275031

ইভ্যালি থেকে গ্রাহকরা যে প্রক্রিয়ায় ফেরত পেতে পারেন অর্থ

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি অল্প সময়ে আলোচনায় আসে দেশজুড়ে।  তবে সেই আলোচনা বেশিদিন সুনামের সঙ্গে ধরে রাখতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি।  গ্রাহকদের পুঁজি দিয়েই ‘সাইক্লোন’ (ঘূর্ণিঝড়), আর্থকুয়েক’ (ভূমিকম্প) নামে ১০০ থেকে ১৫০ শতাংশ ক্যাশব্যাকের লোভনীয় অফার দিয়েছিল ইভ্যালি।  ব্যবসার এই কৌশলে মানুষের মাঝে উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়।  তবে সেই উদ্দীপনা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি।  এখন ইভ্যালির কাছে পাওনা টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে গ্রাহকদের মাঝে হতাশা তৈরি হয়েছে।

শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) প্রতারণা ও অর্থ-আত্মসাত মামলায় ইভ্যালির সিইও মো. রাসেল এবং তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

ইভ্যালির গ্রাহক ও মার্চেন্টদের পাওনা ফেরতের বিষয়ে ডিজিটাল ই-কমার্স সেল প্রধান ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. হাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ইভ্যালির গ্রাহকের পাওনা পরিশোধের দায়দায়িত্ব মন্ত্রণালয় নেবে না। তবে গ্রাহকের প্রতি মন্ত্রণালয়ের সহানুভূতি রয়েছে।

তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় চেষ্টা করবে নিরপেক্ষ কোনো থার্ড পার্টি অডিটর প্রতিষ্ঠান দিয়ে ইভ্যালির ওপর নিরীক্ষা চালিয়ে প্রকৃত আর্থিক চিত্র বের করে আনতে।  এতে সম্পদ বা অর্থের হদিস মেলে সেটি গ্রাহকদের মঙ্গল, যা গ্রাহকদের পাওনা ফেরত পাওয়ার ক্ষেত্রে কাজে আসবে।

মো. হাফিজুর রহমান বলেন, থার্ড পার্টি অডিটর নিয়োগের প্রক্রিয়াটিও সরাসরি মন্ত্রণালয়ের হাতে নেই।   এর জন্য মন্ত্রণালয়কে আইনি দিক পর্যালোচনা করে দেখতে হবে।  আইনে সেটি অনুমোদন না করলে আদালতের অনুমতি নিয়ে করতে হবে।  আমরা এর জন্য আদালতের অনুমতি নেয়ার চেষ্টা করব।

ইভ্যালির গ্রাহকদের পাওনা ফেরতের সম্ভাবনা খুবই কম বলে মনে করেন শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘আজকের ডিল’-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম ফাহিম মাশরুর।  তিনি বলেন, ওই টাকা আগেই হাওয়া হয়ে গেছে।  এখন তদন্ত করতে হবে ইভ্যালির মালিকপক্ষ কোথাও টাকা সরিয়েছে কিনা।

ইভ্যালির ‘সম্পদের চেয়ে ছয় গুণ বেশি দেনা’ বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে তথ্য উঠে আসে।  প্রতিবেদনে উঠে আসে ইভ্যালির মোট দায় ৪০৭ কোটি টাকা।  প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম নিয়েছে ২১৪ কোটি টাকা, আর মার্চেন্টদের কাছ থেকে বাকিতে পণ্য নিয়েছে ১৯০ কোটি টাকার।  স্বাভাবিক নিয়মে প্রতিষ্ঠানটির কাছে কমপক্ষে ৪০৪ কোটি টাকার চলতি সম্পদ থাকার কথা।  কিন্তু সম্পদ আছে মাত্র ৬৫ কোটি টাকার।

এছাড়া গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছ থেকে গত ১৪ মার্চ পর্যন্ত ইভ্যালির নেওয়া অগ্রিম ৩৩৯ কোটি টাকার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।  এ টাকা আত্মসাৎ বা অবৈধভাবে অন্যত্র সরিয়ে ফেলার আশঙ্কা রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।।

 

পাঠকের মতামত

Comments are closed.