270892

বাংলা চলচ্চিত্রের মুকুটহীন সম্রাটের ৯০তম জন্মদিন আজ

তাকে বলা হয় বাংলা চলচ্চিত্রের মুকুটহীন সম্রাট। দীর্ঘ ৫ দশকেরও বেশি সময়ের ক্যারিয়ারে তিনি পাঁচ শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তিনি অভিনেতা আনোয়ার হোসেন। চলচ্চিত্রের মুকুটহীন এই সম্রাটের ৯০তম জন্মদিন আজ।
১৯৩১ সালের ৬ নভেম্বর তিনি জামালপুর জেলার সরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবার নাম নজির হোসেন ও মায়ের নাম সাঈদা খাতুন। তার ছোটবেলা কেটেছে সরুলিয়াতেই।

সাদাকালো থেকে রঙিনের ছোঁয়া লাগা বাংলা সিনেমার অন্যতম এক সাক্ষী তিনি। অভিনয়ে হাতেখড়ি স্কুল জীবনেই। আর চলচ্চিত্রে অভিষেক ১৯৫৮ সালে ‘তোমার আমার’ ছবি দিয়ে। ১৯৬৪ সালের ১ মে তার অভিনীত ‘দুই দিগন্ত’ ছবি দিয়ে ঢাকার ‘বলাকা’ সিনেমা হলের উদ্বোধন হয়েছিল।

আনোয়ার হোসেন ১৯৭৫ সালে প্রথম প্রবর্তন ও প্রদানকৃত বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী অভিনেতা। নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত লাঠিয়াল চলচ্চিত্রে তার সু-অভিনয়ের স্বীকৃতি স্বরূপ শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদানের জন্য তাকে একুশে পদক প্রদান করা হয় এবং অভিনেতাদের মধ্যে তিনিই প্রথম এই পুরস্কার লাভ করেন। ২০১০ সালে প্রদানকৃত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-এ আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হন তিনি।.

আনোয়ার হোসেনের পিতা একেএম নজির হোসেন ছিলেন সাব-রেজিস্টার এবং মাতা সাঈদা খাতুন। নজির-সাঈদা দম্পতির তৃতীয় সন্তান আনোয়ার হোসেন। তিনি ১৯৪০ সালে দেওয়ানগঞ্জ প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি হন এবং ১৯৫১ সালে তিনি জামালপুর স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। পরবর্তীতে ভর্তি হন ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজে। কলেজের প্রথম বর্ষে অভিনয় করেন আসকার ইবনে শাইখের পদক্ষেপ নাটকে। প্রথম বর্ষের পরীক্ষার পর তার পিতার বন্ধু আবদুল্লাহ খানের সেলকন ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্মে সুপারভাইজার হিসেবে যোগ দেন।

অভিনেতার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো- তোমার আমার, সূর্যস্নান, কাচের দেয়াল, বন্ধন, নবাব সিরাজউদ্দৌলা, অপরাজেয়, সাত ভাই চম্পা, জীবন থেকে নেয়া, অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী, রংবাজ, ধীরে বহে মেঘনা, লাঠিয়াল, পালঙ্ক, রূপালী সৈকতে, নয়নমনি, কুয়াশা, নাগরদোলা, প্রভৃতি।

২০১৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর আনোয়ার হোসেনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটে বাংলা চলচ্চিত্রের এক উজ্জ্বল অধ্যায়ের। বার্ধ্যক্যজনিত রোগে ভুগে ৮২ বছর বয়সে আনোয়ার হোসেন পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে যান অন্যভুবনে। তাকে রাজধানীর মিরপুর বুদ্ধিজীবি কবরস্থানে দাফন করা হয়।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.