272621

বিচ্ছেদ হলেও, আমার মেয়ের কাছে ওর বাবার সমালোচনা করি না, শ্রীলেখা মিত্র

 

 

 

আমার মেয়ে নিজের ইচ্ছেমতো আমার সঙ্গে থাকে, আবার ওর বাবার সঙ্গেও থাকে।  শুধু তাই নয়, আমাদের ৩ জনের যখন একসঙ্গে কাটানোর কথা, সেই সময়গুলো আমরা সেখানে আর কাউকে রাখি না।  এ ভাবেই এখনও আমার মেয়ের জীবনটা স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি।

নারী দিবসে এক মায়ের কথা লিখতে বসেছি এবং এই মা’টি আমি নিজেই।  কিন্তু প্রথমেই বলে রাখা দরকার, আমি আমার মেয়েকে একা মানুষ করি না। বাবা-মায়ের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ায় বহু সন্তানকেই তার ফল ভুগতে হয়।  তাই প্রথম থেকেই আমরা ঠিক করে নিয়েছিলাম, এমনটা যেন আমাদের মেয়ের ক্ষেত্রে না হয়।

এ বার আসি আমার কথায়।  নিজের কাজ, ব্যস্ততা, পেশাদার জীবন— এর মাঝে কী করে মেয়ের দায়িত্ব মা হিসেবে আমি সামলালাম? প্রথমেই বলা দরকার, মেয়ে একটু বড় হওয়ার আগে পর্যন্ত আমি কাজ থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখেছিলাম। তখন শুধু ওকেই সময় দিতাম।  ও বড় হওয়ার পরে কাজে ফিরেছি। কিন্তু তার মধ্যেও ওকে যতটা সময় দেওয়ার, সেটা দিই।

এর পাশাপাশি কতগুলো নিয়ম মেনে চলি।  আমি মনে করি, একটি শিশুর কাছে তার বাবা আর মা দু’জনেরই গুরুত্ব আছে।  তাই কখনও ওর বাবার নামে ওর কাছে নিন্দা করি না।  হয়তো মজা করে কখনও বললাম, ‘একদম তোর বাবার মতো হয়েছিস!’ কিন্তু সেটাও ঠাট্টার ছলেই বলা।  ও যখন নিজের বাবার কাছে থাকতে চায়, আমি ওকে বাধাও দিই না।

নারী দিবস দিনটা আমার কাছে মহিলাদের স্বনির্ভরতার প্রতীক।  আমার মেয়েকে নিয়ে সুবিধা একটাই।  ও ছোট থেকে খুবই স্বনির্ভর।  ওকে নিয়ে আমায় খুব একটা ভাবতে হয়নি।  নিজের মতো করে সব কিছু শিখে নিয়েছে। কিন্তু সব মেয়ে ওর মতো জীবন পায় না।  ওর মতো স্বনির্ভরও সবাই হয় না।

নারী দিবসে তাই একটাই কথা বলব বাকিদের।  স্বামী-স্ত্রীর বনিবনা অনেক সময় হয় না।  তাতে বিবাহ বিচ্ছেদ হতেই পারে।  কিন্তু সন্তানদের নিয়ে কোনও রাজনীতি করবেন না।  তাতে ওদের ভবিষ্যৎটাই নষ্ট হবে।

 

পাঠকের মতামত

Comments are closed.