265348

কোন ডালের পুষ্টিগুণ বেশি?

বাজারে বিভিন্ন ধরনের ডাল পাওয়া যায়। এক এক ডালের স্বাদ এক রকম। দৈনন্দিন জীবনে খাওয়ার পাতে ডাল ছাড়া ভাবাই যায় না, আমাদের মধ্যে অনেকেই ডাল খেতে পছন্দ করি, অনেকের আবার বিশেষ কোনও ডালের প্রতি আসক্তি থাকতে পারে। প্রোটিনে ভরপুর এই খাদ্য আমাদের খাদ্য তালিকায় থাকবে না এমনটা বোধহয় আমরা কল্পনাও করতে পারি না। শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পুষ্টি, ভিটামিন ও খনিজ আমরা এই ডাল থেকেই পেয়ে থাকি। আপনার শরীরকে সুস্থ সবল রাখতে ডালের গুরুত্ব অপরিসীম।

ডাল জাতীয় খাদ্য আমরা বিভিন্ন ভাবে খেয়ে থাকি। এক একজনের পছন্দের তালিকায় এক এক রকম ডাল জায়গা জুড়েছে, তবে আপনি যে ডালই পছন্দ করুন না কেন, তার পুষ্টি গুণ কতটা সেটা অবশ্যই যাচাই করে নেবেন। বাজারে সাধারণত ৫ রকম ডাল পাওয়া যায়। সেই গুলো সম্পর্কে একটু জেনে নিন। তারপর আপনিই পছন্দ করুন কোন ডাল খাবেন।

মুগ ডালের পুষ্টি গুণ:

সাধারণটি বাজারে দুই প্রকার মুগ ডাল পাওয়া যায়, একটা খোসা ছাড়া হলুদ রঙের আর একটি খোসা সমেত সবুজ রঙের। এই ডাল খুব সহজে হজম হয়ে যায়, যারা নিজেদের ওজন নিয়ে খুবই সতর্ক, তাদের জন্য এই ডাল abshyi কাজ করে। এই ডাল প্রোটিন, প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড, ফাইবার ও ভিটামিন বি১ -এ ভরপুর।

মুগ ডালের উপকারিতা:

– ওজন কমাতে সাহায্য করে।

– গর্ভবতী মহিলাদের জন্য মুগডাল খুবই উপকারী।

– শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত কোলেস্টেরল কম করতে সাহায্য করে মুগ ডাল।

মুসুরি ডাল:

বেশির ভাগ রান্নাঘরেই বোধহয় এই ডালের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিন, অ্যামিনো অ্যাসিড, ফাইবার, পটাশিয়াম, আয়রন, ভিটামিন বি১ প্রভৃতি প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় এই ডালের মধ্যে। লাল রঙের মুসুরি দলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও প্রোটিন থাকে। মাত্র এক কাপ মুসুর ডালে ২৩০ ক্যালোরি, প্রায় ১৫ গ্রাম ফাইবার এবং ১৭ গ্রাম প্রোটিন থাকে।

মুসুরি ডালের উপকারিতা:

– মুসুরি ডাল পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে, সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

– শরীরে পটাশিয়ামের ঘাটতি থাকলে অবশ্যই মুসুরি ডাল খান, কারণ এই ডাল পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে।

– শরীরে জমে থেকে কোলেস্টেরল দূর করে, শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

অড়হর ডাল:

সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় অড়হর ডাল, এই ডাল বেশির ভাগ মানুষই খুবই পছন্দ করে। বিভিন্ন ভাবে খুবই সুস্বাদু এই ডাল প্রস্তুত করা হয়। এই ডালে আয়রন, ফলিক অ্যাসিড, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি এবং পটাসিয়াম থাকে। আপনার শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখতে সাহায্য করে এই ডাল।

অড়হর ডালের উপকারিতা:

– অড়হর ডালে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।

– নিয়মিত ফাইবার গ্রহণ করলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়, স্ট্রোক এবং ওজনও নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

– এতে ফলিক অ্যাসিড পাওয়া যায়। যা মহিলাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।

– এই অড়হর কার্বোহাইড্রেটের একটি ভাল উৎস। এর সাহায্যে দেহর শক্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।

বিউলির ডাল:

এই ডাল বাজারে দুই রকম রূপে পাওয়া যায়, একটি খোসা ছাড়া সাদা রঙের, আর একটি কালো। বিভিন্ন স্থানে এটি কালো ডাল হিসাবেও প্রসিদ্ধ। পাঁপড় তৈরির কাজেও ব্যবহৃত হয় এই ডাল।ডাল মাখানি থেকে তড়কা এবং রান্নাতেই ব্যবহৃত হয় এই ডাল।পুষ্টিতে ভরা এই ডাল যেমন সুস্বাদু তেমনি বিভিন্ন গুণে ভরপুর।

বিউলির ডালের উপকারিতা:

– বিউলির ডালে ভাল পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায়।

– পেটের জ্বালা দূর করতে উপকারী।

– আপনার ত্বককে চকচকে ও উজ্জ্বল করে তোলে এই ডাল।

ছোলার ডাল:

ছোলার ডালে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং প্রোটিন পাওয়া যায়। ছোলার ডাল আপনার শরীরকে সুস্থ রাখার সঙ্গে সঙ্গে পর্যাপ্ত শক্তি সরবরাহে সহায়ক। ছোলার ডাল খাওয়া যুবকদের জন্য বেশি উপকারী বলে মনে করা হয়। এতে প্রচুর প্রোটিন রয়েছে, যা পেশির গঠনে সাহায্য করতে পারে।

ছোলার ডালের উপকারিতা:

– ছোলার ডাল ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী হিসাবে বিবেচিত হয়।

– এতে কোলেস্টেরলের পরিমাণ খুব কম।

– ছোলার ডাল খাওয়া রক্তাল্পতা, জন্ডিস, কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য খুব উপকারী বলে বিবেচিত হয়।

সূত্র: ঢাকা টাইমস

পাঠকের মতামত

Comments are closed.