274603

রুপালি পর্দার তিন খল অভিনেত্রী বর্তমান দিনকাল

বাংলা সিনেমায় খল চরিত্রে একচ্ছত্র আধিপত্য সব সময় পুরুষ অভিনেতাদের।  আর নারী চরিত্রে যেসব শিল্পী অভিনয় করতেন তারা সব সময় নায়িকা, মা-ভাবী চরিত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতেন।  তবে খল নারী চরিত্রে রুপালি পর্দায় নিজেদের যারা সফলভাবে মেলে ধরেছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- প্রয়াত মায়া হাজারীকা, রীনা আকরাম, রানী সরকার, রওশন জামিল ও সুমিতা দেবী।  এসব গুণী শিল্পীর পথ ধরেই পরবর্তীতে সিনেমায় নিজেদের মেলে ধরেন দুলারী, রীনা খান ও শবনম পারভীন। নেগেটিভ চরিত্রে এই তিন নারী শিল্পী সিনে দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নেন।  অবশ্য এই অভিনেত্রীদের চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়েছিল নায়িকা হিসেবে।  কিন্তু দর্শকরা তাদের গ্রহণ করেনি। সিনেমায় তাদের সাফল্য এসেছে নেগেটিভ চরিত্রে কাজ করে।

এখন কেমন আছেন, কোথায় আছেন, কি করছেন এই তিন খল অভিনেত্রী?  দুলারী নেগেটিভ চরিত্রে নিজেকে মেলে ধরেন অসংখ্য ছবিতে।  তার পর্দায় উপস্থিতি হল ভর্তি দর্শকদের চোখে মুখে ঘৃণার প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠতো।  অনেক দর্শক তার অভিনয় দেখে হলের ভেতরেই গালি দিতেন।  ভাবতেন সত্যিই বুঝি তিনি ব্যক্তি জীবনে খুবই নিষ্ঠুর।  দুলারী এ প্রসঙ্গে বলেন, কি যে যন্ত্রণা হতো যখন কোনো অনুষ্ঠানে, মার্কেটে যেতাম!  আমার প্রতি যে মানুষের চাহনি-মনে হতো এই বুঝি মারবে।  কেন আমি বাংলার বউ, বিদ্রোহ বধূতে মৌসুমীকে অত্যাচার করেছি, কেন তার মুখে বিষ ঢেলে দিয়েছি।  তারা ভাবতো সত্যি সত্যি আমি এইসব করেছি।  করোনাকালীন এই সময় কীভাবে সময় পার করছেন? এ অভিনেত্রী বলেন, বিপদের মধ্যে যাচ্ছি।  গত দুই বছর ঘরেই বসে আছি।  আয় রোজগার বন্ধ। কিন্তু খরচ তো থেমে নেই।  গত দু’বছরে ডিপজলের ‘যেমন বউ তেমন জামাই’, ‘বাংলার হারকিউলিস’, ‘মানুষ কেন অমানুষ’ ছবিগুলো করেছি।  আর নাগরিক টিভিতে ধারাবাহিক ‘হৃদয়ের আঙ্গিনা’য় অভিনয় করছি। একজন শিল্পীর জন্য দীর্ঘ সময় কাজে না থাকা কি যে কষ্টের- বোঝানো যাবে না।  এটাও সত্যি করোনার কাছে আমরা সবাই অসহায়। 

সিনেমায় আসার আগে রীনা খানের পরিচিতি ছিল জাতীয় সাইক্লিস্ট হিসেবে।  খেলার জগৎ থেকে রুপালি পর্দায় তার আগমন।  এখন কেমন আছেন এই খল অভিনেত্রী? উত্তরে রীনা খান বলেন, ভালো থাকি কীভাবে? দীর্ঘ সময় ঘরে অলস সময় পার করছি।  একজন শিল্পীর জন্য খুবই অস্বস্তিকর।  মানসিকভাবে, আর্থিকভাবে সব দিক দিয়েই।  করোনাকালীন সময় কি ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছেন?  তিনি বলেন, হ্যাঁ।  ডিপজল ভাইয়ের ‘যেমন বউ তেমন জামাই’ ছবিতে অভিনয় করেছি।  তবে শেষ কবে শুটিংয়ের জন্য গিয়েছি মনে নেই।  ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা অনেক আগে থেকেই খারাপের দিকে যাচ্ছিল।  করোনা আরও করুণ অবস্থা করে দিয়েছে। 

রুপালি পর্দার আরেক খল অভিনেত্রী শবনম পারভীন।  তিনিও ভালো নেই তেমন।  এ অভিনেত্রী বলেন, করোনা সব ওলট-পালট করে দিয়েছে।  শুধু কি আর্থিক সংকটে ভুগছি, এই বয়সে মানসিক শক্তিও কমে যাচ্ছে।  একজন শিল্পীর ক্ষুধা হলো অভিনয়।  হয়তো টাকা অনেকের কাছে মুখ্য বিষয় কিন্তু একজন প্রকৃত শিল্পী অভিনয়েই বেঁচে থাকার প্রেরণা পায়।  কিন্তু কাজ না থাকায় এখন অলস সময় পার করতে হচ্ছে।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.