267738

গাছ দিয়ে লেখা লেনিনের নাম, এক গুপ্ত স্মৃতিসৌধ!

গাছ দিয়ে বিভিন্ন লেখা দেখেছেন অনেকেই। এগুলো অনেকে শখ করে করে থাকেন। আবার অনেকে প্রিয় মানুষের স্মৃতি ধরে রাখতে তার নাম লিখেন গাছ দিয়ে।

তেমনই রাশিয়ার ওমস্ক ওব্লাস্টের টিউকলিনস্কের উপকণ্ঠে রয়েছে একটি নকশা। নিচ থেকে মনে হবে এটি বোধ হয় গাছে ঘেরা জঙ্গল। তবে উপর থেকে দেখলেই আপনারা বুঝবেন গাছ দিয়ে আসলে নকশা করে লেখা আছে এক রাজনৈতিক ব্যক্তির নাম।

এটি রাজনৈতিক নেতা ভ্লাদিমির লেনিনের স্মরণে তৈরি করা হয়। ভ্লাদিমির ইলাইচ উলিয়ানভ ওরফে লেনিন ছিলেন একজন রাশিয়ান বিপ্লবী, রাজনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক তাত্ত্বিক। তিনি ১৯১৭ থেকে ১৯২৪ সাল পর্যন্ত সোভিয়েত রাশিয়ার এবং ১৯২২ থেকে ১৯২৪ সাল পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের সরকারপ্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

পাইন বন

পাইন বন

তার প্রশাসনের অধীনে রাশিয়া এবং তারপরে বৃহত্তর সোভিয়েত ইউনিয়ন রাশিয়ার কমিউনিস্ট পার্টি দ্বারা পরিচালিত একদলীয় কমিউনিস্ট রাষ্ট্র হয়ে যায়। ১৯২৪ সালে লেনিনের মৃত্যুর পর থেকে তার অনুসারীরা ক্ষেপে যায়। ইতিহাসবিদ নিনা তুমারকিনের মতে, এমনকি তার জীবদ্দশায়ও লেনিন কেবল আমেরিকার জর্জ ওয়াশিংটনের একটি গোষ্ঠী গড়ে তুলেছিলেন।

সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং জোটবদ্ধ কমিউনিস্ট দেশগুলোতে লক্ষাধিক লেনিন মূর্তি স্থাপন করা হয়। প্রায় প্রতিটি গ্রামে একটি করে তার মূর্তি তৈরি করে তার অনুসারীরা। তার মুখচ্ছবি আঁকা ডাকটিকিট, ক্রোকারি, পোস্টার ছাপা হয়। এছাড়াও সোভিয়েত সংবাদপত্রের প্রথম পৃষ্ঠায় প্রতিদিন ছাপানো হতো লেনিনের ছবি।

বিশালাকার গাছ

বিশালাকার গাছ

গ্রন্থাগার, রাস্তাঘাট, খামার, যাদুঘর, শহর এবং পুরো অঞ্চলগুলোর নামকরণ করা হয়েছিল তার নামে।কমিউনিজমের পতনের পরে প্রাক্তন সোভিয়েত রাষ্ট্রগুলো লেনিনবাদ থেকে নিজেদের সরিয়ে আনে। লেনিনের মূর্তিগুলো বিকৃত করে, ভেঙে ফেলে কিছু। লেনিনের স্মৃতিসৌধগুলোও ধ্বংস করা হয়েছিল।

মুষ্টিমেয় বেঁচে থাকা স্মৃতিসৌধগুলোর মধ্যে একটি রয়েছে রাশিয়ার ওমস্ক ওব্লাস্টের টিউকলিনস্কের উপকণ্ঠে। এটি একটি বিশাল স্মৃতিসৌধ, এটি এত বড় যে এটি দেখার জন্য আপনাকে আকাশে ভেসে দেখতে হবে। অর্থাৎ প্লেনে করে আপনি এর পুরোটা দেখতে পারবেন।

হিটলারের স্মৃতিসৌধ

হিটলারের স্মৃতিসৌধ

এটি বহু দশক আগে লাগানো পাইন গাছ দিয়ে লেখা লেনিনের নাম। একেকটি অক্ষর ৮২ মিটার লম্বা এবং ৩০০ মিটার পর্যন্ত প্রসারিত। যদিও ট্যুকালিনস্কের গাছগুলো কখন লাগানো হয়েছিল তা কেউ নিশ্চিত নন। রাশিয়ান ফটোগ্রাফার স্লাভা স্টেপনোভ বহু বছর আগে স্যাটেলাইটের ছবিগুলোতে স্মৃতিসৌধটি দেখেছিলেন। সম্প্রতি তিনি ব্যক্তিগতভাবে এই অঞ্চলটি দেখার জন্য যান। সেখান থেকে বহু ছবি তোলেন।

স্টেপানোভোর মতে, ১৯৭০ এর দশকে কমিউনিস্ট ব্যবস্থায় লেনিনকে উৎসর্গ করে এই গাছগুলো লাগানো হয়েছে। একজনকে উৎসর্গ করার প্রমাণ দেয়ার জন্য যখন বহু সোভিয়েত বার্ষিকীর জন্য গাছ লাগানো হয়েছিল। বার্লিনে এমনই আরেকটি স্মৃতিচিহ্ন রয়েছে। যেটি বার্লিন থেকে ৬০ মাইল উত্তরে অ্যাডলফ হিটলারের স্মরণে একটি পাইন বন তৈরি করা হয়।

উপর থেকেই দেখা যায় এই চিত্র

উপর থেকেই দেখা যায় এই চিত্র

এখানে নাৎসি সমর্থকরা পাইন গাছগুলো লাগিয়েছিল। যদিও ২০০০ সালে গাছগুলো কেটে ফেলা হয়।আপনিও কিন্তু বাড়ির বাগানে এমন বভন্ন রঙের ফুল বা পাতাবাহার দিয়ে নিজের মাণ লিখতে পারেন। আবার প্রিয় মানুষের স্মরণে করতে পারেন এমন একটি বাগান।

সূত্র: অ্যামিউজিংপ্লানেটস

পাঠকের মতামত

Comments are closed.