255008

উচ্চরক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে ওষুধি গুণ সম্পন্ন বিলিম্বি

ডেস্ক রিপোর্ট : বিলিম্বি কামরাঙ্গা গোত্রের ফল। এর স্বাদ ও গুণ অনেকটা কামরাঙ্গার মতোই। বাংলা নাম : বিলিম্বি। ইংরেজি নাম : Bilimb (বিলিম্বি)। বৈজ্ঞানিক নাম : Averrhoa bilimbi (এভারোয়া বিলিম্বি)। বিলিম্বি ইংরেজিতে Cucumber tree বা Tree sorrel নামেও পরিচিত।

বিলিম্বি দেখতে অনেকটা পটলের মতো, তবে আরো ছোট। ফল ৩-৬ সে.মি. পর্যন্ত বড় হয় এবং রং উজ্জ্বল, হালকা সবুজ। বিলিম্বি গাছে প্রচুর ফল আসে এবং ধরে খুবই অদ্ভুতভাবে। গাছের ডালে তো বটেই, কাণ্ড ঘিরেও ফল ধরে। গাছ খুব বেশি বড় হয় না, ৫-১০ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়। পাতাগুলো কামরাঙ্গার মতোই। নিয়মিত পাতা ছেটে ও ডালপালা পানি দিয়ে ভিজিয়ে রাখলে সারা বছরই এ গাছ থেকে ফল পাওয়া যায়। গাছে বেশি ফুল ফোটে ফেব্রুয়ারিতে এবং মোটামুটি সারা বছরই ফল পাওয়া যায়। শীতকালে বিলিম্বি গাছের পাতা ঝরে পড়ে তবে বসন্তের আগমণে আবার নতুন কুঁড়ি ও পাতা গজাতে থাকে। একটি পূর্ণ গাছে বছরে প্রায় ৩০০ কেজি বিলিম্বির ফলন হয়।

আমাদের দেশে সাধারণত বিলিম্বি কাঁচা খাওয়া হয়। বিলিম্বি কামরাঙ্গার মতোই ঝাল-লবণ দিয়ে খেতে ভালো লাগে। ছোট মাছ ও ডালের সঙ্গে বিলিম্বিের জুড়ি নেই। ডাল বা মাংসতেও বিলিম্বি ব্যবহার করা যায়। ফলের স্বাদ টক, পাকা বিলিম্বি দিয়ে আচার বা চাটনি তৈরি করা হয়। বিলিম্বির চাটনি ও আচার খুবই মজাদার। এ ফলটি কাঁচা অবস্থায় খুব টক হলেও রান্নার পর বা চাটনি কিংবা আচার তৈরি করার পর টক থাকে না।

১০০ গ্রাম বিলিম্বির পুষ্টিগুণ
আর্দ্রতা ৯৪.২-৯৪.৭ গ্রাম, আমিষ ০.৬১ গ্রাম, Ash ০.৩১- ০.৪০ গ্রাম, তন্তু ০.৬ গ্রাম, ফসফরাস ১১.১ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩.৪ মিলিগ্রাম, লৌহ ১.০১ মিলিগ্রাম, থায়ামিন ০.০১০ মিলিগ্রাম, রিবোফ্লাভিন ০.০২৬ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ০.০৩৫ মিলিগ্রাম, Ascorbic Acid ১৫.৫ মিলিগ্রাম, Niacin ০.৩০২ মিলিগ্রাম।

ওষুধি গুণাগুণ
সর্দি কাশি নিরাময়ে বিলিম্বি ফুল ভালো কাজ দেয়। গরম পানির সঙ্গে এটিকে জ্বাল দিতে হবে। এই পানি নিয়মিত সেবন করলে সর্দি-কাশি ভালো হয়ে যায়। বিলিম্বি ফল প্রতিনিয়ত খেলে উচ্চরক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। বিলিম্বি গাছের পাতা বিষধর প্রাণীর কামড় থেকে নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়। পাতা বেটে গায়ে লাগালে চুলকানি নিরাময় হয়ে থাকে।

ফিলিপাইননে বিলিম্বির পাতা চুলকানি, ফোলা, বাত, মাম্পস বা চামড়া ফাটার জন্য পেস্ট হিসাবে ব্যবহার করা হয়। অন্যত্র বিলিম্বির পাতা বিষধর প্রাণীর কামড় থেকে নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করে। ঠাণ্ডা এবং কাশিতে ব্যবহার করা হয় পাতার রস।

মালয়েশিয়াতে তাজা বিলিম্বির পাতা যৌনরোগ রোগের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়। ফরাসি, গায়ানাতে, ফল থেকে তৈরি সিরাপ প্রদাহ ও অন্যান্য রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। ভারতের তিরুবনন্তপুরম জেলার কিছু গ্রামে বিলিম্বি ফল স্থূলতা নিয়ন্ত্রণের জন্য ঔষধ ব্যবহার করা হয়।

তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর এবং উদ্ভিদ গবেষক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন এ প্রসঙ্গে জানান, বিলিম্বি ফলটি বেশি পরিমাণে কখনোই খাওয়া যাবে না। কারণ এটিতে ‘ক্যালশিয়ার অগজালেট’ থাকে। যা মানবদেহের কিডনিকে বিকল করে দিতে পারে। এটা অবশ্যই ডোজ মেনটেইন করে বা পরিমিত মাত্রায় খেতে হবে।তথ্য সূত্র: উইকিপিডিয়া, বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর,

পাঠকের মতামত

Comments are closed.