271542

সেবাসিয়াস সিস্ট কী কেন হয়, এর চিকিৎসা

মানুষের শরীরের বাইরের আবারণ হচ্ছে ত্বক বা চামড়া। যা আমাদের ভেতরের দরকারি অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে বাইরের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। ত্বকই হচ্ছে আমাদের শরীরের বড় অঙ্গ বা অর্গান।

এই ত্বকের তারুণ্য সৌন্দর্য ও ঔজ্জ্বল্য যে কাউকে দীপ্ত কিংবা কমনীয় রমনীয় করে দিতে পারে। তাই নিখুঁত নির্ভাজ ও টান টান ত্বক সবার কাম্য। এই ত্বকের ভেতর নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে, যার মধ্যে সেবাসিয়াস সিস্ট বা ত্বকের টিউমার হচ্ছে একটি।

এটি ছোট মটর দানার মতো থেকে বড় কুলের আকার ধারণ করতে পারে। সাধারণত মুখমন্ডল ও শরীরে উপরিভাগে বেশি দেখা দেয়। ওই সিস্ট বা টিউমার যেখানটায় হয়, সে অংশে বেশ ফোলা থাকে এবং ওপরের চামড়ার মধ্যে একটি বিন্দুর মতো কালো মুখ দেখা যেতে পারে।

এই সিস্টের ভেতর সাদা পনির ও চর্বিজাতীয় পদার্থ থাকে। প্রাথমিক অবস্থায় এর কোনো ব্যথা থাকে না। তবে কোনো কারণে ইনফেকশন হলে বা পেকে গেলে ভেতরে পুঁজের মতো দেখা যায়। এ সিস্টের একটা পাতলা আবরণ থাকে, যা ভেতরের সব পদার্থকে ঢেকে রাখে।

মুখমন্ডলের এই টিউমার সবচেয়ে বিশ্রী সমস্যার সৃষ্টি করে। কারণ এটি সহজে চোখে লাগে। তাছাড়া, কাটাছেঁড়া করতে গেলে কসমেটিক সমস্যার সৃষ্টি করে বেশি বা দাগ হয়ে মানসিক অশান্তি ঘটায় প্রচুর। তাই সাবধানে এই অপারেশন করতে হয়, যাতে দাগ কম বা না থাকে।

আরেকটি বিশেষ ধরণের টিউমার বা সিস্ট হচ্ছে পুরুষর যৌনাঙ্গে বা অন্ডকোষে ছোট ছোট মুক্তার দানার মতো সিস্ট হওয়া। যা একটি দুটি থেকে অসংখ্য সংখ্যায় হতে পারে।

যা দেখতে বেশি বিশ্রী বিব্রতকর এবং যে কখনো দেখেনি, সে হয়তো ভয় পেতে পারে। অনেকের ধারণা এতে তার যৌন দুর্বলতা ও সন্তানহীন হতে পারে। অনেক নারী একে যৌন রোগ মনে করে তার সঙ্গে মিলনে অপারগতা প্রকাশ করে।

যা হোক যেকোনো অংশে সিস্ট সঙ্গে সঙ্গে সমস্যার সৃষ্টি না করলেও ধীরে ধীরে সৌন্দর্যহানি করে। তারপর কসমেটিক সমস্যা তো আছেই, তাই ছোট অবস্থা থেকে একে দূর করা ভালো। তাতে সেরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

কারণ
ত্বকের উপরিভাগ এক ধরনের কোষের পাতলা ও সুরক্ষাদানকারী স্তর দ্বারা গঠিত। এই ধরনের কোষগুলো প্রতিনিয়ত ত্বক থেকে খসে পড়ে। তবে খসে না পড়ে কোষগুলো ত্বকের গভীরে প্রবেশ করলে এবং সংখ্যাবৃদ্ধি করতে থাকলে এপিডারময়েড সিস্ট গঠিত হয়।

এপিডারমাল কোষ সিস্টের দেয়াল সৃষ্টি করে এবং পরবর্তীতে ত্বকের অভ্যন্তরে কেরাটিন নামক প্রোটিন নিঃসৃত করে। কেরাটিন হল এক ধরনের ঘন ও হলুদ উপাদান, যা সিস্ট থেকে নিষ্কাশিত হয়। চুলের ফলিকল বা তৈলগ্রন্থি ক্ষতিগ্রস্থ হলে এই কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি হয়ে থাকে।

চিকিৎসা
ছোট অপারেশনের মাধ্যমে এবং দক্ষ হাতে সিস্টের পর্দা বের করে আনতে পারলে আর কোনো সমস্যা থাকে না। মোটকথা কসমেটিস ও মানসিক সমস্যা বিবেচনা করে একে যত তাড়াতাড়ি নিখুঁতভাবে দূর করা যায় ততই মঙ্গল।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.