173256

জলে চলা ক্রেন, যন্ত্র আবিষ্কার করে বিষ্ময় সৃষ্টি ক্লাস ৯-এর তিন ছাত্রের

দেশ বিদেশের বিজ্ঞানীরা এই ধরণের আবিস্কার করে থাকেন। এমনকি আইআইটি বা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরাও এই ধরণের অনেক কিছুই আবিষ্কার করে থাকেন। তেল নয়, জল দিয়ে চলবে গাড়ি। এমন দাবি যদি কলকাতা থেকে বহু দূরের জেলার বাসিন্দা নবম শ্রেণির তিন ছাত্র করে, অনেকেই হয়তো হেসে তা উড়িয়ে দেবেন। কিন্তু ঘটনাটা সত্যি। উত্তর দিনাজপুরের হাতিয়া হাইস্কুলের তিন ছাত্র সৌরভ সরকার, আকাশ দাস এবং নন্দ দাস হাতেকলমে তা প্রমাণ করে দেখিয়েছেন। এমনকী, তিন ছাত্রের এই কৃতিত্ব জেলাশাসকের প্রশংসাও আদায় করে নিয়েছে। আপাতত আরও বড় মঞ্চে নিজেদের এই আবিষ্কারকে তুলে ধরতে মুখিয়ে রয়েছে দরিদ্র পরিবারের তিন ছাত্র।

ছেলেবেলা থেকেই এই তিন বন্ধুর ঘরে নিত্যদিনের অভাব। নুন আনতে পান্তা ফুরোয় অবস্থা। কাজের সন্ধানে কারো বাবা ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন। তার মধ্যেই এই তিন বন্ধু নিজেদের লক্ষ্যে অবিচল থেকেছে। ফ্রিজ, ফ্যানের পর এবার জল দিয়ে হাইড্রলিক জেসিবি মেশিনের মডেল তৈরি করে উত্তর দিনাজপুর জেলায় সাড়া ফেলে দিয়েছে সৌরভ এবং তার দুই বন্ধু আকাশ এবং নন্দ।
আগামি দিনে জল দিয়ে চালিত সৌরভের এই মডেল হাইড্রলিক জেসিবি রাজ্য প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। মায়ের আশা, সৌরভ জেলা ছাপিয়ে রাজ্যের মানুষের নয়নের মণি হয়ে উঠবে। সৌরভ, আকাশ, নন্দ ছোট থেকে একই স্কুলে পড়াশোনা করেছে। তখন থেকেই তাদের চেষ্টা ছিল কিছু আবিস্কার করার। ক্লাস এইটে উঠতেই তাদের কাজ শুরু। ডিজেল বা পেট্রোল নয়, জল দিয়েই চলবে ক্রেন বা জেসিবি। পাস্কেলের সূত্র ধরে জল দিয়ে তৈরি করে ফেলে মডেল। আর সেই মডেল গত রবিবার, রায়গঞ্জ শহরের মোহনবাটি হাইস্কুলে, উত্তর দিনাজপুর জেলা বিজ্ঞানমঞ্চের প্রদর্শনীতে প্রথম স্থান অধিকার করে। এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে তারা।

হাতিয়া হাইস্কুলের নবম শ্রেণির তিন পড়ুয়া জানিয়েছে, পৃথিবী জুড়ে জ্বালানির অভাবের কথা কম বেশি সকলের জানা। ডিজেল-সহ খনিজ তেলের ভাণ্ডার ক্রমশ ফুরিয়ে আসছে। সে কারণেই তারা জল দিয়ে হাইড্রলিক জেসিবি চালানোর ব্যবস্থা করেছে। একে তো এই হাইড্রোলিক ক্রেন বা জেসিবিতে কোনওরকম খনিজ তেল খরচ হওয়ার ভয় নেই, উপরন্তু এই হাইড্রলিক ক্রেন থেকে কোনও ধোঁয়াও বেরোবে না। ফলে পরিবেশও থাকবে সুরক্ষিত।

এই ভিডিওতে থাকল প্রমাণ

সূত্র- এবিপি আনন্দ

পাঠকের মতামত

Comments are closed.