মহান আল্লাহ তা’আলা মানুষকে যে কারণে সৃষ্টি করেছেন….
মানুষকে বলা হয় আশরাফুল মাখলুকাত অথাৎ সৃষ্টির সেরা জীব। মানুষকে আল্লাহ এতটাই মর্যাদা দিয়েছেন যে, প্রথম মানব আদম (আ.)- কে সৃষ্টির পর ফেরেশতাদের নির্দেশ দেয়া হয়, তারা যেন তাকে সেজদা করে। সূত্র: উইকিপিডিয়া
মানুষের মর্যাদা সম্পর্কে পবিত্র কোরআনের সুরা বনি ইসরাইলের ৭০ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করা হয়েছে- ‘আমি আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি এবং জলে-স্থলে তাদের আরোহণ করিয়েছি, তাদেরকে পবিত্র বস্তু দিয়ে রিজিক দিয়েছি এবং আমার বহুসংখ্যক সৃষ্টির ওপর সুস্পষ্ট শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি। (এসব আমার দয়া ও অনুগ্রহ)।
আল্লাহর দৃষ্টিতে সব মানুষই সমান। তার কাছে তারাই বেশি সম্মানিত যারা পরহেজগার এবং আল্লাহভীরু। এক্ষেত্রে আর্থিক সামর্থ্য, ক্ষমতা বা অন্য কিছু বিবেচনায় আসবে না। মানব জাতির শ্রেষ্ঠত্বের বর্ণনা ও তার কারণ উল্লেখ করে সুরা হুজুরাতের ১৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে অধিক আল্লাহভীরু ব্যক্তিই আল্লাহর কাছে অধিক সম্মানিত।’
আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে তৈরি করেছেন। তাদের এ শ্রেষ্ঠত্ব যাতে উপলব্ধি করা যায়, সে জন্য মানুষকে সৌন্দর্যমন্ডিত করা হয়েছে।
পবিত্র কোরআনের সুরা তিন-এর ৪ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ মানব সন্তানের বাহ্যিক অবকাঠামো ও রূপ সৌন্দর্যের বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘আমি মানুষকে অতি সুন্দর অবয়বে সৃষ্টি করেছি।’
সুরা আলে ইমরানের ৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা আরও ইরশাদ করেন, ‘তিনিই তো ওই সত্তা যিনি তোমাদেরকে মায়েদের গর্ভে নিজের ইচ্ছামতো আকৃতি গঠন করেন। তিনি ব্যতীত আর কোনো উপাস্য নেই। তিনি পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।’
অন্য আয়াতে মানব সৃষ্টির উপাদান বর্ণনা করে আল্লাহ বলেন, ‘আমি মানুষকে গন্ধযুক্ত কর্দমের শুষ্ক ঠনঠনা মৃত্তিকা থেকে সৃষ্টি করেছি।’ সুরা হিজর-২৬।
মানুষের শারীরিক অবকাঠামো গঠন, বৃদ্ধি ও পরবর্তী পর্যায়ের বিশদ বর্ণনা দিয়ে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘ হে লোক সকল! মৃত্যুর পর পুনরুত্থান সম্পর্কে যদি তোমরা কোনো সন্দেহ পোষণ করে থাক (তাহলে ভেবে দেখ) আমি তোমাদেরকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছি, পরে শুক্রকীট থেকে, তারপর রক্তপিণ্ড থেকে, পরে মাংসপি- থেকে যা আকৃতি সম্পন্নও হয়, আবার আকৃতিবিহীনও; যেন তোমাদের কাছে প্রকৃত সত্য সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করি। আমি যেটিকে (শুক্রকীটকে) ইচ্ছা করি একটি নির্ধারিত সময় পর্যন্ত জরায়ুর মধ্যে স্থিতিশীল করে রাখি। পওে তোমাদেরকে শিশুরূপে ভূমিষ্ঠ করি। ফলে তোমরা তোমাদেও যৌবনে পদার্পণ করে থাক। আর তোমাদের মধ্যে কাউকে এর আগেই মৃত্যু দেওয়া হয়। আবার কাউকে নিকৃষ্টতম জীবন (বার্ধক্যের) দিকে প্রত্যাবর্তন করানো হয়, ফলে সে সবকিছু জেনে নেয়ার পরও কিছু জানে না। আপনি শুষ্ক জমিন দেখতে পাচ্ছেন। পরে যখনই আমি তার ওপর পানি বর্ষণ করি সহসাই তা সতেজ হয়ে ওঠে, ফুলে ওঠে এবং তা সব প্রকার সুদৃশ্য উদ্ভিদ উৎপাদন করতে শুরু কওে দেয়। সুরা হজ-৫।
আল্লাহ পবিত্র কোরআনে সুস্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, ইবাদত করার জন্যই তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন। আল আহজাবের ৪১ ও ৪২ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করা হয়েছে- ‘ হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর এবং সকাল-সন্ধ্যায় তার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর।’