ভারতে পঙ্গপাল মারতে ১০০০ ‘জলকামান’!
পঙ্গপাল মারতে এবার জলকামান ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। তার জন্য ৮৯টি দমকলের ইঞ্জিনের মাধ্যমে স্প্রে-সহ বিপুল পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে দেশটির কেন্দ্রীয় কৃষি ও কৃষিকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তরফে জানানো হয়েছে।
এই জলকামানে কীটনাশক ব্যবহার করে পঙ্গপাল দমন করা সম্ভব হবে বলে তারা মনে করছেন। অন্যদিকে দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে আরও ৯শ’টি জলকামান প্রস্তুত রাখা হয়েছে পঙ্গপাল দমনের জন্য।
জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরেই পশ্চিম ও মধ্য ভারতের পাঁচ রাজ্য— রাজস্থান, পঞ্জাব, গুজরাট, মহারাষ্ট্র ও মধ্যপ্রদেশে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কোটি কোটি মরুপতঙ্গ পঙ্গপাল। দেশটির কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, বর্তমানে এই পতঙ্গবাহিনীর দখলে রয়েছে রাজস্থানের ২০টি, মধ্যপ্রদেশের ৯টি, গুজরাতের দু’টি এবং পঞ্জাবের একটি জেলা। মহারাষ্ট্রের নাগপুরে বিপুল পরিমাণে কমলালেবুর ক্ষতি হয়েছে বলে সে রাজ্যের কৃষি দফতর জানিয়েছে। তাই এবার সেই পঙ্গপালের বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করে ময়দানে নামছে ভারতের কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রণালয়।
বুধবার মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, দমকলের ৮৯টি ইঞ্জিন থেকে কীটনাশক স্প্রে করার পাশাপাশি একাধিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১২০টি সার্ভে যান মোতায়েন করা হয়েছে। এই গাড়িগুলো পঙ্গপালের গতিবিধির উপর নজরদারি চালাবে এবং সম্ভাব্য গতিপথ সম্পর্কে অনুসন্ধান চালাবে। তারপর সেই অনুযায়ী সতর্কবার্তা দেওয়া হবে।
দমকলের গাড়ি ছাড়াও সাধারণ ৪৭টি গাড়ি থেকেও কীটনাশক স্প্রে করা হবে বলে জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া একইভাবে কীটনাশক স্প্রে করার জন্য আরও ৮১০টি ট্রাক্টরও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে স্প্রে করা যানের সংখ্যা প্রায় ১ হাজার। প্রয়োজন অনুযায়ী এই সংখ্যা আরো বাড়ানো হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে দেশটির কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে।
তবে কীটনাশক স্প্রে করার অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখকর হয়নি মহারাষ্ট্রে। বরং পতঙ্গ আরও বেড়েছে মহারাষ্ট্রে। সে রাজ্যে কীটনাশক স্প্রে করতেই দুটি দলে ভাগ হয়েছে পঙ্গপাল। একটি দল নাগপুরের পারসিওনির দিকে চলে গেছে। অন্য দলটি আছে ভান্ডারা এলাকায়। ফলে পঙ্গপাল দলটিকে কাবু করা আরও মুশকিল হয়ে পড়েছে রাজ্যের কৃষি কর্মকর্তাদের।
ভারতের কেন্দ্রীয় কৃষি দফতরের মতে, সাধারণত দিনের বেলা দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয় পঙ্গপালরা। যাত্রাপথে উজাড় করে মাঠের ফসল। কিন্তু রাতে বিশ্রাম নেয় এই পতঙ্গের দল। তাই রাতে বিশ্রামের সময় স্প্রে করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলেও কেন্দ্রের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে।
সূত্র: আনন্দবাজার