266111

মুরগির ডিমের কুসুমের রং গাঢ় সবুজ হওয়ার রহস্য

শরীরে প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে তালিকার শীর্ষে আছে ডিম। ডিম খেতে পছন্দ করেন না এমন মানুষ কমই আছেন। সহজলভ্য এই খাবারটি নানা সুস্বাদু পদে রান্না করে খাওয়া হয়।

সাদার মধ্যে হলদেটে কুসুমওয়ালা ডিমের মাহাত্ম্যই আলাদা। তবে যদি দেখেন ডিমের কুসুমের রং হলুদের বদলে হয়ে গিয়েছে সবুজ, তখন নিশ্চয় চোখ কপালে উঠবে! শুনতে অবাক লাগলেও এমন ঘটনাই ঘটেছে কেরলাতে।

সেখানকার একটি পোলট্রি ফার্মের মুরগি যে ডিম পাড়ছে তার কুসুমের রং ঘন সবুজ। ডিমের কুসুমের রং সাধারণত হয় হলুদ। ক্ষেত্রবিশেষে কমলা কুসুমও দেখা যায়। তাই বলে সবুজ কুসুম? খবরটি প্রথমবার শুনেই ঘাবড়ে গিয়েছিলেন মালাপ্পুরমের পোলট্রি ফার্মের মালিক এ কে শিহাবুদ্ধেন। তিনি বিশ্বাসই করতে পারছিলেন খবরটি।

শেষ পর্যন্ত নিজের চোখে দেখে তবেই বিশ্বাস করেন। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করে পোলট্রির ছয়টি মুরগি বের করা হয়, যারা এমন সবুজ ডিম পাড়ছে। এর আগে মুরগির সবুজ ডিম কেউ দেখেনি। এমনকি এমন কথা শোনাও যায়নি। তাই সবার মধ্যে সংশয় দেখা দেয় যে, এই ডিমগুলো আদৌ খাওয়া যাবে কিনা।

ফার্মের মালিক ও তার মুরগিগুলো

ফার্মের মালিক ও তার মুরগিগুলো

এগুলো কি বিষাক্ত? এমন অনেক প্রশ্ন ঘুরে ফিরে সবার মনে। এমনিতে সাধারণ ডিমের মতোই দেখতে। তবে সিদ্ধ করার পর ছুরি দিয়ে কাটলেই ভিতর থেকে বেরিয়ে আসে সবুজ কুসুম। মুরগিগুলোকে ডাক্তার দেখিয়েও কোনো লাভ হয়নি। উপায়ন্তর না দেখে শিহাবুদ্ধেন একটি পদক্ষেপ নেন।

সবুজ ডিমগুলো না ফাটিয়ে সেগুলোয় তা দিয়ে নতুন মুরগি করার বন্দোবস্ত করেন তিনি। নতুন মুরগি জন্মায়ও। সেই মুরগির ডিমগুলোর রংও সবুজ। গত নয়মাস ধরে এই একই দৃশ্য দেখছে ওই পরিবার। শিহাবুদ্ধেন এই সবুজ ডিমের ছবি ও ভিডিও শেয়ার করেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এরপরই হয় রহস্যের সমাধান।

কেরালার ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস ইউনিভার্সিটির (কেভিএএসইউ) বিজ্ঞানীরা আসেন শিহাবুদ্ধেনের খামারে। তারা গবেষণার জন্য একটি মুরগি এবং কিছু ডিম সংগ্রহ করে নিয়ে যান। এরপর বিস্তর গবেষণার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. এস শঙ্করালিংগাম জানান, কোনো জিনগত বিভ্রান্তির কারণে এই ঘটনাটি ঘটেনি।

এদের দেয়া খাবারেই ছিল কিছু সমস্যা। মুরগিগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়া খাবার খাওয়ানো হয়। তারপর থেকে হলুদ রঙের কুসুমওয়ালা ডিম দিতে শুরু করে মুরগিগুলো। প্রফেসর জানান মুরগির ত্বকে একটি সবুজ রঞ্জক পদার্থ আবিষ্কার করেন তারা।

তবে শিহাবুদ্ধেন জানান, তিনি ওই মুরগিদের অন্য কোনো খাবার খেতে দিতেন না। যা বাকি মুরগি খেত, ওরাও তাই খেত। তবে ফার্মের আশপাশে কুরুনথোটি জাতীয় ভেষজ গাছ রয়েছে কয়েকটি। মুরগিগুলো সেটি খেয়ে থাকতে পারে। তার ফলে ডিম সবুজ হতে পারে বলেও জানান শিহাবুদ্ধেন।

সূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ

পাঠকের মতামত

Comments are closed.