265609

সমুদ্র উপরিভাগের তাপমাত্রা বাড়ছে

সিডর, আইলা, রোয়ানু কিংবা আম্ফান—একের পর ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশসহ উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে আঘাত হেনেছে। বঙ্গোপসাগর উপকূলে গত ৬০ বছরে প্রায় ৪ গুণ বেড়েছে ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা। প্রতিটি ঘূর্ণিঝড় স্বকীয়তা নিয়েই এগিয়েছে। কোনোটা গতি বা জলোচ্ছ্বাসের দিক দিয়ে এগিয়ে ছিল, আবার অনেক ঘূর্ণিঝড় ব্যাপকত্বে।
সমুদ্রের পানির উপরিভাগের তাপমাত্রা বাড়ার কারণেই এসব দুর্যোগের সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ গবেষক ড. বিশ্বজিৎ নাথ। তার মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বার বার ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে উপমহাদেশের দেশগুলোকে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা বলছে, ১৭৯৭ থেকে ২০২০ পর্যন্ত ২২৩ বছরে বঙ্গোপসাগর উপকূলে আঘাত হেনেছে ৭৮টি ঘূর্ণিঝড়। এর মধ্যে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত ১৮১ বছরে যেখানে ঘূর্ণিঝড় হয়েছিল ৩০টি এবং এর পরের ৬০ বছরে হয়েছে ৪৮টি।

গত এক বছরেই আঘাত হেনেছে ৩টি ঘূর্ণিঝড়। সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি যার শক্তিও পৌছেঁছে ভয়াবহ মাত্রায়। যেমন- বুলবুল ও সর্বশেষ আম্ফান কতটা ক্ষতি করেছে তা সবারই জানা। এসব ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথে ছিল স্বকীয়তা।

সমুদ্রের পানির উপরিভাগের তাপমাত্রা ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস কিংবা তার বেশি থাকলে নিম্নচাপ তৈরির সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাপমাত্রা যত বাড়ে সমুদ্রের পানি ততই বাষ্পীভূত হয়। এতে করে নীচের স্তরে শূন্যস্থান তৈরি হয়।

শূন্যস্থান তৈরির ফলে বাষ্পীভবনের হার বেড়ে যায়, আশপাশের গরম বাতাসকেও আকর্ষণ করে। সেই বাতাসও উপরের দিকে উঠতে থাকে। তা পরবর্তীতে ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শে এসে তৈরি হয় মেঘপুঞ্জ। মেঘপুঞ্জের কেন্দ্রস্থলের বায়ুপ্রবাহের তীব্রতাই বলে দেয় কোনটা নিম্নচাপ, কোনটা গভীর নিম্নচাপ আর কোনটা ঘূর্ণিঝড় হবে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ গবেষক ড. বিশ্বজিৎ নাথ বলেন, বঙ্গোপসাগরে এভারেজে তাপমাত্রা ২.৭ সেন্টি গ্রেড বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা একটা এলার্মিং বিষয়। আমাদের জন্য ভয়ংকর বিষয়।

জলবায়ুবিদ ড. আইনুন নিশাত বলেন, উপকূল অঞ্চলে বন্যা, খরা, জলোচ্ছ্বাস, শিলা বৃষ্টি বাড়তে পারে। এসব আমরা ২০ বছর ধরে বলবো। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও বনায়নের হার কমায় এই আশঙ্কা।

সূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ

পাঠকের মতামত

Comments are closed.