275991

অধ্যক্ষ-কলেজশিক্ষিকার ফোন কল রেকর্ড ফাঁসে তোলপাড়!

পটুয়াখালীর একটি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ও সহকর্মীর পরকীয়াসহ অনৈতিক কর্মকাণ্ডে ছেদ পড়ায় বাদানুবাদের ৯ মিনিট ১৬ সেকেন্ডের একটি কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।  এতে সর্বত্র সমালোচনার ঝড় শুরু হয়েছে।  রোববার (৩১ জুলাই) বিকালে কল রেকর্ডটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।  কলেজ অধ্যক্ষ অবশ্য কলরেকর্ডটি তার নয় বলে দাবি করেছেন।

কল রেকর্ডটিতে শোনা যায়- কলেজ অধ্যক্ষ তার অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সহযোগী একই কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষিকাকে ক্ষিপ্ত কণ্ঠে বলছেন— আমার বাসায় গিয়ে আমার সঙ্গে যা করছো সেগুলো কি ভিডিও করে সবাইরে দেখাইছো? আর এখন বাহিরে সব বলে বেড়াচ্ছ।  তোরে আমি অনেক সুযোগ দিছি- এছাড়াও তোকে আমি অনেক কিছু দিয়েছি তুই এখন আর আমার ফোন ধরো না।  এখন তোর অনেক মানুষ হইছে।  তুই আর কখনো আমার সামনে আসবি না, আসলে তোর খবর আছে। আর আমি চাইলে তুই এতদিন কলেজে থাকতে পারতি না, তবে তুই কেমনে কলেজে থাকো তাও আমি দেখে নিব।

উল্লেখ্য, ওই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কলেজটিতে সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতি, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ জাল-জালিয়াতি ও নারী কেলেঙ্কারির অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।  একাধিক সহকর্মী শিক্ষিকাকে কুপ্রস্তাব দেওয়া, একান্তে ডেকে নিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়ানোর স্ক্যান্ডাল এখন সবার মুখে মুখে প্রচারিত হচ্ছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে এসব সুনির্দিষ্ট অভিযোগের একাধিক প্রমাণ ও হাতেনাতে ধরা পড়লেও কলেজ প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের নিকটাত্মীয়তার কারণে অবৈধ অর্থের বিনিময়ে তিনি (অধ্যক্ষ) ধামাচাপা দিয়ে বহাল তবিয়তে আছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

কলেজ প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য মো. জসিম উদ্দিন হাওলাদার অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষ একজন দুশ্চরিত্রের লোক।  তার নানা কুকীর্তিতে কলেজটির সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।  সহকর্মী নারী শিক্ষিকাদের উত্ত্যক্ত করা তার স্বভাবে পরিণত হয়েছে।  উনার কঠিন শাস্তি হওয়া দরকার।

ওই নারী শিক্ষকের স্বামী কল রেকর্ডের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অধ্যক্ষের দ্বারা আমি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত।  তার কুপরামর্শে আমার সংসার ভাঙার উপক্রম হয়েছে।  অধ্যক্ষের অনৈতিক চাপ ও নানা প্রলোভনে স্ত্রীর দ্বারা আমার বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা দিয়ে দূরত্বের সৃষ্টি করেছে। আমি এখনো চাই অধ্যক্ষের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক বাদ দিয়ে সে আমার সংসারে আসুক, আমি বিনাবাক্যে তাকে ঘরে তুলতে চাই।

অধ্যক্ষ কল রেকর্ডসহ আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটি প্রযুক্তির সৃষ্টি, তার বিরোধী একটি চক্র সামাজিকভাবে তাকে (অধ্যক্ষ) হেয় করতে বানানো অডিও রেকর্ডটি ছড়াচ্ছে।

ভাইরাল হওয়া কল-রেকর্ডের পুরুষকণ্ঠটি তার কিনা- প্রশ্নের জবাবে বলেন, এটি তার কণ্ঠ নয়, কলেজের কিছু দুষ্টচক্র আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে এটি তৈরি করে ইন্টারনেটে ছড়িয়েছে।

দুমকি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আল ইমরান বলেন, কল রেকর্ডের বিষয়টি আমি শুনেছি।  ওই কলেজের বিষয়ে বর্তমানে তদন্ত চলছে। আমরা তদন্ত রিপোর্টে বিষয়টি উল্লেখ করে জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠাব।

 

পাঠকের মতামত

Comments are closed.