অদ্ভুত এসব সমাধির পেছনে রয়েছে না বলা অনেক কথা
মৃত্যু মানেই পৃথিবীর সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে চলে যাওয়া। তবে মৃত ব্যক্তির স্মৃতি ধরে রাখতে তার প্রিয়জনেরা করে থাকেন নানা কিছু। এর মধ্যে এপিটাফ অন্যতম। পাথরের উপর খোদাই কিংবা তুলির আঁচড়ে লেখা থাকে তার নাম। সেই সঙ্গে জুড়ে দেয়া হয় তার সম্পর্কে দুই এক লাইন কথা।
তবে অনেক সমাধির এপিটাফ বা স্মৃতিসৌধের নকশা আপনাকে হতবাক করবে। কিছুসময় কপাল ঘুচিয়ে চিন্তা অরতে হবে আপনাকে। আচ্ছা এর মানে কি? তবে এর পেছনের ঘটনা জানলে আপনার হতবাকের মাত্রা আরো খানিকটা বাড়বে বৈকি! চলুন তবে এমনই কিছু সমাধি-স্থাপত্য দেখে নেয়া যাক।
কবরস্থান এমনিতেই গা ছমছমে এক জায়গা। যতই সাহসী হোন না কেন ভয় ভয় লাগবেই। তবে আজ কিছু কবরের কথা বলছি। যেগুলো গতানুগতিক কবরের থেকে অনেকটাই আলাদা। ওই সব কবরের উপর নকশা বা স্থাপত্য সত্যিই বৈচিত্রময়, এই সব নকশা বা স্থাপত্য যেন মৃত্যুর পরেও থেকে যাওয়া কিছু মায়ার কথা বলে চলেছে জীবিত পৃথিবীকে।
মিকি মাউস প্রেমীর কবর
যে ভাস্কর্যটি দেখতে পাচ্ছেন এটি একটি কিশোরীর কবরের উপরে করা। ওই কিশোরী মিকি মাউসের ভক্ত ছিল। সে জন্যই তার কাছের মানুষেরা কবরের উপরে বসিয়েছেন কিশোরীর প্রতিকৃতি। সেখানে জ্বলজ্বল করছে মিকি মাউসের ছবি।
পিয়ানো কবর
এই কবরের উপরে রাখা একটি পাথরের পিয়ানো। তার উপর মাথা রেখে আধ শোয়া অবস্থায় রয়েছে এক নারী। এটি একজন নারীর কবর। তিনি জীবদ্দশায় ছিলেন একজন পিয়ানো বাদক ছিলেন। সেই স্মৃতিতেই এই স্থাপত্য।
ধূমপান করছে মূর্তিটি
ইটালিতে এই ভাস্কর্যের দেখা মিলবে। সেখানে দেখা যাচ্ছে এক ব্যক্তি আনমনে বসে ধূমপান করছেন। ধারণা করা হয় এই কবর যার, তিনি নিশ্চয় ধূমপানের কারণে মারা গিয়েছিলেন।
ঢাকনা দেয়া কবর
এই কবরের উপরে রয়েছে ঢাকনা। যা সরিয়ে ভিতরে ঢোকা যায়। কবরটি একটি ১০ বছরের মেয়ের। মেয়েটি ঝড় হলে খুব ভয় পেত। তাই ঝড় হলেই তার মা ওই ঢাকনা সরিয়ে কবরের ভিতর গিয়ে এখনও মেয়েকে আগলে রাখেন।
স্বামীর সোহাগ পাচ্ছেন এখনো
সমাধি স্থাপত্যের অন্যতম সুন্দর নিদর্শন এই কবর। থাইল্যান্ডের এই কবরের উপর এটি করা হয়েছে। এই একজন নারীর কব্র। স্ত্রীয়ের প্রতি স্বামীর অন্তহীন ভালোবাসার উদাহরণ এটি। এখনো যেন স্ত্রীর রাতের ঘুম ভালো হয় সেজন্য তার স্বামী একটি খাটের ভাস্কর্য তৈরি করেছেন। তার উপর দেখা যাচ্ছে সকাল হয়ে গেলেও স্ত্রী এখনো ঘুমে। তবে স্বামীর অফিস থাকায় স্ত্রীকে না জাগিয়ে পাশ থেকে চুপি চুপি উঠে যাচ্ছেন।
শিশুটিকে দোল দিচ্ছেন যিশু
এটি একটি বাচ্চা মেয়ের কবর। মৃত্যুর পর যেন সে ভালো থাকে, আনন্দে থাকে তাই এই ভাস্কর্যটি করা। যিশু তাকে দোল খাওয়াচ্ছেন। এরকমই ভাবনা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে কবরের উপর।
লোহার খাঁচায় আটকে রাখা কবর
এই কবর ভিক্টোরীয় যুগের। মৃত ব্যক্তি কবর থেকে উঠে যাতে না পালাতে পারে, সে জন্যই কবরের উপর এ রকম লোহার খাঁচা।
নিজেই কবরের ঝাঁপি বন্ধ করছেন
এটি দেখে মনে হচ্ছে মৃত ব্যক্তি যেন নিজেই কবরে যাচ্ছেন। জর্জেস রোডেনবাখ নামে এক ব্যক্তির কবর এটি। ১৮৯৮-এ মৃত্যু হয় তার। তার কবরের উপর এমনই এক ভাস্কর্য তৈরি করা হয়েছে। যেন তিনি নিজেই কবরের মধ্যে গিয়ে ঝাঁপ বন্ধ করে দিচ্ছেন।
ভালোবাসা আটকাতে পারেনি কোনো বাঁধাই
এই কবর স্বামী-স্ত্রীর। স্বামী ছিলেন ক্যাথলিক ও স্ত্রী ছিলেন প্রোটেস্ট্যান্ট। সে সময় ক্যাথলিক ও প্রোটেস্ট্যান্টদের কবর পাশাপাশি দেওয়া নিষিদ্ধ ছিল। তাই দুই কবরের মধ্যে দেয়াল থাকলেও তার উপর দিয়েই রয়েছে যোগসূত্র।
সেলফোন কবর
কবরের উপর পুরনো দিনের মোবাইল ফোনের প্রতিকৃতি। মৃত ব্যক্তির মোবাইল ফোনের প্রতি ভালবাসা থেকেই এমন নির্মাণ।
হাইওয়ে রাস্তায় কবর
এই কবরটি আমেরিকার ইন্ডিয়ানার এক গ্রামীণ এলাকার। কর্তৃপক্ষের অনুরোধ সত্ত্বেও নাতির কবর সরাতে রাজি হননি ঠাকুমা। সে জন্য কবরকে মাঝখানে রেখেই দু’পাশ দিয়ে চলে গিয়েছে রাস্তা।
কোনো কিছুই তাদের আলাদা করতে পারবে না
কবরের উপর হাত ধরাধরি করে বসে আছে কঙ্কাল। প্রিয়জনের প্রতি ভালোবাসা ব্যক্ত করতেই এই প্রতিকৃতি।
কবরের উপর ক্রসওয়ার্ড
মৃত ব্যক্তির ক্রসওয়ার্ডের প্রতি ভালোবাসা বোঝাতেই এ ভাবে সাজানো হয়েছে কবরটি।