269491

ব্যস্ত নগরীতেই রয়েছে ভবনজুড়ে বন

শখ করে বারান্দায় বা ছাদে গাছ লাগান অনেকে। কেননা শহুরে জীবনের দূষণ থেকে রক্ষার একমাত্র উপায় এটি। ইট পাথরের দালানে যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলা দায়।

তাই বলে পুরো এলাকায় সব বিল্ডিংয় রূপান্তরিত হবে বনে। চীনের চেঙ্গদু শহরে কিয়ি সিটি ফরেস্ট গার্ডেন আবাসিক কমপ্লেক্স দেখলে মনে হবে, আপনি হয়তো পরিত্যক্ত কোনো শহরে এসে পড়েছে। কিংবাপোস্ট-অ্যাপোক্যালিপ্টিক চলচ্চিত্রের প্রেক্ষাপটে। যার দেয়াল ছাদজুড়ে শুধু গাছ আর গাছ।

ভাবছেন অনিয়ন্ত্রিতভাবে বেড়ে ওঠা গাছগুলোর শিকড়ের কারণে দেয়ালগুলোর কোনো ক্ষতি হবে কিনা? দালানগুলো নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়বে কিনা? ৩০ তলার ওপর থেকে কোনো গাছের ডাল ভেঙ্গে নিচে পড়লে কারও প্রাণহানি ঘটাবে না? এসব ব্যাপারে নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন। এমনটাই বানী ভবনগুলোর ডেভেলপার কোম্পানির।

কিয়ি সিটি ফরেস্ট গার্ডেন আবাসিক কমপ্লেক্স

কিয়ি সিটি ফরেস্ট গার্ডেন আবাসিক কমপ্লেক্স

না এমনটা নয়, দেশটির অন্যতম জনবহুল ওই শহরে দালানজুড়ে বনায়নের উদ্যোগটি নেয়া হয় ২০১৮ সালে। ভার্টিক্যাল গার্ডেনের ধারণাটি বেশ পুরনো। ২০১৭ সালে কলম্বিয়ার ‘এদিফিকো সান্তালাইয়া’ প্রকল্পে এর বাস্তবায়ন দেখা গেছে। ২০২০ সালের এপ্রিলের মধ্যে সেই ‘কিয়ি সিটি ফরেস্ট গার্ডেন’ কমপ্লেক্সের ৮২৬টি ইউনিটের সবগুলোই বিক্রি হয়ে যায়।

প্রতিটি ইউনিটের ব্যালকনিতে করা হয়েছে ২০ ধরনের উদ্ভিদের বনায়ন। আশা ছিল, এর ফলে শহরটির বায়ু ও শব্দ দূষণ থেকে সুরক্ষা পাবেন অধিবাসীরা। ইট-সিমেন্টের দালানে সবুজ বনের আবহ পাবেন অধিবাসীরা। এমনটাই ছিল উদ্যোক্তাদের ভাবনাজুড়ে।

কিয়ি সিটি ফরেস্ট গার্ডেন আবাসিক কমপ্লেক্স

কিয়ি সিটি ফরেস্ট গার্ডেন আবাসিক কমপ্লেক্স

তবে কে জানত, দুই বছরের মধ্যে ‘ভার্টিক্যাল ফরেস্টে’র সেই স্বপ্ন পরিণত হবে দুঃস্বপ্নে! শহুরে নন্দনকানন হয়ে ওঠার বদলে সেই আট টাওয়ারের কমপ্লেক্সটি যেন পরিণত হয়েছে কোনো পোস্ট-অ্যাপোক্যালিপ্টিক চলচ্চিত্রের প্রেক্ষাপটে। ব্যালকনিজুড়ে উপচে পড়া সবুজ বন পরিণত হয়েছে মশার অভয়ারণ্যে!

অজানা কারণে এ পর্যন্ত মাত্র ১০টি পরিবার ওই আবাসিক কমপ্লেক্সে ঘর বেঁধেছেন। বাকি ইউনিটগুলো এখনো ফাঁকা পড়ে রয়েছে।ওই কমপ্লেক্সের সাম্প্রতিক ছবিতে দেখা যায়, ব্যালকনি ছাড়িয়ে রেলিং বেয়ে ছড়িয়ে পড়ছে উদ্ভিদের ডালপালা। আর এই কৃত্রিম বন ইতোমধ্যেই মশার কারখানায় রূপ নেয়ায় কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ তুলেছেন কিছু বাসিন্দা। এ পরিস্থিতিতে বছরে চারবার উদ্ভিদগুলোর ব্যাপক পরিচর্যা এবং মশা নিধনে বড় ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার কথা দিয়েছে ডেভেলপার কোম্পানি।

পাঠকের মতামত

Comments are closed.