271991

কোরিয়ান নারীরা ব্যস্ত নাকের সার্জারি করাতে, নেপথ্যে যে রহস্য

সারাবিশ্ব এক মহামারির তাণ্ডবে প্রায় লণ্ডভণ্ড। এখনো সংক্রমণ থেকে বাঁচতে বিভিন্ন দেশ রয়েছে লকডাউনে। মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব আর বারবার হাত ধোয়ার অভ্যাস এখনো রয়েছে সবার। তবে মাস্ক পরতে পরতে চেহারার সৌন্দর্য হারিয়েছেন অনেকে। প্রায় বছরখানিকের বেশি সময় ধরে সবাই মাস্ক পড়ছেন। তাও আবার কয়েক লেয়ারে। এতে করে এটি হয়ে গেছে নিত্যদিনের পরিধেয় উপকরণ।

অন্যদিকে মহামারি ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে অনেকটা সফল দক্ষিণ কোরিয়া। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতেও শুরু করেছে তারা। তাই অচিরেই হয়তো আর মাস্ক পরতে হবে না। তারই প্রস্তুতি হিসেবে দীর্ঘ মাস্ক অভ্যাসে শ্রী হারানো নাক সুন্দর করতে কসমেটিক সার্জারি শুরু করে দিয়েছেন সে দেশের অনেক নারী।

২০ বছর বয়সী রিউ হান-না একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তিনি গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি নাকে কসমেটিক সার্জারি করিয়েছেন। তার মনে হচ্ছিল, যদি তখনই না করেন, তা হলে হয়তো আর সুযোগ পাবেন না। কারণ এরপর মাস্ক খুলে ফেলার সময় হয়ে যাবে।

মাস্ক পরে নাকের সৌন্দর্য কমে যাওয়ায় সার্জারির প্রধান কারণ

মাস্ক পরে নাকের সৌন্দর্য কমে যাওয়ায় সার্জারির প্রধান কারণ

রিউ নামের একজন জানান, নাকের কাজটা সে অনেক আগেই করিয়ে ফেলতে চেয়েছিলেন। তবে হয়ে ওঠেনি নানা কারণে। এবার ২০২১ সালে ভ্যাকসিন চলে এলে তো সবাই মাস্ক খুলে ফেলবে, সেই ভাবনা থেকে আগেই নাকের শ্রী ফিরিয়ে এনেছেন তিনি। এজন্য রিউয়েরখরচ করতে হয়েছে প্রায় চার হাজার মার্কিন ডলার বা সোয়া তিন লাখ টাকা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন,সার্জারির পর নাকে কিছুটা ক্ষত ও ফোলা থাকবে। তবে সবাই তো এখন মাস্ক পরেই থাকবে, তাই কেউ বুঝতেই পারবে না।   রিউর মতো করে ভাবেন দক্ষিণ কোরিয়ার অনেকেই। তাই ২০২০ সালে কসমেটিক সার্জারি সংখ্যাও বেড়েছে। এ বছর আরও বাড়তে পারে।
বিশ্বের কসমেটিক সার্জারির রাজধানী হিসেবে পরিচিত দেশটি ২০২০ সালে ১০.৭ বিলিয়ন ডলার (প্রায় সাড়ে আট হাজার কোটি টাকা) আয় করেছে এ খাত থেকে, যা আগের বছরের তুলনায় ৯.২ ভাগ বেশি। ২০২১ সালে তা ১১.৮ বিলিয়ন ডলার (প্রায় সাড়ে নয় হাজার কোটি টাকা) ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে কসমেটিক সার্জারি প্ল্যাটফর্ম গ্যাংনাম উননি।

নারীরাই বেশি সার্জারি করছেন নাকের

নারীরাই বেশি সার্জারি করছেন নাকের

পার্ক চিওল-উ বলেন, শরীরের বাইরের অঙ্গ সম্পর্কে, বিশেষ করে চোখ, ভ্রু, নাক ও কপালে সার্জারি বা সাধারণ চিকিৎসা-সংক্রান্ত জিজ্ঞাসা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে।

তিনি উআহইন নামের একটি প্লাস্টিক সার্জারি ক্লিনিকের সার্জন। রিউর-র নাকের প্লাস্টিক সার্জারি তিনিই করেছেন। শিন শ্যাং-হো নামের আরেক সার্জন বলেন, অনেকে করোনার সময় যে প্রণোদনার টাকা পেয়েছেন তা এসব সার্জারিতে ব্যয় করছেন। ‘মনে হচ্ছে যেন সবাই বদলা নিচ্ছেন। খদ্দেররা কসমেটিক সার্জারি করে যেন করোনার মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে চাইছেন,’ বলেন তিনি। গ্যাংনাম উনি বলছে, গত বছর তাদের সেবা ব্যবহারকারীর সংখ্যা আগের বছরের চেয়ে ৬৩% বেড়েছে। প্রায় ১০ লাখ লোক শুধু কাউন্সেলিং সেবাই নিয়েছেন, যা আগের বছরের দ্বিগুণ।

সূত্র: ডয়চে ভেলে

পাঠকের মতামত

Comments are closed.