব ঢাল বানায় না। তারা বেছে বেছে তাদেরই ব্যবহার করে যাদের আত্মীয়-স্বজন পুলিশ, সেনাবাহিনী বা গোয়েন্দা সংস্থায় কাজ করেন। আমাকে মানব ঢাল করা হয়েছিল কারণ আমার এক জ্ঞাতি ভাই ইরাকের গোয়েন্দা সার্ভিসে কাজ করে। ইরাকি বাহিনীর বিমান হামলা থেকে বাঁচতে তারা পুলিশ ও সেনাবাহিনীতে কর্মরত লোকজনের স্বজনদের অপহরণও করে।’

আইএসয়ের দখলে থাকা মসুলের ও আশাপাশের এলাকা পুনরুদ্ধারে গত বছর অক্টোবর থেকে অভিযান শুরু করেছে ইরাকি বাহিনী। এজন্য ওই এলাকায় থেকে হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এরপর জানুয়ারি থেকে সেখানে চূড়ান্ত অভিযান শুরু হয়েছে।
আইএস জঙ্গিদের দখল হতে মসুল পুনরায় দখলের অভিযান শুরুর পর সবচেয়ে বড় সংঘর্ষ এখন চলছে শহরের পশ্চিম অংশে। ইরাকি বাহিনীর এক সামরিক কমান্ডার জানিয়েছেন, জানুয়ারিতে অভিযান শুরুর পর এখান সবচেয়ে প্রচণ্ড লড়াই চলছে। মসুলের এই প্রাচীন অংশের সরকারি ভবনগুলো থেকে তারা মাত্র কয়েকশ মিটার দূরে। সপ্তাহ দুয়েক আগে আইএসয়ের দখল থেকে মসুল দখলের অভিযান ব্যাপকভাবে শুরু করে ইরাকি বাহিনী। তাদের সহযোগিতা করছে মার্কিন বিমান বাহিনী। এই অভিযানে সবচেয়ে বড় প্রতিরোধের মুখে পড়েছে শহরটির পশ্চিম অংশে।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম জানিয়েছে, ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া মসুল পুনরুদ্ধারের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৪৫ হাজার সাধারণ মানুষ শহরটি ছেড়ে চলে গেছে। গত অক্টোবর থেকে অন্তত দুই লাখের বেশি মানুষ শহর ছেড়ে চলে গেছে। শরণার্থী শিবির খুলে বাস্তুচ্যুত এসব লোকজনকে আশ্রয় দেওবার চেষ্টা চালাচ্ছে বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা। তবে দিন দিন শরণার্থীল সংখ্যা যে হারে বাড়ছে তা সামলাতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সংস্থাগুলো। সূত্র: আল-জাজিরা।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.