সে*ক্স ফেরোমোন পদ্ধতিতে বিষমুক্ত সবজি চাষে স্বাবলম্বী কৃষক
টাঙ্গাইলের মধুপুরে জৈবিক উপায়ে বিষমুক্ত সবজি চাষ শুরু করেছে কৃষকরা। সেক্স ফেরোমন ফাঁদ, হলুদ আঠালো ফাঁদ ব্যবহার করে বিষমুক্ত সবজি চাষ করে লাভবান হচ্ছে কৃষক।
পরিবেশ ও মানগতমান সম্মত সবজি হওয়ায় স্থানীয় এলাকার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রয় হচ্ছে এ সবজি। দামও ভালো পাচ্ছে কৃষক। ফলে দিনদিন স্থানীয়দের মাঝে নিরাপদ বিষমুক্ত সবজি চাষে আগ্রহ বাড়ছে।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানান, মধুপুরের লাল মাটিতে আনারস কলাসহ অন্যান্য ফসল চাষ করা হতো। ধান পাট চাষ করে মূলধন ফিরে পাওয়ায়ই কঠিন ছিল। মধুপুরের উত্তর এলাকায় কুড়াগাছা গ্রামে প্রথম বানিজ্যিক ভাবে সবজি চাষ শুরু হয়। মধুপুরে এ বছর বেগুন ২৩০ হেক্টর, ডাটা ১১২ হেক্টর, চাল কুমড়া ৮০, মিষ্টি কুমড়া ৯০, ছ ৫০, ধুন্ধল ৭০, ঝিঙা ৫০, ঢেঁড়স ৭৬, পটল ৩৫, কাকরোল ২০, বরবটি ২৭, করলা ৮০, শসা ১২৫, কলমি শাক ৩০, পাট শাক ৬০, পুঁইশাক ৩৫ ও কচু ৩৩৫ হেক্টর সহ মোট ১৪ শ’ ৮৫ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে।
কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি হওয়ায় বিশ্বের ১৪ টি দেশে সবজি রপ্তানি করেছেন। করোনার সময় থেকে তা বন্ধ থাকলেও বর্তমানে খরচ বাদে বছরে তার আয় প্রায় কোটি টাকা।
তার মতো এই এলাকায় অনেক কৃষক এখন কম্পোস্ট, গোবর সার, জৈবিক ভাবে সেক্স ফেরোমন ফাঁদ, হলুদ আঠালো ফাঁদ ব্যবহার করে বিষমুক্ত সবজি চাষ করছেন। বিষমুক্ত সবজি হওয়ায় এর চাহিদা রয়েছে দেশব্যাপি। ফলে কৃষকরা দামও পাচ্ছে ভালো।
মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন রাসেল জানান, গড় এলাকার লাল মাটি আনারস, কলাসহ সবজি চাষের বিশেষ উপযোগি। এবার এ এলাকায় বেগুন, লাউ, শিম, চিচিঙ্গা, পটলসহ বিভিন্ন ১৪ শ’ ৮৫ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ হয়েছে। এ বছর বিষমুক্ত সবজি চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে বলে তিনি জানান।
টাঙ্গাইলের উপ পরিচালক আহসানুল বাসার জানান, টাঙ্গাইলে জৈবসার ও আইপিএমের মাধ্যমে সবজি চাষ করা হচ্ছে। এতে কোন প্রকার কীটনাশক ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই। বিষমুক্ত সবজি চাষ করে এলাকার কৃষকরা পরিবশে বান্ধব সবজি বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে। এর ফলে এলাকার কৃষকদের সুনাম ও এলাকার সবজির মান সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে।
কৃষি মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুবুল হক পাটোয়ারী জানান, মধুপুর গড় এলাকার বিষমুক্ত সবজির গুনগত মান ভালো থাকার কারণে দেশ ও বিদেশেও চাহিদা রয়েছে। যাতে এ এলাকার সবজি রপ্তানি করা যায় কৃষি মন্ত্রীর সহযোগিতায় আমরা কাজ করবো। তিনি সবজি ক্ষেত পরিদর্শন করে খুশি হয়েছেন বলে জানান।
করোনার সময় থেকে বিদেশে সবজি রপ্তানি বন্ধ থাকায় কিছুটা হতাশ কৃষকরা। সরকারের সহযোগিতায় খুব শীগ্রই আবারো বিদেশে সবজি রপ্তানি করতে পারবেন এমনিই আশা এ এলাকার কৃষকদের ।