269243

এই প্রথম গ্রহাণুতে ‘প্রাণের স্পন্দন’ দেখল নাসা!

এই প্রথম মহাকাশে গ্রহাণুতে প্রাণের স্পন্দন দেখা গেলো! এই স্পন্দনকে অবশ্য জৈবিক বলা যাচ্ছে না। তবে দেখা গেল, দূর থেকে এত দিন যাদের শুধুই নির্জীব, নিছকই পাথুরে বলে ভাবা হতো, তাদের মধ্যেও নিয়মিত ভাঙাচোরা হয়। পাথরে ফাটল ধরে। আর আপাতদৃষ্টিতে সেই নির্জীব, নিষ্প্রাণ পাথুরে মহাজাগতিক বস্তুটি মহাকাশে মুহুর্মুহূ উগরে দেয় রাশি রাশি কণা। যার বেশিটাই ছড়িয়ে পড়ে মহাকাশে। কিছুটা ফিরে আসে উৎসেই। সেই চঞ্চলতা প্রাণের স্পন্দনের মতোই গতিময়।

নাসার মহাকাশযান ‘ওসিরিস রেক্স’-এর চোখেই প্রথম ধরা পড়ল আপাত-নিষ্প্রাণ আদ্যোপান্ত পাথুরে গ্রহাণুতে প্রাণের স্পন্দন। গ্রহাণুটির নাম- ‘বেন্নু’।

সেই পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে লেখা গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে ৯ সেপ্টেম্বর। আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘জার্নাল অব জিওফিজিক্যাল রিসার্চ: প্ল্যানেটস’-এ।

বলা যেতে পারে এই প্রথম কোনও গ্রহাণুর বুকের ধুকপুকুনি চাক্ষুষ করা গেল। দেখা গেল, কোনও গ্রহাণু থেকে কী ভাবে রাশি রাশি কণা প্রতি মুহূর্তে ছড়িয়ে ছিটকে পড়ে মহাকাশে। কেন সেই প্রাণের স্পন্দন, তার যথাসম্ভব ব্যাখ্যা দেওয়ারও চেষ্টা করা হয়েছে গবেষণাপত্রে।

মূল গবেষক অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের লুনার অ্যান্ড প্ল্যানেটারি ল্যাবরেটরির অধ্যাপক কার্ল হার্জেনরোথার ‘আনন্দবাজার ডিজিটাল’কে জানিয়েছেন, কোনও গ্রহাণুর বুকের এই ধুকপুকুনি প্রথম দেখা গিয়েছিল গত বছরের জানুয়ারিতে। বেন্নুর কক্ষপথে নাসার মহাকাশযান ওসিরিস-রেক্স পৌঁছনোর পর।

কিন্তু সেটা যে কোনও গ্রহাণুর প্রাণের স্পন্দন, তা বোঝা যায়নি প্রথমে, জানিয়েছেন কার্ল। তারা দূর থেকে ওসিরিস-রেক্স-এর পাঠানো ছবি দেখে ভেবেছিলেন, ওই রাশি রাশি কণা আসলে গুচ্ছ গুচ্ছ তারা।

কার্ল বলেন, `আমি প্রথমে ওসিরিস-রেক্সের পাঠানো ছবি দেখে চমকে উঠেছিলাম। এত তারা? এত তারা রয়েছে ওই এলাকায়? এমন তো আমার জানা ছিল না কস্মিনকালেও! বড়জোর ওখানে ১০টি তারা দেখা যেতে পারে। কিন্তু নাসার মহাকাশযানের পাঠানো ছবিতে দেখলাম ছোট ছোট অন্তত ২০০টি বিন্দু। অবাক হয়ে গেলাম, ২০০টি তারা রয়েছে ওখানে? পরে সব ছবি খতিয়ে দেখে বুঝতে পারি ওখানে কোনও নক্ষত্রপুঞ্জ নেই। ওগুলো আসলে রাশি রাশি কণা। যা উগরে দিচ্ছে গ্রহাণু বেন্নু। কোনও গ্রহাণুতে যে এই ভাবে প্রাণের স্পন্দন চাক্ষুষ করা যাবে আগে ভাবিনি কখনও।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.