257553

ঘূর্ণিঝড়ের কোন বিপদ সংকেতের কী মানে

ঘূর্ণিঝড় এলে নদী ও সমুদ্রবন্দরগুলোতে ১ থেকে ১১ পর্যন্ত সতর্ক সংকেত দিতে দেখা যায়। এই সংকেতগুলোর প্রতিটির পৃথক পৃথক অর্থ রয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা গবেষকরা বলছেন, সংকেতগুলো তৈরি করা হয়েছে শুধু সমুদ্রবন্দর এবং নদীবন্দরকে লক্ষ্য করে।

সমুদ্রবন্দরের জন্য ১১টি সংকেত
১ নং দূরবর্তী সতর্ক সংকেত : জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার পর দুযোগপূর্ণ আবহাওয়া সম্মুখীন হতে পারে। দূরবর্তী এলাকায় একটি ঝড়ো হাওয়ার অঞ্চল রয়েছে, যেখানে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬১ কিলোমিটার, যা সামদ্রিক ঝড়ে পরিণত হতে পারে।

২ নং দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত : দূরে গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিমি। বন্দর এখনই ঝড়ে কবলিত হবে না। তবে বন্দর ত্যাগকারী জাহাজ পথিমধ্যে বিপদে পড়তে পারে।

৩ নং স্থানীয় সতর্ক সংকেত : বন্দর ও বন্দরে নোঙ্গর করা জাহাজগুলো দুর্যোগ কবলিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্দরে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে এবং ঘূর্ণি বাতাসের একটানা গতিবেগ ৪০-৫০ কি.মি. হতে পারে।

৪ নং স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত : বন্দর ঘূর্ণিঝড় কবলিত। বাতাসের সম্ভাব্য গতিবেগ ঘণ্টায় ৫১-৬১ কি.মি.। তবে ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার মত তেমন বিপদজনক অবস্থা এখনও আসেনি।

৫ নং বিপদ সংকেত : বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার ঝঞ্জাবহুল এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে নিপতিত। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিমি। ঝড়টি বন্দরকে বাম দিক রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

৬ নং বিপদ সংকেত : বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার ঝঞ্জাবহুল এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে নিপতিত। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিমি। ঝড়টি বন্দরকে ডান দিক রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

৭ নং বিপদ সংকেত : বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার ঝঞ্জাবহুল এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে নিপতিত। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিমি। ঝড়টি বন্দরকে উপর বা নিকট দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

৮ নং মহাবিপদ সংকেত : বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঝঞ্জাবিক্ষুব্ধ ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। ঝড়ো বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিমি বা তার ঊর্ধ্বে হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে বাম দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।

৯ নং মহাবিপদ সংকেত : বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঝঞ্জাবিক্ষুব্ধ ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। ঝড়ো বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিমি বা তার ঊর্ধ্বে হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।

১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত : বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঝঞ্জাবহুল ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। ঝড়ো বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিমি বা তার ঊর্ধ্বে হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরের উপর বা নিকট দিয়ে উপকূল অতিক্রম করবে।

১১ নং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সংকেত : আবহাওয়া বিপদ সংকেত প্রদানকারী কেন্দ্রের সাথে সকল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং স্থানীয় কর্মকর্তা আবহাওয়া অত্যন্ত দুযোগপূর্ণ বলে মনে করেন।

নদীবন্দরের জন্য ৪টি সংকেত
১ নং নৌ সতর্কতা সংকেত : বন্দর এলাকা ক্ষণস্থায়ী ঝড়ো আবহাওয়ার কবলে নিপতিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিমি গতিবেগের কালবৈশাখী ক্ষেত্রেও এই সংকেত প্রদর্শিত হয়। এ সংকেত আবহাওয়ার চলতি অবস্থার উপর সতর্ক নজর রাখারও তাগিদ দেয়।

২ নং নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত : বন্দর এলাকা নিম্নচাপের সমতূল্য তীব্রতার একটি ঝড়, যার গতিবেগ ঘণ্টায় অনূর্ধ্ব ৬১ কিমি. বা একটি কালবৈশাখী ঝড়, যার বাতাসের গতিবেগ ৬১ কিমি. বা তদুর্ধ্ব। নৌযান এদের যে কোনটির কবলে নিপতিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ৬৫ ফুট বা তার কম দৈর্ঘ বিশিষ্ট নৌযানকে দ্র্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হবে।

৩ নং নৌ বিপদ সংকেত : বন্দর এলাকা ঝড়ে কবলিত। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ একটানা ৬২-৮৮ কিমি. পর্যন্ত গতিবেগের একটি সামুদ্রিক ঝড় সহসাই বন্দর এলাকায় আঘাত হানতে পারে। সব নৌযানকে অবিলম্বে নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণ করতে হবে।

৪ নং নৌ-মহাবিপদ সংকেত : বন্দর এলাকা একটি প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার সামুদ্রিক ঝড়ে কবলিত এবং সহসাই বন্দর এলঅকায় আঘাত হানবে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিমি. বা তদুর্ধ্ব। সব প্রকার নৌযানকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে হবে।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.