171863

শিশুদের ভোলাতে মিথ্যা বলা থেকে বিরত থাকুন

শিশু মনে আবদার যখন তখন লেগেই থাকে। আর আবদার না মেটালেই ঠোঁট উল্টে কান্না তো আছেই। আর আবদার না মেটানোর অজুহাতে অনেকে মিথ্যা কথা বলেন। আর বিপদ এখানেই। শিশুদের আবদার না মেটানোর অজুহাতে মিথ্যা কথা বলার আগে জেনে নিন শিশুরা কিন্তু একেবারেই অবুঝ নয়। সে সমস্ত মিথ্যাই বুঝতে পারছে।

শিশুদের আবদারের ঠেলায় বড়দের লাইফ মাঝে মধ্যেই হেল হয়ে যায়। তাই অনেকেই বাঁচার জন্য মিথ্যার আশ্রয় নেন। চকোলেট দেব, খেলনা দেব, ঘোরাতে নিয়ে যাব…এটা দেব-ওটা করব, হাজারো প্রতিশ্রুতির বন্যা। সবটাই হয়ত মিথ্যে। ভাবছেন বাচ্চা বুঝবে না। কিন্তু সবচেয়ে বড় ভুল কিন্তু সেটাই।…

শিশুমনের সমীক্ষা, তা নিয়ে গবেষণায় জানা গিয়েছে, মাত্র আড়াই বছরের বাচ্চারাও বুঝতে পারে কখন কেউ মিথ্যে বলছে কিংবা যা ভাবছে তা বলছে না। আগে ভাবা হত, বছর চারেক না হলে বাচ্চাদের মধ্যে বোঝার বা মিথ্যে ধরার ক্ষমতা আসে না। কিন্তু গবেষণায় উঠে আসা নতুন তথ্য ভেঙে দিয়েছে পুরনো ধ্যানধারণা।

বাচ্চাদের মন বুঝতে, শিশুদের নিয়ে সমীক্ষা চালানো হয়। বয়স সবারই দু-আড়াই বছর।এজন্য সাইকোলজিস্টদের অস্ত্র ছিল, ফলস বিলিভ টাস্ক। বাচ্চাদের সামনে মূলত দেখানো হয়, দুটি বাক্সের মধ্যে একটিতে কোনও খেলনা রাখা হচ্ছে কারোর সামনে। সেই ব্যক্তি সরে গেলেই, জিনিসটি সরিয়ে অন্য বাক্সে রেখে দেওয়া হচ্ছে। এবার ওই ব্যক্তি ফিরে এলে, কোথায় খুঁজবে জিনিসটিকে?

শিশুমন বুঝতে ‘ফলস বিলিভ টেস্ট’ প্রক্রিয়াই খানিকটা সহজ করে দেন গবেষকরা। যে জিনিসটি লুকনো হচ্ছে তা কোথায় রাখা হচ্ছে, দেখানো হয়নি শিশুদের। শিশুদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় দুটি ছবি, যার মধ্যে একটি লুকনো জিনিসটির। তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, কোন জিনিসটিকে খুঁজতে হবে এবং তারপরের প্রশ্ন, কোথায়?

গবেষণায় উঠে এসেছে, লুকনো জিনিসটি নিয়ে কোনও ফলস বিলিভ বা মিথ্যে ধারণা নেই বাচ্চাদের মনে। জিনিসটি সম্পর্কে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তাদের জ্ঞানের নাড়ি টনটনে বাচ্চাদের এই ক্ষমতাই তাদের অন্যদের মিথ্যে বা প্রতারণা ধরতেও সাহায্য করে। জটিল কোনও জিনিস বাচ্চারা বুঝতে পারবে না, বা তাদের ভুল বোঝালে বুঝে নেবে একথা ভাবাটাই ভুল। বাচ্চাকে ভোলাতে যদি ভুরি ভুরি মিথ্যে বলাই আপনার অভ্যেস হয়, তাহলে কিন্তু এবার সাবধান। বুঝতেই পারছেন, মিথ্যে ধরতে ওস্তাদ এই খুদেরাও। তাই এসব জারিজুরি মোটেই চলবে না তাদের সামনে।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.