269332

এবার বুসান চলচ্চিত্র উৎসবে সুমিতের ‘নোনাজলের কাব্য’

তরুণ নির্মাতা রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘নোনাজলের কাব্য’র আন্তর্জাতিক যাত্রা এগিয়ে চলেছে। একের পর এক বিশ্বের বিভিন্ন মর্যাদাপূর্ণ চলচ্চিত্র উৎসবে জায়গা করে নিচ্ছে চলচ্চিত্রটি। এরই মধ্যে ৬৪তম বিএফআই লন্ডন চলচ্চিত্র উৎসব এবং ২৫তম বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে স্থান করে নিয়েছে ‘নোনাজলের কাব্য’।

বুসান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘অফিশিয়াল সিলেকশন’ পাওয়া বাংলাদেশের একমাত্র পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এটি। এছাড়া রয়েছে ‘ট্রানসিট’ একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। আগামী ২১-৩০ অক্টোবর ২০২০ অনুষ্ঠেয় উৎসবে রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিতের ছবিটি বুসান সিনেমা সেন্টারে প্রদর্শিত হবে। এটির চিত্রনাট্য রচনা করেছেন সুমিত নিজেই। এটি তার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। চৈতন্য তামহানের ‘দ্য ডিসাইপেল’ এবং ইভান আয়ারের ‘মাইলস্টোন’-এর মতো প্রশংসিত চলচ্চিত্রের পাশাপাশি এটি প্রদর্শন করা হবে।

বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (বিআইএফএফ) প্রতি বছর দক্ষিণ কোরিয়ার বুসান শহরে অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমানে এই চলচ্চিত্র উৎসব এশিয়ার সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ও বৃহত্তম চলচ্চিত্র উৎসব হিসেবে বিবেচিত।

বুসানের আগে আগামী ৭ থেকে ১৮ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় ৬৪তম বিএফআই লন্ডন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শনের জন্যও নির্বাচিত হয়েছে ছবিটি। এই বছর সারাবিশ্ব থেকে মাত্র ৫৮টি ছবিকে স্থান দেয়া হয়েছে ‘ফিচার ফিল্ম’ বিভাগে। এই চলচ্চিত্র উৎসব বিশ্বের প্রথম সারির চলচ্চিত্র উৎসবগুলোর একটি। করোনা পরিস্থিতির কারণে হাইব্রিড ফরম্যাটে হবে এবারের আসর, যাতে অংশ নিচ্ছেন কেট উইন্সলেট, সোয়ার্শা রোনানের মতো তারকারা।

নির্মাতা রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত বলেন, এটি আমার প্রথম ছবি। চিত্রনাট্যের প্রথম খসড়া লিখেছি পাঁচ বছর আগে। পটুয়াখালীর প্রত্যন্ত এক চরে ১৫-২০ ঘর জেলের বসবাস। সেই জেলেপাড়ায় হঠাৎ এক ভাস্করের আগমন এবং তাকে ঘিরে গ্রামবাসীর জল্পনা কল্পনা, ভালো লাগা এবং পরিশেষে সংঘাত– এই নিয়েই ‘নোনাজলের কাব্য’র গল্প।

তিনি আরও বলেন, এর নির্মাণ কাজটি ভীষণ কঠিন ছিল, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াও নানা বাঁধা এসেছে। করোনা মহামারি ও লকডাউন তার মাঝে অন্যতম। এই বৈরী পরিবেশে দুটি বিশ্বমানের চলচ্চিত্র উৎসবে স্থান করে নিতে পারায় আমার পুরো টিম খুবই আনন্দিত। আন্তর্জাতিক মিডিয়া ও চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট বিশ্বের সেরা মানুষগুলোর নজর থাকে এই উৎসবগুলোতে। সবমিলিয়ে আমি মনে করি এটি আমার মতো একজন তরুণ নির্মাতার জন্য একটি বড় পাওয়া। ২০২১ সালের শুরুর দিকেই বাংলাদেশের দর্শক দেখতে পাবে ছবিটি। তবে তার আগে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে হবে।

বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের যৌথ প্রযোজনার ‘নোনাজলের কাব্য’র দৈর্ঘ্য ১০৬ মিনিট। এই ছবিতে অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, তিতাস জিয়া, তাসনুভা তামান্না, শতাব্দী ওয়াদুদ, অশোক ব্যাপারী, আমিনুর রহমান মুকুলসহ অনেকে।

ছবিটির মিউজিক কম্পোজার অর্ণব। সিনেমাটোগ্রাফি করেছেন লস অ্যাঞ্জেলসে বসবাসরত থাই শিল্পী চানানুন চতরুংগ্রোজ। তিনি এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের স্পিরিট অ্যাওয়ার্ডের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। ফরাসি প্রযোজক ইলান জিরার্ড, যিনি ‘মার্চ অব দ্য পেঙ্গুইন’, ‘গুডবাই বাফানা’, ‘ফাইনাল পোর্ট্রেট’-এর মতো বিখ্যাত কিছু চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছেন।

এছাড়া বাংলাদেশ থেকে ছবিটির নির্মাণ সহযোগী প্রতিষ্ঠান হাফ স্টপ ডাউন। সম্পাদনা করেছেন আমেরিকার ক্রিস্টেন স্প্রাগ, রোমানিয়ার লুইজা পারভ্যু ও ভারতের শঙ্খ। শব্দ ও রঙ সম্পাদনার কাজটি হয়েছিল প্যারিসের দুটি বিখ্যাত স্টুডিওতে।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.