274643

দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে রাস্তা বানিয়ে চমক দেখিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী

তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে সবচাইতে দর্শনার্থীদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে পাহাড়ি জনপদ খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা।  পার্বত্যঞ্চলে আসা ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের কাছে বেশ পছন্দ রাঙ্গামাটির সাজেক।  তবে সেখানে যেতে ব্যবহার করতে হচ্ছে খাগড়াছড়ি সড়ক।

খাগড়াছড়ি সদর হয়ে দীঘিনালা উপজেলা পাড়ি দিয়ে রাঙ্গামাটির জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক যেতে হয়।  এছাড়াও শান্তিপুর অরণ্য কুটির, মানিকছড়ির মং রাজবাড়ি, আলুটিলা গুহা ও ঝর্না, দেবতা পুকুর, মায়াবিনী লেক, জেলা পরিষদ পার্ক ইত্যাদি বর্তমান দেশের ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে খাগড়াছড়িতে।

এদিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি থেকে শুরু করে এ অঞ্চল কেন্দ্রিক পর্যটন ব্যবস্থাকে ত্বরান্বিত করেছে খাগড়াছড়ি জেলা।  পাহাড়ের অন্য দুই জেলার চেয়ে অনেকটা উন্নত খাগড়াছড়ির সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা।  যা কাজে লাগিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে পর্যটন নির্ভর অর্থনীতিতে ঘুরে দাঁড়িয়েছে পাহাড়ি এ জনপদ।  রাঙ্গামাটির ভৌগলিক অবস্থানগত বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক পর্যটন কেন্দ্রের একচেটিয়া ব্যবসা এ জেলা থেকে অনেকাংশ নিয়ন্ত্রিত হয়।  যার বড় একটা সুযোগ করে দিয়েছে খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা।

ইতোমধ্যে খাগড়াছড়ির আরও একটি নয়নাভিরাম সড়ক বাড়তি আনন্দের মাত্রা যোগ করতে যাচ্ছে দর্শনার্থীদের কাছে।  আর রাঙ্গামাটি জেলা সদর ও নানিয়ারচর উপজেলার সাথে নতুন মাত্রায় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন করতে যাচ্ছে এ সড়কটি।  দুর্গম এ পাহাড়ি জনপদের পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত মানুষগুলো যা কোনোদিন স্বপ্নেও ভাবেনি তা বাস্তবে পরিণত করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।  অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার ফলে পায়ে হেঁটে এক সময়ে মহালছড়ি ও সিন্দুকছড়ি হয়ে জালিয়াপাড়া ও গুইমারা বাজারে যেতে হতো।  সময়ও লাগত অনেক।  কিন্তু বর্তমানে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার ফলে বদলে গেছে এ অঞ্চলের চিত্র।

জানা গেছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার্স কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের তত্ত্বাবধানে ২০ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলার জালিয়াপাড়া থেকে মহালছড়ি উপজেলার ২৪ মাইল পর্যন্ত দৃষ্টিনন্দন এ সড়কটি নির্মাণ করেছে।  এ সড়ক ব্যবহার করে ঢাকা থেকে রামগড় জালিয়াপাড়া হয়ে মহালছড়ির ২৪ মাইল এলাকা দিয়ে চালু হবে রাঙ্গামাটির সরাসরি সড়ক যোগাযোগ।  জালিয়াপাড়া-মহালছড়ি পর্যন্ত মাত্র ২৪ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের ফলে ঢাকা-রাঙ্গামাটির দূরত্ব কমবে ৭০ কিলোমিটার।

আর সময়ও বাঁচবে প্রায় ৩ ঘন্টা।  সড়ক যোগাযোগ ছাড়াও রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর, খাগড়াছড়ির মহালছড়ি, গুইমারা ও লক্ষীছড়ি উপজেলার কৃষি অর্থনীতিতে গতি আনবে এ সড়ক বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।  ইতোমধ্যে পাহাড়ের কোল ঘেঁষে আঁকাবাঁকা সড়কের ভৌগলিক অবস্থান দেখতে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসছে পর্যটকরা।  বিশেষ করে মোটরসাইকেল যোগে নয়নাভিরাম সড়ক দেখতে সকাল থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.