শিবরাত্রির দিনে জেনে নিন শিবের দেখানো ১১ টি পথ যা উন্নত জীবন গড়ার দিশা
হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে ৩ টি প্রধান দেবতার একজন হলেন মহাদেব। তিনিই সৃষ্টির আদিকর্তা। তিনি যেমন সৃষ্টি করেন তেমনই তাঁর রুদ্রমুর্তি ছারখার করে দিতে পারে সমস্ত সৃষ্টিকে। আবার তিনিই হলেন ভোলেনাথ। যিনি সাংসারিক জগতের উর্দ্ধে। মহাদেবের চরিত্রের বিভিন্ন দিক আমরা হিন্দু শাস্ত্রে পেয়ে এসেছি। সেখান থেকে ১১টি পথ পাওয়া গেছে যা আমাদের জীবনকে উন্নত করারা ক্ষেত্রে সঠিক দিশা দেখায়।
১) মহাদেব হলেন অশুভ শক্তির বিনাশক। তিনি কখনওই অধর্ম মেনে নেন না। অশুভ শক্তিকে বিণাশ করে শুভ শক্তির সূচনা করেন। তেমনই আমাদেরও কখনওই অসত্য এবং অধর্ম মেনে নেওয়া উচিত নয়। সবসময় সত্যের পথেই থাকা উচিত। এবং অপরাধের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো উচিত।
২) আত্মনিয়ন্ত্রণই হল সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। অনিয়ন্ত্রিত মানষিকতা কখনওই কোনো সাফল্য এনে দিতে পারে না। উপরন্তু ব্যর্থতা ডেকে আনে। একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য এবং তার সঙ্গে হৃদয় এবং মনের সামঞ্জস্যই সাফল্য এনে দিতে পারে।
৩) শিবকে বলা হয় মহাযোগি। তিনি সর্বদা ধ্যানমগ্ন থাকেন। যখনই কিছু সাংঘাতিক ঘটনা ঘটে তখনই তাঁর ধ্যানভঙ্গ হয়। এর দ্বারা বোঝা যায় যুদ্ধ জিততে গেলে অথবা কোনো খারাপ অবস্থা থেকে বের হওয়ার জন্য সবসময় শান্ত থাকা এবং ধৈর্য রাখা উচিত। কোনো সমস্যা থেকে তখনই বেরিয়ে আসা যাবে যখন চিন্তা কম থাকবে।
৪) পার্থীব সুখ সবসময়ই ক্ষণস্থায়ী হয়। প্রকৃত সুখ তখনই লাভ হয় যা শ্রম এবং অভিজ্ঞতার দ্বারা সঞ্চয় করা যায়। শিব ছিলেন পার্থীব সুখের উর্দ্ধে। তাঁর অস্ত্র বলতে ছিল ত্রিশুল এবং ডমরু। আর বস্ত্র ছিল বাঘের ছাল। পার্থীব সুখের কিছু একটা হারিয়ে গেলেই আমরা আমাদের সুখ হারিয়ে ফেলি। তাই পার্থিব সুখ হল ক্ষণস্থায়ী্
৫) শিবকে বলা হয় নীলকন্ঠি। সমুদ্রমন্থনের সময় অমৃতে থাকা গরল তিনি গলায় ধারণ করেছিলেন। এবং সবার মধ্যে বিলিয়েছিলেন অমৃত। তাই আমাদেরও উচিত আমাদের আশেপাশে নেগেটিভিটি আছে তার সবকিছুকে পাশে রেখে পসিটিভিটির দিকে এগিয়ে যাওয়া।
৬) মহাদেব ছিলেন সমস্ত কামনা বাসনার উর্দ্ধে্ কোনো কিছুর প্রতি তীব্র কামনা ও বাসনা আমাদের ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়। বাসনা ঠেলে দেয় কামনার দিকে আর কামনা নিয়ে যায় ধ্বংসের দিকে।
৭) শিব হলেন অর্ধনারীশ্বর। অর্থাৎ অর্ধেকটা ছিলেন তিনি এবং আর অর্ধেকটা ছিলেন তাঁর স্ত্রী পার্বতি। পর্বতির প্রতি তার শ্রদ্ধা ও যত্ন ছিল অপরিসীম। পার্বতিই ছিলেন তাঁর শক্তি। এবং তিনি পার্বতিকে যথেষ্ট গুরুত্বও দিতেন। তাই নিজের স্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন এবং যত্নবাণ হওয়া উচিত।
৮) নিজের গর্ব ও অহঙ্কার মুক্ত করে মহত হওয়ার চেষ্টা করা উচিত। একজন মহত মানুষই পারেন তার অহংবোধকে ছেলে লক্ষ্য পৌঁছাতে এবং স্বপ্ন পূরণ করতে। শিব তাঁর সঙ্গে সবসময় ত্রিশুল রাখতেন কারন তিনি তাঁর অহংবোধকে নিয়ন্ত্রণ করতেন এই ত্রিশুল দ্বারাই।
৯) শিবের জটা থেকে বিচ্ছুরিত গঙ্গা হল একটি প্রতিকি চিহ্ন। যা অজ্ঞতার শেষকে চিহ্নিত করে। অর্থাৎ, নিজের কাজ সম্পর্কে সবসময় অবহিত থাকা উচিত। কোনো কিছুকে অস্বীকার করা কখনওই কোনো কাজের সহায়ক হতে পারে না।
১০) এই পৃথিবীর সব কিছুই ক্ষণস্থায়ী্ মহা যোগিরা কখনওই মোহমায়ায় জড়িয়ে থাকেন না। তাঁরা জানেন আজ যা আছে কাল তা নাও থাকতে পারে। তাই আমাদেরও উচিত মোহমায়া ত্যাগ করে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তনশীল হওয়া উচিত।
১১) শিবকে বলা হয় নটরাজ। তিনি হলেন নৃত্যের দেবতা। যদিও তা৭র তান্ডব নৃত্য পৃথিবী ধ্বংস করে দিতে পারে।