270306

শেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুরের করুণ পরিণতি, আশ্রয় জোটেনি বাংলাতেও

ভারতীয় উপমহাদেশে যতগুলো শাসকের হাত বদলেছে তাদের মধ্যে মুঘল সাম্রাজ্য ছিল বেশ শক্তপোক্ত। সম্রাট বাবর ছিলেন এই সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। এরপর হুমায়ূন, আকবরসহ একে একে ১৯ জন শাসক ১৬ শতকের শুরু থেকে ১৯ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত শাসন করেছেন এ সাম্রাজ্য।

তাদের সাম্রাজ্য মূলত আধুনিক ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ নিয়ে গঠিত ছিল। মুঘলরা মধ্য এশিয়ার তৈমুর বংশের উত্তর পুরুষ। এই সাম্রাজ্য ১৮ শতকে দুর্বল হয়ে পড়ে। ব্রিটিশ শাসকর কর্তৃক ১৮৫৭ সালে সর্বশেষ মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ কে ক্ষমতাচ্যুত করার মাধ্যমে মুঘল সাম্রাজ্যের অবসান ঘটে। মুঘলরা একই সঙ্গে তৈমুর লং এবং চেঙ্গিস খানের বংশধর ছিলেন। মুঘলদের ভেতরে বেশ কিছু সংখ্যক রাজপুত্র এবং পারস্যদেশীয় সদস্য ছিল। কারণ অনেক মুঘল সম্রাট পারস্যদেশীয় রাজকন্যা অথবা রাজপুত্র রাজকন্যাদের গর্ভে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

দিল্লির লাল কেল্লায় জন্ম সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের

দিল্লির লাল কেল্লায় জন্ম সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের

শুধুমাত্র মুঘল সম্রাট বাবর এবং হুমায়ুন ছিলেন প্রকৃত মধ্য এশীয়। আকবর ছিলেন অর্ধেক ইরানি কারণ তার মা ছিলেন পারস্য বংশোদ্ভূত। জাহাঙ্গীর ছিলেন একজন অর্ধ রাজপুত্র এবং আংশিক পারস্যদেশীয়। সম্রাট জাহাঙ্গীর ছিলেন এক তৃতীয়াংশ রাজপুত্র। ভারতীয় উপমহাদেশের একটি বিরাট অংশজুড়ে তাদের সাম্রাজ্যর বিস্মৃত ছিল।

সাম্রাজ্যের পরিধি বাংলা থেকে কাবুল এবং পশ্চিমের সিন উত্তরের কাশ্মীর এবং দক্ষিণে কাবেরী পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। সেই সময় এই বিশাল এলাকার জনসংখ্যা ছিল ১১০ থেকে ১৫০ মিলিয়ন। এই জনসংখ্যা তখনকার পৃথিবীর এক চতুর্থাংশ। মুঘল সম্রাট সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি ছিল ৪ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার অথবা ১.২ মিলিয়ন বর্গ মাইল।

বাবর, হুমায়ূন কিংবা আকবর, জাহাঙ্গীর, শাহজাহানরা বহাল তবিয়াতে এই সাম্রাজ্য শাসন এবং ভোগ করেন। তবে শেষের দিকে তাদের পরবর্তী প্রজন্ম এসবের কিছুই পাননি। বেশ দুর্দশায় কেটেছে তাদের দিন। অন্যদের ভুলের মাশুল দিয়েছেন তারা। শেষ সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের কথাই ধরুন না। শেষ আশ্রয়টুকুও পান নি তিনি বাংলাতে।

স্ত্রী জিনাত মহলের সঙ্গে সম্রাট শাহ জাফর

স্ত্রী জিনাত মহলের সঙ্গে সম্রাট শাহ জাফর

মূলত শাহজাহানের পুত্রদের ক্ষমতার লোভই এই সাম্রাজ্যের ভীত নাড়িয়ে দিয়েছিল। সম্রাট মোহাম্মদ শাহ এর শাসন আমলে মুঘল সাম্রাজ্যের ভাঙ্গন শুরু হয়। মধ্য ভারতের একটি বিরাট অংশ মুঘলদের হাতছাড়া হয়ে মারাঠাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। একটি এলাকার সামরিক নিয়ন্ত্রণ নেয়ার জন্য মুঘলরা সবসময় একটি কৌশল অবলম্বন করতো। তারা এলাকার একটি দুর্গ দখল করতো এবং সেটিকে কেন্দ্র রূপে ব্যবহার করে আশেপাশের শত্রু সেনাদের প্রতিহত করত। মুঘলরা খোলা যুদ্ধের ময়দানে শত্রুর মোকাবেলা করে তাদের নিশ্চিহ্ন করতে বেশি পারদর্শী ছিল।

পারস্য সম্রাট সম্রাট নাদির শাহের ভারত অভিযানের পর মুঘল সাম্রাজ্যের শক্তি এবং গৌরব অনেকটাই কমে আসে। অনেক সামন্ত শাসকরা স্বাধীনভাবে তাদের রাজ্য শাসন করতে থাকে। যদিও শুধু মুসলিম অভিযাত্রায় নয়, মারাঠা হিন্দু এবং শিখ নেতৃবৃন্দ মুঘল সম্রাটকে ভারতের আনুষ্ঠানিক সার্বভৌমত্বের প্রতীক হিসেবে মেনে চলত।

পরবর্তী দশকে আফগান, শিখ এবং মারাঠারা নিজেদের মধ্যে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম সাম্রাজ্যের অখণ্ডতা রক্ষা করতে ব্যর্থ চেষ্টা করেন। শেষ পর্যন্ত তাকে বাইরের শক্তির দ্বারস্থ হতে হয়। ১৭৮৪ সালে মারাঠারা দিল্লীর সালতানাতের পরীক্ষাকারী হিসেবে  ঘোষিত হয়। দ্বিতীয় অ্যাংলো মারাঠা যুদ্ধের পূর্ব পর্যন্ত এই ব্যবস্থা বজায় থাকে।

এরপরে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দিল্লির মুঘল বংশের পরিরক্ষাকারী হিসেবে আবির্ভূত হয়। তখন ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রাক্তন মুঘল সাম্রাজ্যের একটি বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করতো। ১৮৫৭-৫৮ সালের সিপাহী বিপ্লব ব্যর্থ হলে, ব্রিটিশ সরকার শেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহকে সিংহাসনচ্যুত করে এবং রেঙ্গুনে নির্বাসিত করে। সেই সঙ্গে বিলুপ্ত হয় মুঘল সাম্রাজ্যের।

সিপাহি বিদ্রোহ

সিপাহি বিদ্রোহ

বাহাদুর শাহ জাফরের জন্ম ২৪ অক্টোবর ১৭৭৫ সালে দিল্লির লালকেল্লায়। তার পূর্ণ নাম আবুল মুজাফ্ফার সিরাজুদ্দীন মুহাম্মদ বাহাদুর শাহ গাজী। তিনি ছিলেন মুঘল সাম্রাজ্যের ১৯তম এবং শেষ সম্রাট। তিনি দিল্লির সম্রাট দ্বিতীয় আকবর শাহ ও সম্রাজ্ঞী লাল বাঈর দ্বিতীয় পুত্র। ব্যক্তিগতভাবে বাহাদুর শাহ জাফর একজন গুণী মানুষ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন। তিনি একজন দক্ষ ক্যালিগ্রাফার, আধ্যাত্মিক কবি ও ধর্মীয় সাধক হিসেবে সকলের শ্রদ্ধাভাজন ছিলেন।

পিতার মৃত্যুর পর বাহাদুর শাহ (দ্বিতীয়) ১৮৩৭ খ্রিষ্টাব্দে দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করেন। প্রকৃতপক্ষে পিতামহ সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম   এবং পিতা সম্রাট দ্বিতীয় আকবর শাহ উভয়ের মতো দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পেনশনভোগী ছিলেন। তিনি বার্ষিক ১ লাখ টাকা ভাতা পেতেন।

পিতার মতো বাহাদুর শাহ নিজের ও মুঘল খান্দানের ভরণপোষণে ভাতা বৃদ্ধির জন্য অনেক চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু “বাদশাহ” উপাধি ত্যাগ এবং লালকেল্লার বাইরে সাধারণ নাগরিকের মতো জীবনযাপনের শর্তে তিনি রাজি হননি। এ ছাড়া সিংহাসনের উত্তরাধিকারী মনোনয়ন নিয়েও ইংরেজদের সঙ্গে সম্রাটের মনোমালিন্য হয়। সম্রাটের ক্ষমতা ও মর্যাদা খর্ব করতে নানা উদ্যোগ নেয় কোম্পানি। ক্ষমতা, প্রতিপত্তি ও সম্পদ সব কিছু হারিয়ে সম্রাট প্রাসাদের চার দেয়ালের অভ্যন্তরে জীবন কাটাতে বাধ্য হলেন।

শেষ বয়সে পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হন সম্রাট

শেষ বয়সে পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হন সম্রাট

এ সময় অমর্যাদার মনোবেদনা ভুলে থাকার জন্য তিনি গজল ও মুশায়েরায় নিমগ্ন থাকতেন। লালকেল্লায় সাহিত্যের আসর বসিয়ে সময় কাটাতেন। তিনি নিজেও কবিতা লিখতেন। জীবনের কষ্ট ও বিষাদ তার কবিতার মূল বিষয়। বাহাতার কবিতার ছত্রে ছত্রে দু:খ ও বিষাদের সঙ্গে দেশ ও জাতির পরাধীনতার কথা বিধৃত। একটি কবিতায় আছে “উমর দরাজ মাঙ্গঁকে লায়েথে চার দিন দো আরজুমে কাট গয়ে, দো ইন্তেজার মেঁ।” যার অর্থ “চার দিনের জন্য আয়ু নিয়ে এসেছিলাম। দু’টি কাটল প্রত্যাশায় আর দু’টি অপেক্ষায়।”

বাহাদুর শাহ জাফরের পরিবার বেশ বড়সড়ই ছিল। তার ছিল চারজন স্ত্রী ও অনেক উপপত্নী। তার স্ত্রীরা হচ্ছে- বেগম আশরাফ মহল,বেগম আখতার মহল, বেগম জিনাত মহল, বেগম তাজ মহল। এদের সব মিলিয়ে সন্তান ৫৪ সন্তান। এরমধ্যে ২২ জন ছেলে এবং ৩২ জন মেয়ে। অনেকে দাবি করে যে বাহাদুর শাহ জাফরের উত্তরসূরী, পুরো ভারতে তারা বসবাস করেন। যেমন হায়দ্রাবাদ, ঔরঙ্গাবাদ, দিল্লি, ভোপাল, কলকাতা, ও বেঙ্গালুরু। তবে দাবিদাররা অনেকেই প্রায় বিতর্কিত।

বাহাদুর শাহ সিংহাসনে আরোহণের ২০ বছর পর সূত্রপাত হয় ঐতিহাসিক সিপাহি বিদ্রোহের। পলাশীর যুদ্ধের পর ১০০ বছর কেটে গেছে তত দিনে। ছলেবলে কৌশলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সমগ্র ভারতবর্ষ দখল করে নিয়েছে। দেশবাসীর সঙ্গে সৈন্য বিভাগের লোকদের ওপরও চলছে জুলুম, বঞ্চনা ও নির্যাতন।

একের পর এক দেশীয় রাজ্য ইংরেজ অধিকারে নিয়ে যাওয়া, লাখেরাজ ও দেবোত্তর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা, কারাগারে হিন্দু-মুসলমান সিপাহিদের জন্য একই খাবারের ব্যবস্থা, ঘিয়ের মধ্যে চর্বি ও আটার মধ্যে হাড়ের গুঁড়ার সংমিশ্রণ, গরু ও শূকরের  চর্বি মিশ্রিত কার্তুজ বিতরণ ইত্যাদি ভারতবর্ষের জনমনে কিংবা সৈনিকদের মনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। ভারতীয় সিপাহিদের মধ্যে ধূমায়িত বিক্ষোভ ও অস্খিরতার প্রথম বহি:প্রকাশ ঘটে ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দের ২২ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের দমদম সেনাছাউনিতে।

স্ত্রী জিনাত মহলও স্বামীর সঙ্গে টানাপড়নে দিন কাটিয়েছেন

স্ত্রী জিনাত মহলও স্বামীর সঙ্গে টানাপড়নে দিন কাটিয়েছেন

বাহাদুর শাহ জাফর সিপাহিদের বিপ্লব তথা ভারতবর্ষের প্রথম সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্ব দিচ্ছেন­ এ সংবাদে কানপুর, লখনৌ, বিহার, ঝাঁশি, বেরিলি থেকে শুরু করে পশ্চিম ও পূর্ববাংলার সর্বত্র সিপাহিরা গর্জে ওঠে ‘খালক-ই খুদা, মুলক ই বাদশাহ, হুকুম ই সিপাহি।’ অর্থাৎ আল্লাহর দুনিয়া, বাদশার রাজ্য, সিপাহির হুকুম। একের পর সেনাছাউনিতে বিদ্রোহ হতে থাকে। ইংরেজরা অতি নির্মমভাবে বিদ্রোহ দমন করে।

হাজার হাজার স্বাধীনতাকামীর রক্তে রঞ্জিত হয় ভারতবর্ষের মাটি। ইংরেজদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষও বিক্ষুব্ধ ছিল। কিন্তু ভারতীয়দের এই সংগ্রাম সফল হতে পারেনি। ইংরেজরা দিল্লি দখল করে নেয় এবং সম্রাট ২১ সেপ্টেম্বর আত্মসমর্পণ করেন। ইংরেজ সৈন্যরা মীর্জা মোগল, মীর্জা খিজির সুলতান, মীর্জা আবু বকরসহ ২৯ জন মুঘল শাহজাদাসহ বহু আমির ওমরাহ, সেনাপতি ও সৈন্যকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।

সম্রাটকে বিচারের নামে প্রহসনের আদালতে দাঁড় করানো হয়। হাজির করা হয় বানোয়াট সাক্ষী। বিচারকরা রায় দেন, দিল্লির সাবেক সম্রাট ১০ মে থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ সংগঠনের দায়ে অপরাধী। তার শাস্তি চরম অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত। কিন্তু তার বার্ধক্যের কথা বিবেচনা করে প্রাণ দণ্ডাদেশ না নিয়ে নির্বাসনে পাঠানোর সুপারিশ করা হয়।

তিনি ছিলেন একজন কবি ও সাধক

তিনি ছিলেন একজন কবি ও সাধক

১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দের ৭ অক্টোবর ৮৩ বছরের বৃদ্ধ সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর, সম্রাজ্ঞী জিনাত মহল, দুই শাহজাদা, শাহজাদী এবং অন্য আত্মীয় ও ভৃত্যদের নিয়ে ইংরেজ গোলন্দাজ ও অশ্বারোহী বাহিনী দিল্লি ত্যাগ করে। ৯ ডিসেম্বর জাহাজ রেঙ্গুনে পৌঁছে। ব্রিটিশ বাহিনীর ক্যাপ্টেন নেলসন ডেভিসের বাসভবনের ছোট গ্যারেজে সম্রাট ও তার পরিবার-পরিজনের বন্দিজীবন শুরু হয়। সম্রাটকে শুতে দেয়া হয় একটা পাটের দড়ির খাটিয়ায়।

ভারতের প্রিয় মাতৃভূমি থেকে বহু দূরে রেঙ্গুনের মাটিতে সম্রাটের জীবনের বাকি দিনগুলো চরম দু:খ ও অভাব অনটনের মধ্যে কেটেছিল। সম্রাট পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হলেন। এমন বিড়ম্বনাপূর্ণ জীবনের অবসান হয় ১৮৬২ খ্রিষ্টাব্দের ৭ নভেম্বর, শুক্রবার ভোর ৫টায়। তবে সম্রাটকে অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে দাফন করা হয়। কবরটি বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে দেয়া হয়েছিল।

সম্রাটের কবরের চিহ্নও রাখতে চায় নি ইংরেজরা

সম্রাটের কবরের চিহ্নও রাখতে চায় নি ইংরেজরা

উদ্দেশ্য যা একসময় নষ্ট হয়ে যাবে, ঘাসগুলো পুরো জায়গা আচ্ছাদিত করে ফেলবে। কোথায় সর্বশেষ মুঘল সম্রাট শায়িত আছেন, তার চিহ্নও কেউ খুঁজে পাবে না। ইংরেজরা খুব ভালোভাবে জানত ভারতবর্ষের জনসাধারণের মনে এই সম্রাটের প্রভাব কতখানি। ভারতবর্ষের মানুষ সম্রাটের কবরে ফাতেহা পাঠ করতে রেঙ্গুন যান ১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দে। কিন্তু প্রথম প্রচেষ্টা সফল হয়নি। পরে তার আসল কবর আবিষ্কৃত ও সমাধিসৌধ নির্মিত হয়।

সম্রাটের প্রিয়তমা স্ত্রী জিনাত মহল মারা যান ১৮৮৬ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে। সম্রাটের পাশেই রয়েছে তার সমাধি। সম্রাট ও তার প্রিয়জনদের সমাধি হয়ে উঠেছে যুগ যুগ ধরে দেশপ্রেমিকদের তীর্থস্থানের মতো। সম্রাটের ইচ্ছা ছিল স্বদেশের মাটিতে সমাহিত হওয়া। জন্মভূমির প্রতি ছিল প্রচণ্ড অনুরাগ। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন জীবনের শেষ সময় ঘনিয়ে আসছে। স্বদেশের মাটিতে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ কিংবা সমাহিত হওয়ার সাধ কোনোটাই পূরণ হবে না।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.