265524

করোনা ধুমপায়ীদের জন্য বেশি ক্ষতিকর

জীবনের নানা অধ্যায় পার করেছি। আব্বার চাকরির কারণে বেশকিছু জেলায় ছোটবেলা কেটেছে। তবে কৈশোর থেকে আমি পুরোপুরি ঢাকার মানুষ। নানা বয়স পার করেছি ঢাকায়। বয়োসন্ধি থেকে যুবক। এখন সেই বয়সও পার করে এসেছি। আর কয়েক বছর পরই অবসর জীবনে চলে যাবো। আমার জীবনে একটা অভিজ্ঞতাই হয়নি। তা হলো ধুমপান। আমি কখনোই এই অভ্যাসে জড়াইনি।

আমার আব্বা-আম্মাও এ বিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন। তাই কখনো এ নিয়ে তাদের কিছু বলতে হয়নি। সেই স্কুল থেকেই দেখেছি অনেক বন্ধু ধুমপান শুরু করেছে। আর কলেজ জীবন তো ছিলো আরো স্বাধীন। কিন্তু আমি তবু ধুমপান থেকে দূরে ছিলাম।

এটা আমার কাছে গৌরবের ব্যাপারই মনে হয়। অনেক বয়সে অনেক বন্ধু কতো অনুরোধ করেছে, কতো ব্যঙ্গ করেছে এ নিয়ে। আমি তবু অটল ছিলাম- আমি ধুমপানে জড়াবো না। পরবর্তীতে পত্রিকায় কাজ করলেও এ বিষয়ে আমার কোনো আগ্রহ সৃষ্টি হয়নি।

গত কয়েকদিনে ফেসবুকে দেখেছি, অনেকেই ধুমপানের পক্ষে কথা বলছেন। তারা নানাভাবে জ্ঞানী-গুণী জন। কিন্তু বিড়ি-সিগারেটের পক্ষে তাদের কথাবার্তা আমার মোটেই ভালো লাগেনি। এ বিষয়টি এখন আলোচতি হওয়ার কারণ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিড়ি-সিগারেট কারখানা ও বিক্রি বন্ধে শিল্প মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করে চিঠি দিয়েছিলো। কারণ এর মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়ায়।

এছাড়া করোনা ধুমপায়ীদের জন্য বেশি ক্ষতিকর। যদিও শিল্প মন্ত্রণালয় এ অনুরোধ আমলে নেয়নি। তবে আমি মনে করি এটা একটা শুরু। একসময় বিড়ি-সিগারেট তৈরি বন্ধ হবে। উঠে যাবে ধুমপান। সেই দিনটি দেখে যেতে চাই আমি।

অগ্রগতি অবশ্য অনেক আছে। সত্তর-আশির দশকে পত্রিকায় সিগারেটের বিজ্ঞাপন দিতো। সেটা বন্ধ হয়েছে। নব্বই দশকে বেসরকারি চ্যানেলে সিগারেটের বিজ্ঞাপন চলতো, তা এখন আর নেই। নাটক-সিনেমাতেও আগে যেভাবে ধুমপান করার দৃশ্য থাকতো তা কমে এসেছে। থাকলেও সতর্কতামূলক লেখা জুড়ে দেয়া হয়।

বিড়ি-সিগারেটের কোনো ধরনের প্রচারণার এখন নেই। এমনকি প্যাকেটের গায়ে ক্ষতিকর দিক আরো জোরালোভাবে তুলে ধরা হচ্ছে। এসব বিষয় অবশ্যই অগ্রগতি। এভাবেই বন্ধ হবে ধুমপান। আসুন সবাই এই নীরব ঘাতক থেকে দূরে থাকি।

লেখক: হেড অব পাবলিক রিলেশনস অ্যান্ড মিডিয়া ডিভিশন, সিটি ব্যাংক

পাঠকের মতামত

Comments are closed.