175933

কেন ভারতীয়রা দুবাইয়ে বেশি থাকে?

নূসরাত জাহান: সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) ২৪ লাখের বেশি ভারতীয় বাস করে। বেশির ভাগ ভারতীয় নাগরিকের বাস দুবাই নগরীতে। কাজেই সেখানে ভারতীয় বন্ধু বা দেশি কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবেই। দুবাইয়ে রাস্তায় হাঁটতে গেলে অবশ্যই ভারতের কাউকে না কাউকে পাওয়া যাবেই। আর ভারতীয় খাবার না পাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। পুরো দুবাই জুড়েই রয়েছে ভারতীয় খাবারের অনেক দোকান। নিশ্চয়ই এখন জানতে ইচ্ছা করছে কেন এতো ভারতীয়ের বাস সেখানে। ইউএই-এর সঙ্গে থাকা ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক, ক্রিকেট আর বলিউডের কারণেই লাখ লাখ ভারতীয় নাগরিকের বাস ইউএই-তে।

ভারত থেকে দুবাইয়ে আসতে সর্বোচ্চ তিন ঘণ্টা সময় লাগে। উন্নত জীবন এবং জীবীকার সন্ধানে তাইতো অনেকেই দুবাইয়ে চলে যায়। এছাড়া দেশ দুটির মধ্যে রয়েছে কৌশলগত সম্পর্ক। ইউএই-তে থাকা ভারতীয়দের ৩০ শতাংশের বাস আবু ধাবি, দুবাই ও শারজাহতে।

১৯৭০ দশকে ইউএই-এর তেল বাণিজ্য বিকশিত হতে শুরু করলে ভারতীয়রা সেখানে যেতে শুরু করে। বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানির বড় বড় পদগুলো ভারতীয়দের দখলে চলে যেতে শুরু করে। ভারতের সঙ্গে এই মুহূর্তে ভারতের ছয় হাজার কোটি ডলারের বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়া এখানে রয়েছে বেশ কয়েকটি ক্রিকেট গ্রাউন্ড। যেখানে মাঝে মধ্যেই ক্রিকেট খেলার আয়োজন করা হয়। আর দূরত্ব কম হওয়ায় ভারতীয় অনেক সিনেমার শুটিং এখানে হয়। এছাড়া নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও ভেন্যুও থাকে।

চাটার্ড অ্যকাউটেনডেন্ট ফিরোজ খান ২০০১ সালের ডিসেম্বরে দুবাইয়ে পাড়ি জমান। মুম্বাইয়ে যে কাজ করতেন তেমনই কাজ পেয়ে যান দুবাইয়ে। ফিরোজ বলেন, ‘আবাসন ব্যবসা ছড়িয়ে পড়ায় দলে দলে লোকজন দুবাইয়ে আসতে শুরু করে। বিশেষ করে ২০০৬ সালে একটি আইন পাস হওয়ার পর দুবাইয়ে বিদেশিদের ভিড় জমতে শুরু হয়। ওই আইন অনুযায়ী বিদেশিদেরে এদেশে সম্পত্তি করার অধিকার দেওয়া হয়।’

দুই তিন বছর থাকার উদ্দেশে দুবাই এসেছিলেন ফিরোজ। তবে আর যাওয়া হয়নি, ১৬ বছর কাটিয়ে ফেলেছেন এখানে। কিছু সম্পদও করে ফেলেছন। তিনি বলেন, ‘দুবাইয়ে যদি আপনি ভালো মাইনের চাকরি করেন তাহলে জীবন উপভোগ করতে পারবেন। হয়তো একই বেতনে ভারতে বিলাসি জীবন কাটানো সম্ভব নয়।’

কাওসার সৈয়দ ভারত থেকে দুবাইয়ের ছটি কাটাতে এসেছিলেন। এসেই একটি চাকরির ইন্টারভিউ দেন। যদিও এটা তার পরিকল্পনাতে ছিল না। তিনি বলেন, ‘ছুটি কাটাতে এসে একটি পাবলিশিং হাউজে ইন্টারভিউ দেই। সৌভাগ্যবশত তিন দিনের মাথায় চাকরি হয়ে যায়। ৯ বছর হলো এখানে আছি। এদেশটিকে আমার নিজেরই মনে হয়।’

বুর্জ খলিফা, ‍দুবাই মেট্রো, আইএমপি ওয়ার্ল্ডস অব অ্যাডভেঞ্চার, দুবাই ওয়াটার ক্যানেল, গ্লোবাল ভিজেসহ নানা চোখ ধাঁধানো স্থাপত্য রয়েছে দেখার মতো। যা দেখার জন্য এখানে ভিড় জমেই থাকে।

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.