269426

পার্কে-সৈকতে ফেলা ময়লা ডাকযোগে চলে আসবে বাসায়!

পড়ন্ত বিকাল। প্রিয়জনের হাতে-হাত ধরে সমুদ্র তটে হাঁটছেন। বাদাম চিবুতে চিবুতে সমুদ্রের গর্জন উপভোগ করছেন দুজনে। মাঝেমাঝে আবার চুমুক দিচ্ছেন জুস কিংবা ঠান্ডা পানীয়তে। সমুদ্রের ঢেউখেলা আর ডুবন্ত সূর্যের রক্তিম রূপ দেখতে দেখতে বেমালুম ভুলে গেছেন বাদামের খোসা কিংবা খালি বোতলটির কথা। কখন যে কোথায় ছুড়ে ফেলেছেন তার ইয়ত্তা নেই। ফলে হাজারো উদ্যোগে আমাদের কক্সবাজার হচ্ছে না নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডের ক্যারেক্যারে সমুদ্র সৈকত কিংবা ফ্রান্সের লেসপিগুয়েটে সমুদ্র সৈকত।

আচ্ছা, যদি হঠাৎ একদিন পার্কে কিংবা সৈকতে ছুড়ে ফেলা আপনার ময়লাগুলো আপনারই ঠিকানায় ডাকযোগে পাঠিয়ে দেয়া হয়, কেমন হবে? নিশ্চয় অবাক হবেন। আচ্ছা, যদি আবার ময়লা ফেলার অপরাধে আপনার পাঁচ বছরের জেল হয় তখন আপনার কেমন লাগবে? হয়ত হার্ট অ্যাটাক করবেন!

কথাটি অবাস্তব মনে হলেও নিজেদের দেশের দর্শনীয় স্থানগুলোকে পরিষ্কার রাখতে এমনই উদ্যোগ নিয়েছে থাইল্যান্ডের সরকার। সরকারের এক বিবৃতি বলছে, ‘যদি তুমি থাই ন্যাশনাল পার্কে ময়লা ফেলে যাও, সেই ময়লাগুলোই তোমাকে আবার খুঁজে বের করবে। অর্থাৎ তোমার ঠিকানায় ডাকযোগে পাঠিয়ে দেয়া হবে।’

থাইল্যান্ডের পরিবেশ মন্ত্রী ভারাউয়াত সিলপা বলছেন, ‘খাউ ইয়াই ন্যাশনাল পার্ক কর্তৃপক্ষ দ্রুতই ময়লাকারীর ঠিকানায় ময়লা পাঠানোর কাজ শুরু করবে।’

যত্রতত্র ময়লা ফেলাকে একটি অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যারা এই গর্হিত কাজ করবেন তাদের পাঁচ বছর পর্যন্ত জেলসহ গুনতে হতে পারে মোটা অংকের জরিমানা।’

সরকারের বিবৃতিটি বলছে, এখন থেকে দেশটির পার্কে ঘুরতে যাওয়া সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে তাদের ঠিকানা পার্কে জমা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। যাতে পার্কে ময়লাকারীকে দ্রুত শনাক্ত করা সম্ভব হয়।

এক ফেসবুক পোস্টে সিলপা সবাইকে সতর্ক করে বলেন, ‘আপনার ময়লা আপনারই ঠিকানাই পাঠানো হবে।’ তিনি তার পোস্টে কয়েকটি ছবি যুক্ত করেছেন। যেখানে বেশ কয়েকটি প্লাস্টিকের বোতল ও চিপসের টোংগাকে একসাথে করে বস্তাবন্দী করা হয়েছে। যার ওপরে বড় বড় অক্ষরে লেখা হয়েছে ‘তুমি ন্যাশনাল পার্কে এই জিনিসগুলো (ময়লাগুলো) ভুলে ফেলে গেছ।’

ঝর্ণা, বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী ও প্রাকৃতিক মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের জন্য বিখ্যাত এই ন্যাশনাল পার্ক। ব্যাংককের উত্তর-পূর্বের এই পার্কটি দেশটির সবচেয়ে পুরোনো পার্ক। এছাড়া পার্কটি হাইকিং এর জন্যও বেশ জনপ্রিয়।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.