267637

সিজারের দাগ দূর হবে অবিশ্বাস্যভাবে! জানুন ঘরোয়া ছয় পদ্ধতি

বর্তমানে বেশিরভাগ ডেলিভারিই করা হয় সিজারের মাধ্যমে। কেউ ইচ্ছা করে আর কেউ অনিচ্ছাকৃত সিজার করে থাকেন। যদিও সিজার করা শারীরিক ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই একান্ত বাধ্য না হলে সিজান না করাই ভালো। নিশ্চয়ই জানেন ডেলিভারির পর পেটে সিজারের দাগ রয়েই যায়। যা দেখতেও বেশ বাজে দেখায়।

ডেলিভারির পর সিজারের দাগ দূর করতে বিশেষজ্ঞরা নানা চিকিৎসার কথা বলে থাকেন। এর মধ্যে একমাত্র মাসাজই বাড়িতে করা যায়। তবে মাসাজের আগে মাথায় রাখতে হবে চিকিৎসকের বেশ কিছু পরামর্শ। কখন করবেন ও কীভাবে করবেন তা এক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ। চলুন জেনে নেয়া যাক এই সম্পর্কে-

সিজারের ক্ষত শুকোনোর পরে

সিজারের ক্ষত শুকোনোর আগে দাগ দূর করার কথা মাথায় আনাই উচিত নয়। ক্ষত না-শুকালে মাসাজ বা অন্য যে কোনো চিকিৎসাই ক্ষতিকারক হতে পারে মায়ের জন্য। একমাত্র চিকিৎসক যদি বলেন ক্ষত সম্পূর্ণ শুকিয়ে গেছে, তখনই দাগ দূর করার উপায় নিয়ে আলোচনা করুন।

একভাবে করুন

মাসাজ সব সময় ক্লকওয়াইজ বা অ্যান্টিক্লকওয়াইজ করতে হয়। তবে হ্যাঁ, যে কোনো একদিকেই সবসময় করা উচিত। একই সঙ্গে দু’দিকেই মাসাজ করা উচিত নয়। মাসাজ যখনই করবেন, তখন শুয়ে থাকাই শ্রেয়। বসে মাসাজ করালে সিজারের পুরো অংশে আঙুলের চাপ সমানভাবে পড়ে না। মাসাজের প্রভাব সিজার হওয়া অংশের সর্বত্র সমানভাবে পৌঁছানো চাই।

ব্যথা হলে মাসাজ বন্ধ

সিজার হওয়া অংশের বাইরের ঘা শুকিয়ে গেলেও ভেতরের অংশ শুকাতে কিছুদিন সময় নেয়। তাই মাসাজের সময় ব্যথা অনুভূত হতেই পারে। ব্যথা অনুভব করলে মাসাজ করা বন্ধ রাখুন। কিছুদিন পর আবার মাসাজ করুন। দেখে নিন ব্যথা কমেছে কি না।

জেনে রাখুন, সিজারের দাগ দূর করতে অনেক রকম উপায় আবিষ্কৃত হলেও সিজারের দাগ সম্পূর্ণভাবে দূর করা অসম্ভব। সিজারের দাগ চিরকালের মতো অল্প হলেও থাকবেই। তবে এই দাগ যতটা সম্ভব কমানো যায়। সিজারিয়ান ডেলিভারির পরে কয়েকমাস মায়ের অত্যন্ত যত্নে থাকা জরুরি। তাই মাসাজের যে সব উপরকণ বাজারে মেলে তার সব ক’টি মায়ের জন্য ঠিক নাও করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা এক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট ঘরোয়া উপকরণের কথা বলেন, যা বেশ কার্যকরী। চলুন জেনে নেয়া যাক সেগুলো-

অ্যালোভেরা জেল

মাসাজ করার জন্য অ্যালোভেরা জেল সবচেয়ে ভালো উপকরণ। পোড়া ক্ষতই হোক বা অপারেশনের দাগ— অ্যালোভেরার শাঁস সবেতেই সমান উপকারী। বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রাকৃতিক অ্যালোভেরাই সদ্য হওয়া মায়ের ত্বকের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ। যদি একান্তই দোকান থেকে কিনতে হয়, তবে দেখে নিন উৎপাদনকারী সংস্থার পক্ষ থেকে প্রোডাক্টটিকে অর্গানিক সার্টিফিকেট দেয়া হয়েছে কি না। তবে সবচেয়ে ভালো উপায় হল বাড়িতে অ্যালোভেরার চারা লাগিয়ে নেোয়া।

ভিটামিন-ই তেল

ত্বকের নিচে কোলাজেন প্রোটিনের বিভাজন ঘটে। এই বিভাজনে সাহায্য করে ভিটামিন-ই। তবে এই নিয়ে অনেক বিশেষজ্ঞদের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন ভিটামিন-ই তেল মাসাজ করলে দেরিতে হলেও কোলাজেনের উপর একটি প্রভাব পড়ে। যার ফলে কোলাজেনের বিভাজন শুরু হয়। কোলাজেনের বিভাজনই ত্বকের নিচে নতুন স্তর তৈরি করতে সাহায্য করে। যার ফলে সিজারের দাগ ধীরে ধীরে মিলিয়ে যায়।

লেবুর রস

দাগ মিলিয়ে যেতে লেবুর ভূমিকা বাকিদের থেকে আলাদা। অর্থাৎ এটি কোলাজেনকে ভাঙতে সাহায্য করে না। বরং এটির কাজ অনেকটা প্রাকৃতিক ব্লিচের মতো। নিয়মিত লেবুর রস প্রয়োগ করলে সিজারের দাগ ব্লিচের জন্য হালকা হয়ে আসে। তুলায় করে রোজ লেবুর রস নিয়ে দাগের অংশে লাগান। ২০ মিনিট অপেক্ষা করার পর তা ধুয়ে ফেলুন । বিশেষজ্ঞরা বলেন, সবসময় প্রাকৃতিক লেবুই ব্যবহার করা উচিত।

আলুর রস

আলুর রসও লেবুর রসের মতোই কাজ করে। ব্রণ হলে অনেকেই আলু কেটে ব্রণের উপর তা বারবার বোলান। এতে আলুর রস সেখানে ছড়িয়ে পড়ে‌। আলুর রসও একটি প্রাকৃতিক ব্লিচ। যা দাগকে হালকা করতে সাহায্য করে। সিজারের দাগের ক্ষেত্রেও নিয়মিত আলুর টুকরো কেটে ব্যবহার করুন। এবার ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন।

টি ব্যাগ

চা-এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সিজারের দাগ হালকা করতে খুব উপকারী। গ্রিন টি-র ব্যাগ গরম পানিতে চুবিয়ে সরাসরি সিজার হওয়া অংশে রাখুন। প্রতিদিন তিন থেকে চারবার ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় ধরে এটি করলে সিজারের দাগ ধীরে ধীরে হালকা হতে থাকে।

মধু

সর্দি-কাশি, ব্রণ বা পোকার কামড় সবেতেই মধু অত্যন্ত কার্যকরী। এসবের পাশাপাশি সিজারের দাগ দূর করতেও এর ভূমিকা কম নয়। মধু সিজার হওয়া অংশের গাঢ় দাগ দূর করতে সাহায্য করে। তাছাড়াও এটি অ্যান্টিসেপটিক প্রকৃতির উপাদান হওয়ায় এর থেকে সিজারের অংশে কোনো সংক্রমণের আশঙ্কা নেই। মধুর চটচটে ভাবে অস্বস্তি না-হলে সারাদিনই ওই অংশে মধু লাগিয়ে রাখতে পারেন।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.