268423

মনে আছে সুদর্শন সেই চা-ওয়ালার কথা?

চা-ওয়ালা আরশাদ খানের কথা মনে আছে? ২০১৬ সালে পাকিস্তানের ইসলামাবাদের পেশোয়ার চকের এই চা-ওয়ালাকে নিয়েই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সরগরম ছিল! ভাইরাল হতে তাকে তেমন কিছু করতে হয়নি, শুধু ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে ছিলেন! আর যা করেছে তার নীল চোখ! নীল রঙা চোখের চা-ওয়ালা আরশাদের ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেন জিয়া আলী নামের এক শৌখিন নারী আলোকচিত্রী। আর এতেই কপাল খুলেছে! চা-ওয়ালা থেকে হয়ে উঠেন মডেল; এরপর অভিনেতা!
নিরক্ষর তরুণ আরশাদ তখন ঘুণাক্ষরেও জানতেন না যে তাকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া নামক কোনো জগতে তুমুল হইচই শুরু হয়ে গেছে। ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রামের নামই তিনি শোনেননি তখন। দিনভর দোকান সামলে রাতে যখন তিনি নিশ্চিন্ত ঘুমে, তখন সোশ্যাল মিডিয়া যে খুব দ্রুত তার জীবনটাকে এক অন্যরকম একটা সকালের দিকে নিয়ে যাচ্ছে, তা আরশাদ টেরই পাননি।

জাভেরিয়া ছবি পোস্ট করেছিলেন যে দিন, তার পরদিন সকালেই আরশাদের চায়ের দোকানে গিয়ে হাজির হয় ইসলামাবাদেরই একটি অনলাইন শপিং সংস্থা। ফ্যাশনেবল পুরুষের পোশাকের বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়ার প্রস্তাব দেয়া হয় তাকে। রাজিও হয়ে যান আরশাদ। তার পরই পাকিস্তানের মডেলিং দুনিয়ায় গত এক সপ্তাহে সবচেয়ে চর্চিত নামটি হয়ে উঠেছে আরাশাদ খান।

একটি ছবিই যে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে, তার সবচেয়ে দারুণ উদাহরণ আরশাদ খান। খ্যাতিমান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি বিজ্ঞাপনের পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন। এর পরের চমকটি ছিল মিউজিক ভিডিওতে অভিনয়। তারপর ব্রিটিশ সংবাদপত্র ‘ইস্টার্ন আই’-এর এশিয়ার সেক্সিয়েস্ট পুরুষ ২০১৬ তালিকায় ছিলেন আরশাদ। রণবীর সিং, শাহরুখ খান, সালমান খানদের সঙ্গে একই তালিকায় থাকা কী মুখের কথা? ৫০ জনের সেই তালিকায় ৩১ নম্বরে ছিলেন আরশাদ।

সিনেমায়ও নাম লেখান আরশাদ খান। পাকিস্তানি সিনেমা ‘কবীর’-এ অভিনয় করেন আরশাদ। ছবিটির শুটিং হয় ইংল্যান্ড ও দুবাইতে। প্রথম চলচ্চিত্রে নায়কের ভূমিকা না পেলেও অভিনয় করেছেন দ্বিতীয় প্রধান চরিত্রে। এ নিয়ে আরশাদ এক সাক্ষাৎকারে জানান, ‘আমার মনে হয়েছে নায়কের ভাইয়ের চরিত্রটাই আমার সঙ্গে বেশি ভালো মানাবে। তাই ওই সিনেমায় রাজি হয়েছিলাম।’

রাতারাতি ভাগ্য বদলে যাওয়া আরশাদ খান জড়িয়ে পড়েছিলেন অন্য এক দ্বন্দ্বে। পাকিস্তানের ন্যাশনাল ডাটাবেজ অ্যান্ড রেজিস্ট্রেশন অথোরিটি-এর একটি সোর্স বলেছিল আরশাদ খান ভুয়া কাগজ পত্রের মাধ্যমে পাকিস্তানের নাগরিক হবার চেষ্টা করছেন। কিন্তু অবাক হওয়ার মত ঘটনা ঘটে তার কিছুদিন পরেই। আরশাদ তার ফেসবুক আইডিতে তার নাগরিকত্ব সনদ গ্রহনের ছবি প্রকাশ করেন। সেই ছবিতে দেখা যায় ন্যাশনাল আইডেন্টিটি কার্ড দফতরের এক কর্মকর্তার হাত থেকে তার নাগরিকত্ব সনদ গ্রহণ করছেন।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.