260602

‘হিজড়া’ নামের অবসান ঘটিয়ে আজ তিনি সফল নৃত্যশিল্পী

ডেস্ক রিপোর্ট : একজন নামকরা নৃত্যশিল্পী ও কোরিওগ্রাফার তিনি। পুরুষ হয়ে জন্ম নিলেও নারীর পরিচয় দিতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন সাহসী এই ব্যক্তি। কারণ তার মনে হয় এটি শরীরের সঙ্গে ন্যায় বিচার করা হবে না। যেহেতু তার মধ্যে পুংলিঙ্গ এবং স্ত্রীলিঙ্গ উভয় বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

ইচ্ছা করলেই মানুষ অসাধ্যকে সাধন করতে পারে। কঠিন অবস্থার মুখোমুখি হয়েও সাফল্যকে ছিনিয়ে আনতে পারে। তেমনি একজন নারী রিয়ান্তো। জাভার বান্যুমাস অঞ্চলের লেঙ্গার লানাং নাচ করেন তিনি। লেঙ্গার লানাং হলো একটি ইন্দোনেশিয় নাচ যেখানে সব লিঙ্গের মানুষের সংমিশ্রণ দেখা যায়।

এ পর্যন্ত ৩০ টিরও বেশি দেশে পারফর্ম করেছে। তার জীবন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ইন্দোনেশিয়ায় একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ হয়েছে। চলচ্চিত্রটির শুরুতে নিষিদ্ধ হলেও শেষ পর্যন্ত ইন্দনেশিয়া থেকে অস্কারে গিয়েছে সেটি। লেঙ্গার লানাং নাচটি সাধারণত পুরুষরা পারফর্ম করে থাকে। এটি বান্যুমাসের একটি স্বতন্ত্র শিল্প। তবে নাচ পরিবেশনের সময় পুরুষেরা নারীর বেশ ধরেন।

অতীতে স্থানীয় আচার অনুষ্ঠানে এই নাচ পরিবেশন হতো। সেখানে পারফর্মারদের সবাই পুরুষই ছিলেন। লেঙ্গার নাচ পারফর্ম করার সময় শিল্পী তার শরীর মেলে ধরেন। যেন মঞ্চে পুরুষ এবং নারীর বৈশিষ্ট্যের মধ্যে একটি নিখুঁত মিশ্রণ অর্জন করা যায়। রিয়ান্তোর কাছে এটি একটি নিখুঁত ফিউশান। রিয়ান্তো বলেন, আমি অর্থের কারণে লেঙ্গার লানাং নর্তকী হওয়ার পথ বেছে নেইনি। আমার দেহের আধ্যাত্মিক চাহিদা পূরণ করতে আমি নাচি।

এটা শুধুমাত্র পারফর্ম করা নয়, এটা আমার জীবন। আমি অনুভব করি আমি একজন ল্যাঙ্গার লানাং নৃত্যশিল্পী। ছোটবেলায় তিনি অনেকের অবজ্ঞা সহ্য করেছেন। মানুষ বলতো, তুমি ছেলে হয়েও মেয়েদের মতো চলাফেরা কর, হিজড়া ইত্যাদি। রিয়ান্তো আশা করেন এই নাচ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য টিকিয়ে রাখা যাবে।

এমন কিছু মানুষও আছে, যারা এই শিল্পকে গ্রহণ করেছে এবং সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। তারা এই লেঙ্গার নাচ উপভোগ করে। তবে এমনো মানুষ আছে, যাদের চিন্তা-ভাবনা সংকীর্ণ। তারা এই শিল্পীদের হিজড়া হিসেবে দেখে এবং যারা মনে করে, ইন্দোনেশিয়ায় এই শিল্পীদের কোনো জায়গা নেই।

সূত্র: বিবিসি

পাঠকের মতামত

Comments are closed.