275155

স্বামীর নির্যাতনে যেভাবে কেটেছে শবনম ফারিয়ার দিন-রাত

মানুষের জীবন নদীর মতো।  কখনও জোয়ার, কখনও ভাটা।  আমাদের জীবনে কিছু মানুষ আসে, কেউ কেউ স্থায়ী হয়, কেউ কেউ কিছু কারণে স্থায়িত্ব ধরে রাখতে পারে না।  ছোটপর্দার অভিনেত্রী শবনম ফারিয়ার জীবনেও তেমনটিই ঘটেছে।

২০১৫ সালে ফেসবুকের মাধ্যমে হারুন অর রশিদ অপুর সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় শবনম ফারিয়ার।  এরপর ফেসবুকে কথা বলতে বলতে তাদের দুজনের মধ্যে বন্ধুত্বের বন্ধন মজবুত হয়।  তিন বছর ধরে চলে তাদের বন্ধুত্ব।  এক পর্যায়ে দুজন পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা অনুভব করেন।  ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় তাদের।  কিন্তু সেই সংসার বেশিদিন টেকেনি।  প্রায় দুই বছরের বৈবাহিক জীবনের অবসান ঘটিয়ে বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন তারা।

বিচ্ছেদের পর থেকে একাই রয়েছেন শবনম ফারিয়া।  অভিনয়ের পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়াতেও বেশ সরব তিনি।  বিভিন্ন সময় নিজের ছবি কিংবা স্ট্যাটাসে বিভিন্ন বার্তা দিয়ে থাকেন এই অভিনেত্রী।  সেই ধারাবাহিকতায় গেল বুধবার (১৫ আগস্ট) মধ্যরাতে এক স্ট্যাটাসে স্বামীর নির্যাতনের বিষয়ে মুখ খুলেছেন ফারিয়া।

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ইলমার মৃত্যু প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই ফারিয়া তার সাবেক স্বামীর নির্যাতনের বিষয়ে মুখ খুললেন।  ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘মৃত মেয়েটার ছবি দেখার পর বার বার আমি দেড়-দুই বছর পেছনে ফিরে যাচ্ছিলাম। মনে পড়ছে কীভাবে আমি দেবী সিনেমার পুরো প্রোমোশন ভাঙা হাত নিয়ে করেছি, যখন কেউ জানতে চেয়েছে কী হয়েছে, বলেছিলাম সিঁড়ি থেকে পড়ে ব্যথা পেয়েছি!

আমার সাহস ছিল না সবাইকে বলার যে কীভাবে ব্যথা পেয়েছি!  কারণ আমি জানতাম এই মানুষটার সাথেই থাকতে হবে, নইলে মানুষ কী বলবে!  আমার মা সমাজে মুখ দেখাবে কীভাবে!  আমার দুই বোন যে স্বপ্ন নিয়ে এত আয়োজনের প্ল্যান করছে তাদের কী জবাব দেব!  কাবিনের তিন মাস না যেতেই এত কিছু!  নিশ্চয়ই সমস্যা আমারই!  আমি এইটা ভেবে দিনের পর দিন জানালা দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে, রাতের পর রাত নির্ঘুম কাটিয়েছি!  বারবার ভেবেছি কিছু হলে সবাই আমাকেই খারাপ বলবে!

কিন্তু আমি খুব সৌভাগ্যবান যে আমার মা আমার সবচেয়ে বড় সাপোর্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে!  সাহস দিয়েছে! বুঝিয়েছে মানুষ কী বলে তার চেয়ে নিজের ভালো থাকা আরও অনেক জরুরি!  জোর করে বিয়ে টিকিয়ে রাখার চেয়ে বেঁচে থাকা আরও জরুরি!!! #say_no_to_domestic_violance’

বাংলাদেশ টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত কণ্ঠশিল্পী লোপা হোসাইনের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া একটি পোস্ট শেয়ার করে কথাগুলো লিখেছেন শবনম ফারিয়া।  কণ্ঠশিল্পী লোপা হোসাইন নিজের পোস্টে লিখেন, ‘সহ্য করতে না পেরে ডিভোর্স দিলে কত না গালি খেত ইলমা মেয়েটা। সহ্য করতে করতে মরে গেল বলেই না এখন আমরা মায়াকান্না কাঁদছি… 

এ দেশের বাবা-মায়েরা সমাজে মান-ইজ্জত বাঁচাতে মেয়েদের এমনভাবে ব্রেইনওয়াশ অথবা ব্ল্যাকমেইল করে যে ডিভোর্স দিয়ে লাইফের রি-স্টার্ট বাটন চাপার চেয়ে পাওয়ার অব বাটন চেপে দেওয়াই বেশি সহজ মনে হয়।  আর তার আগেই যদি স্বামী, শ্বশুরবাড়ির লোকেরা মেরে ফেলে, তাহলে তো কথাই নেই…এসব ঘটনা দেখলে নিজের অজান্তেই নিজের অতীতে ফিরে যাই…।’

 

পাঠকের মতামত

Comments are closed.